পুনীতের মৃত্যুতে বড় ভাই : যেন নিজের সন্তান হারিয়েছি
ভারতের কন্নড় ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম শীর্ষ তারকা পুনীত রাজকুমারের অকালমৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না। এখনও লাখো মানুষ শোকস্তব্ধ।
শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন পুনীতের বড় ভাই শিবা রাজকুমার। পিঙ্কভিলার বরাতে বলিউড বাবলের খবর, শেষকৃত্যের দিন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছিলেন শিবা। ছিলেন অশ্রুসিক্ত। পুলিশ ও সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন শিবা। পুনীতের ভক্তদের অনুরোধ করেন, তাঁরা যেন নিজেদের যত্ন নেন; কারণ, তাঁদেরও পরিবার আছে। পত্রপত্রিকার খবর, পুনীতের মৃত্যুর খবর শোনার পর এক ভক্ত আত্মহত্যা করেন এবং দুজন হৃদরোগে মারা যান।
শিবা রাজকুমার বলেন, ‘আমি পুনীতের ১৩ বছরের বড় এবং সেই শিশুকাল থেকে ওকে দেখেছি। মনে হচ্ছে, নিজের সন্তানকে হারিয়েছে। পুরো পরিবারের জন্য এটি খুবই বেদনার।’
শিবা আরও বলেন, ‘প্রত্যেকের কাছেই আপ্পুর মৃত্যু মেনে নেওয়া খুব কঠিন। কিন্তু আমাদের বাস্তবতা মানতে হবে। আমি জানি, ভক্তরা ভেঙে পড়েছে। কিন্তু তাঁদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং ভুলে গেলে চলবে না যে তাঁদেরও পরিবার আছে।’
আকস্মিক হৃদরোগে গত ২৯ অক্টোবর অনেককে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান কন্নড় সুপারস্টার পুনীত রাজকুমার। মাত্র ৪৬ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বিনোদন অঙ্গন। সমাজসেবার জন্য তিনি লাখো মানুষের মন জয় করেছিলেন। সবাই তাঁকে ভালোবেসে আপ্পু বলে ডাকত।
২৯ অক্টোবর জিমে শরীরচর্চা করার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হন পুনীত রাজকুমার। এর পর বেঙ্গালুরুর বিক্রম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
৩১ অক্টোবর সকালে বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য হয় দক্ষিণ ভারতীয় এ তারকার। প্রয়াত অভিনেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে যান কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইসহ অগণিত মানুষ।
বিভিন্ন খবরে প্রকাশ, ২৬টি এতিমখানা, ১৬টি বৃদ্ধাশ্রম এবং ৪৫টি বিদ্যালয় পরিচালনা করতেন পুনীত। তাতে এক হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী বিনাবেতনে অধ্যয়ন করত। পুনীতের মৃত্যুর পর সেই এক হাজার ৮০০ শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নিয়েছেন তামিল অভিনেতা বিশাল কৃষ্ণ রেড্ডি।
শিশু অভিনেতা হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন পুনীত রাজকুমার। ১২টি সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন; পেয়েছেন ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। ২০০২ সালে ‘আপ্পু’ সিনেমায় অভিনয় করে কন্নড় সিনেমায় তুমুল জনপ্রিয়তা পান তিনি। প্রায় ২৯টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন পুনীত রাজকুমার। ছিলেন কন্নড় চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বিনোদন অঙ্গন।