এনটিভির ‘মার্সেল প্রেজেন্টস হা-শো’র চ্যাম্পিয়ন রবিন
অডিশন থেকে চূড়ান্ত পর্ব—প্রায় আট মাসের দীর্ঘ অপেক্ষার পর এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। আয়োজন হলো জনপ্রিয় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভিতে প্রচারিত দেশের একমাত্র কমেডি রিয়েলিটি শো ‘মার্সেল প্রেজেন্টস হা-শো’র ষষ্ঠ মৌসুমের গ্র্যান্ড ফিনালে।
শুক্রবার রাতে আয়োজিত সেই জমকালো গ্র্যান্ড ফিনালেতে ঘোষণা করা হলো বহুল প্রতীক্ষিত ‘মার্সেল প্রেজেন্টস হা-শো’র ষষ্ঠ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নের নাম। আর সেই চ্যাম্পিয়ন হলেন কিশোরগঞ্জের শফিউল আজম রবিন। প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ হলেন সিলেটের মৌলভীবাজারের পার্থ দেব ও চট্টগ্রামের শাশ্বতী।
এবারের গ্র্যান্ড ফিনালেতে অংশ নেন মোট ছয় জন প্রতিযোগী। তাঁরা হলেন—কিশোরগঞ্জের শফিউল আজম রবিন, সিলেটের মৌলভীবাজারের পার্থ দেব, চট্টগ্রামের শাশ্বতী ও তারেক আজিজ (ফজু), ফেনীর আসমাউল হুসনা রিমি এবং নারায়ণগঞ্জের ঈষীকা শিঞ্জন ষড়জ।
এবারের মৌসুমের নিয়মিত বিচারক ছিলেন চিত্রনায়ক আমিন খান ও চিত্রনায়িকা তমা মির্জা। গ্র্যান্ড ফিনালের অতিথি বিচারক চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ ও চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী। গ্র্যান্ড বিচারক কথাসাহিত্যিক-সাংবাদিক ইমদাদুল হক মিলন ও রম্য সাহিত্যিক ও কার্টুনিস্ট আহসান হাবীব। উপস্থাপনা করেছেন জনপ্রিয় স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান আবু হেনা রনি।
এবারের আসরের চ্যাম্পিয়ন শফিউল আজম রবিন পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন পাঁচ লাখ টাকার চেক। প্রথম রানার আপ পার্থ দেব পেয়েছেন তিন লাখ টাকার চেক এবং দ্বিতীয় রানারআপ শাশ্বতী পেয়েছেন দুই লাখ টাকার চেক। বাকি তিন প্রতিযোগীর প্রত্যেকের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি করে মার্সেল রেফ্রিজারেটর।
এ মৌসুমে বিশেষ পুরস্কার পেয়েছেন মেহেরপুর জেলার প্রতিযোগী সাদিয়া আক্তার রিয়া, যিনি নিরন্তর সংগ্রামী, হার-না-মানা এক নারী। চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও যাঁর পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়েছেন বিচারকেরা, বিশেষ করে তাঁর সংগ্রামী জীবনের গল্প মন ছুঁয়েছে সবার। রিয়াকে মার্সেলের পক্ষ থেকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয় এবং দেওয়া হয় চাকরির প্রস্তাব।
প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন এনটিভির পরিচালক আলহাজ্ব নূরউদ্দিন আহমেদ, মার্সেলের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. হুমায়ুন কবিরসহ দুই প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মার্সেলের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ও সিএমও মো. ফিরোজ আলম, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. সাখাওয়াত হোসেন, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এস এম জাহিদ হাসান, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. শাহজালাল হোসেন লিমন, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এমদাদুল হক সরকার, এনটিভির হেড অব সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং অঞ্জন কুমার কুণ্ডু, এনটিভি অনলাইনের সম্পাদক খন্দকার ফকরউদ্দীন আহমেদ, এনটিভির অনুষ্ঠান বিভাগের মহাব্যবস্থাপক আলফ্রেড খোকনসহ দুই প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এনটিভির পরিচালক আলহাজ্ব নূরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এবারের আয়োজনটি আমার খুব ভালো লেগেছে। সবাইকে ধন্যবাদ। সবাই খুব ভালো পারফরম্যান্স করেছে।’
মার্সেলের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমরা শুধু ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন ও বিক্রি করি না, আমরা এর পাশাপাশি মানুষকে আনন্দ ও মন ভালো রাখার জন্য এ ধরনের একটি অনুষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে করে আসছি। এ অনুষ্ঠান যত দিন থাকবে, মার্সেল তত দিন পাশে থাকবে।’
চ্যাম্পিয়ন হতে পেরে আবেগে আপ্লুত শফিউল আজম রবিন। তিনি বলেন, ‘মার্সেল প্রেজেন্টস হা-শোর চ্যাম্পিয়ন হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। কী যে খুশি লাগছে, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। এনটিভি ও মার্সেল পরিবারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আশা করি, ভবিষ্যতে স্ট্যান্ডিংআপ কমেডিতে নতুন কিছু সংযোজন করতে পারব। এ জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
গ্র্যান্ড ফিনালেতে জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মঞ্চে নৃত্য পরিবেশন করেন চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী ও নন্দন কলা কেন্দ্রের শিল্পীরা। নৃত্য পরিচালনা করেন এম আর ওয়াসেক। গান পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী আঁখি আলমগীর। আয়োজনে গেস্ট পারফরমার ছিলেন হা-শোর প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন যথাক্রমে সাইফুল, তারেক ও মীরু। এ ছাড়া গেস্ট পারফর্মার ছিলেন পঞ্চম মৌসুমের মেন্টর ও পারফরমার শাওন মজুমদার, পরশ ও মাসউদ আহমেদ।
এবারের আয়োজনটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন জাহাঙ্গীর চৌধুরী ও কাজী মোহাম্মদ মোস্তফা। উপস্থাপনা করেন জনপ্রিয় স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান আবু হেনা রনি।
অনুষ্ঠানটির অনলাইন পার্টনার ছিল এনটিভি অনলাইন ও অনলাইন নিউজ পার্টনার রাইজিংবিডি ডটকম। টাইটেল স্পন্সর দেশের শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স, ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স প্রস্তুতকারী ব্র্যান্ড মার্সেল।