ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা উঠছে ১৬ জানুয়ারি
‘ঊনবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-২০২১’ শুরু হচ্ছে আগামী ১৬ জানুয়ারি। চলবে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। এবারের আয়োজনের স্লোগান, ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’।
এবারের আসরটি মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে উৎসর্গ করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি। মোট ৭৩টি দেশের ২২৬টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে এবারের উৎসবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে এ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উৎসবের চেয়ারম্যান কায়সার কামাল, পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল, তত্ত্বাবধানকারী ম. হামিদ, উৎসব উপদেষ্টা রফিকুজ্জামান, উৎসবের তিন জুরি চলচ্চিত্র সমালোচক মঈনুদ্দীন খালেদ, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী ও অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আগামী শনিবার ১৬ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় রাজধানীর জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে পর্দা উঠছে ১৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হোসেন এবং বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কে দোরাইস্বামী। এ ছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
উদ্বোধনী চলচ্চিত্র ‘স্প্রিং ব্লোসম’। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন সুজান্না লিনডন। এক তরুণীর সঙ্গে একজন প্রৌঢ়ার জাগতিক সম্পর্কেও টানাপোড়েন নিয়ে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্রটি। ২০২০ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রতিযোগিতা বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ‘স্প্রিং ব্লোসম’। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হবে।
বক্তারা আরো বলেন, গেল ১৯ বছর ধরে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করে আসছে। এবারে এশিয়ান ফিল্ম প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অব দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন ফিল্মস, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্ট ফিল্ম এবং উইমেন্স ফিল্ম মেকার বিভাগ। তবে উৎসবে এবারই প্রথম সংযুক্ত হচ্ছে ‘লিজেন্ডারি লিডারস হু চেঞ্জ দ্য ওয়ার্ল্ড’ এবং ‘ট্রিবিউট’ নামে আরো দুটি নতুন বিভাগ।
উৎসবে আগামী ১৭-১৮ জানুয়ারি চলচ্চিত্রে নারীর ভূমিকা বিষয়ক ‘সপ্তম ঢাকা আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্ম মেকারস্ কনফারেন্স’ অনুষ্ঠিত হবে। এই কনফারেন্সটি প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে। দেশ ও বিদেশের নারী নির্মাতাদের চলচ্চিত্র নিয়ে এই বিভাগ সাজানো হয়েছে। এতে দেশি-বিদেশি ১৯টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং প্রামাণ্যচিত্র অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিন সদস্যের একটি স্বাধীন জুরিবোর্ড এই বিভাগের একটি শ্রেষ্ঠ কাহিনিচিত্র ও একটি শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্যচিত্রকে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করবে। পুরস্কার হিসেবে থাকছে সনদ ও ক্রেস্ট।
আগামী ১৯ জানুয়ারি দিনব্যাপী একই ভেন্যুতে দেশীয় চলচ্চিত্রের সঙ্গে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রকারদের ভাবনা বিনিময় অনুষ্ঠান ‘ওয়েস্ট মিটস ইস্ট’ অনুষ্ঠিত হবে।
উপমহাদেশের কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে একটি বিশেষ সেমিনারেরও আয়োজন করা হয়েছে। এটি হবে ২০ জানুয়ারি বিকেল ৪টায়। এ সেমিনারে আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেবেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর, ধৃতমান চ্যাটার্জি, বিচারপতি রিফাত আহমেদ এবং চলচ্চিত্র সমালোচক মঈনুদ্দীন খালেদসহ আলোচিত ব্যক্তিরা।
কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগার চত্বরে উৎসবের মূল অফিস থাকবে। সেখান থেকে সব ধরনের তথ্য পাওয়া যাবে। চলচ্চিত্রের যাবতীয় তথ্য সমৃদ্ধ স্মরণিকা প্রকাশিত হওয়ার পাশাপাশি উৎসব চলাকালে প্রতিদিনকার সংবাদসহ একটি বুলেটিন এখান থেকে প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়া এখানে দেশি চলচ্চিত্রকার, প্রযোজক, অভিনয়শিল্পীসহ সাংবাদিকদের সীমিত পর্যায়ে সমাবেশের সুযোগ থাকবে।
এবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন, জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন ও কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ও নৃত্যশালা মিলনায়তন, শিল্পকলার নন্দন থিয়েটার (মুক্তমঞ্চ), বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্স এবং সীমান্ত স্কয়ার সিনেপ্লেক্সে দেখানো হবে উৎসবে ঠাঁই পাওয়া চলচ্চিত্রগুলো।