আমিরের বিচ্ছেদ, প্রেমের গুঞ্জনে কী বলেছিলেন ফাতিমা?
১৫ বছরের সংসারজীবনের ইতি টেনেছেন বলিউড সুপারস্টার আমির খান ও কিরণ রাও দম্পতি। গতকাল শনিবার এক যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে এমন ঘোষণা দেন তাঁরা। এমন খবরে মর্মাহত আমির-কিরণের অনুরাগীরা।
যৌথ বিবৃতিতে এ দম্পতি লিখেছেন, ‘এই ১৫ বছরের সুন্দর যাত্রায় আমরা অনেক আনন্দ, উচ্ছ্বাস ও অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি। ভরসা, ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধার মধ্য দিয়ে আমাদের সম্পর্ক বিকশিত হয়েছে। এ বার আমরা জীবনের নতুন একটা অধ্যায় শুরু করতে চলেছি। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী হিসেবে নয়, আমাদের সন্তানের মা-বাবা এবং পরিবারের সদস্য হিসেবে।’
যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, আলাদা থাকলেও ছেলে আজাদের প্রতি সমস্ত কর্তব্য পালন করবেন আমির ও কিরণ। ব্যক্তিজীবনের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পেশাগত দিকে পড়বে না বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
তাঁদের ভাষ্য, ‘আমরা একসঙ্গে সিনেমা করব। আমাদের পানি ফাউন্ডেশনের কাজ এবং অন্যান্য যে কাজগুলো আমরা করতে ভালোবাসি, তার সবকিছুই একসঙ্গে করব।’
ভক্ত-অনুরাগী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি এ দম্পতির আহ্বান, তাঁরা যেন তাঁদের শুভ কামনা করেন। তাঁদের দাবি, বিবাহবিচ্ছেদ মানেই সব শেষ নয়, নতুন যাত্রা শুরু।
তবে তাঁদের এ বিচ্ছেদ ঘোষণা হঠাৎ সিদ্ধান্ত নয়। সময় নিয়ে ও পরিকল্পনা করেই দাম্পত্য থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আমির-কিরণ। কেন এ সিদ্ধান্ত, তা এখনও জানা না গেলেও বহুবার দঙ্গলকন্যা ফাতিমা সানা শেখের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জনে খবরের শিরোনাম হয়েছেন আমির খান।
এবার একটু পেছনে ফেরা যাক। আমির খানের ‘দঙ্গল’ ছবি দিয়ে চলচ্চিত্র দুনিয়ায় পা রাখেন ফাতিমা সানা শেখ। এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি। এরপর থেকে দঙ্গলকন্যা হিসেবে খ্যাতি তাঁর। ‘দঙ্গল’-এর পর ফের ‘থাগস অব হিন্দোস্তান’ ছবিতে আমিরের সঙ্গে জুটি বাঁধেন ফাতিমা। বক্স অফিসে এ সিনেমা কোনো জাদু তৈরি করতে না পারলেও ছবির শুটিং চলাকালে ফাতিমা ও আমিরের সম্পর্কের গুঞ্জন বি-টাউনে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে মুখও খুলেছিলেন ফাতিমা।
‘থাগস অব হিন্দোস্তান’ ছবির শুটিং চলাকালে ফাতিমা ও আমিরের সম্পর্কের গুঞ্জন নিয়ে বিনোদন সংবাদমাধ্যমগুলোতে বহু খবর প্রকাশ হয়। ফিল্মফেয়ারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফাতিমা বলেছিলেন, আমির খানের সঙ্গে যখন তাঁর নাম জড়িয়ে পড়ল, তাঁর খুব বাজে অনুভূতি হয়েছিল। কিন্তু পরে এসব এড়িয়ে যাওয়া বা সামলে নেওয়াটা শিখেছেন।
ওই সাক্ষাৎকারে আমিরের সঙ্গে প্রেম ও বিচ্ছেদের সব খবর উড়িয়ে দেন ফাতিমা সানা শেখ। তিনি বলেন, যেসব মানুষ কোনোদিনও তাঁর সঙ্গে কথা বলেননি, দেখা হয়নি; তাঁরাই এসব লিখে চলেছেন।
ওই সাক্ষাৎকারে ফাতিমা আরও বলেন, ওই সব খবরে বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই। কিন্তু এসব পড়ার পর মানুষের মধ্যে ধারণা জন্মেছে, তিনি ভালো মানুষ নন। এ ব্যাপারে তাঁকে কেউ প্রশ্ন করলে, তার উত্তর দিতে প্রস্তুত তিনি। আমিরের সঙ্গে সম্পর্কের গুঞ্জনে ফাতিমার ওপর বেশ প্রভাব পড়ে। সে কথা স্বীকারও করেন তিনি। কারণ, ফাতিমা চান না লোকে তাঁকে মন্দ বলুক। তিনি বলেন, ‘আমি চাই না তাঁরা আমাকে খারাপ মানুষ হিসেবে দেখুক।’
‘আমি যদি ভালো মানুষ হই, মানুষ আমাকে ভালো রূপেই দেখবে’, যোগ করেন ফাতিমা।
২০১৮ সালে মুক্তি পায় ফাতিমার দ্বিতীয় সিনেমা ‘থাগস অব হিন্দোস্তান’। ইতিহাস-আশ্রিত অ্যাকশনধর্মী রোমাঞ্চকর কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত এ ছবি বক্স অফিস সংগ্রহে হতাশ করে। চিত্রসমালোচকদের তোপের মুখে পড়ে সিনেমাটি।
২০০৫ সালের ডিসেম্বরে তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের ঘরে রয়েছে এক পুত্রসন্তান আজাদ রাও। ২০১১ সালে সারোগেসির মাধ্যমে আজাদ জন্মগ্রহণ করে। এর আগে রীনা দত্তকে বিয়ে করেছিলেন আমির খান। তাঁদের ঘরে রয়েছে দুই সন্তান ইরা খান ও জুনাইদ খান।