আনোয়ার হোসেনের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
আজ ‘বাংলার মুকুটহীন নবাব’ আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী। খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ ছবিতে নামভূমিকায় দাপুটে অভিনয়ের জন্য তিনি সবার কাছে প্রশংসিত হন। ২০১৩ সালের আজকের এই দিনে তিনি মারা যান। আজ তাঁর পঞ্চম মৃত্যুবাষিকী। দিনটি স্মরণে রাখতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি বাদ আসর মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে।
শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বলেন, ‘আজ বাদ আসর আমরা শিল্পী সমিতিতে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছি। এ ছাড়া সকাল থেকে আমরা কোরআন খতম পড়াচ্ছি। আমাদের এই কিংবদন্তি শিল্পীকে স্মরণে রাখতে ও তাঁর আত্মার শান্তি কামনার জন্য এই আয়োজন করেছি। সবাই দোয়া করবেন, সৃষ্টিকর্তা যেন উনাকে ভালো রাখেন।’
শিল্পী সমিতির উপদেষ্টা মাসুম বাবুল বলেন, ‘বর্তমান কমিটি সমিতির দায়িত্বে আসার পর থেকেই গুণী শিল্পীদের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁদের স্মরণ করছে। এটা চলচ্চিত্রের জন্য শুভ। কারণ, আমরা যখন বাইরে যাই, তখন আমরা কেউ স্টার, কেউ সুপারস্টার। কিন্তু এফডিসির ভেতরে আমরা কেউ কিছু না। আমরা সবাই মিলে একটা পরিবার, এখানে কেউ বড় ভাই, কেউ ছোট ভাই, কেউ বা বাবা-ছেলে। বাইরে যে যত বড় তারকাই হোক না কেন, এফডিসিতে ভেতরে আসলে সব শেষ। এই বন্ধনটা ঠিক রাখার জন্য গুণী মানুষগুলোর জন্য দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা উচিত। এতে করে আমাদের পরিবারের পরিচয়টা ঠিক থাকে।’
বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে মুকুটহীন সম্রাট আনোয়ার হোসেন চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন ১৯৬১ সালে। প্রথম চলচ্চিত্র মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘তোমার আমার’। শুরুতে খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করলেও পরে তিনি চরিত্রাভিনেতা হিসেবে পরিচিতি পান। ১৯৬৭ সালে খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় নবাব সিরাজউদ্দৌলা চলচ্চিত্রে নামভূমিকায় দুর্দান্ত অভিনয়ের কারণে তিনি মুকুটহীন সম্রাট উপাধি লাভ করেন।
৫২ বছরের অভিনয় জীবনে আনোয়ার হোসেন পাঁচ শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেন। লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে অভিনয় করার জন্য ১৯৭৫ সালে প্রথম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন তিনি। ২০১০ সালে চলচ্চিত্রে সামগ্রিক অবদানের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আজীবন সম্মাননা লাভ করেন আনোয়ার হোসেন।
আনোয়ার হোসেন অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো : জোয়ার এলো, কাঁচের দেয়াল, নতুন দিগন্ত, নাচঘর, ধারাপাত, রাজা এলো শহরে, বন্ধন, গোধূলীর প্রেম, রাজা সন্ন্যাসী, রূপবান, জরিনা সুন্দরী, পরশমণি, জঙলী ফুল, রাখাল বন্ধু, জুলেখা, শহীদ তীতুমীর, বাঁশরী, সপ্তডিঙ্গা, গাজী কালু চম্পাবতী, স্বর্ণকমল, আনোয়ারা, নীল আকাশের নীচে, স্বরলিপি, বাহরাম বাদশা, লালন ফকির, অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী, বাঘা বাঙালী, রংবাজ, দয়াল মুরশিদ, আলোর মিছিল, ঈশা খাঁ, কার হাসি কে হাসেন, লাঠিয়াল, দেবদাস, বড় ভালো লোক ছিল, লালুভুলু, ভাত দে, পেনশন, শিরি ফরহাদ, ত্যাজ্যপুত্র, আমার দেশ আমার প্রেম ইত্যাদি।