শিল্পকলায় আজ তীরন্দাজের ‘তামসিক’
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে তীরন্দাজ নাট্য দলের চতুর্থ মঞ্চ প্রযোজনা ‘তামসিক’-এর একাদশ ও দ্বাদশ প্রদর্শনী আজ সন্ধ্যা ৬টায় ও ৭টা ১৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে।
নাটকটির চিত্রনাট্য করেছেন অপু মেহেদী এবং এর নির্দেশক কাজী রাকীব। নাটকটির অভিনয়শিল্পরা হলেন তামান্না তমা, তমাল খান, নিলয় চৌধুরী, রফিকুল সেলিম, হাসান মাহদী লাল্টু, কাজী রাকীব, অমিত শিবরাম, মারুফ মুন্না, সোহাগ লিটন, নুসরাত তিথি, সানজিদা প্রমি, আরিয়ান সোহাগ, মামুন, সৌরভ, শাহী, মাসুম, তানভীর, রিয়ান প্রমুখ।
নির্দেশনা প্রসঙ্গে কাজী রাকীব বলেন, ‘ থিয়েটার একটি লাইফ স্টাইল। ঘুমভাঙানি থেকে ঘুমানো পর্যন্ত থিয়েটারের ভেতর থাকতে হয়। নিত্যদিনের সমস্ত কাজ কর্মের ভেতরেও থিয়েটার চলমান থাকে। শুধু দু তিন ঘণ্টা রিহার্সাল আর শো করার মধ্যেই থিয়েটার সীমাবদ্ধ নয়। প্রযোজনা থিয়েটারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ এবং দল বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। সেই একমাত্র অবলম্বন হিসেবে ধর্মীয় গোঁড়ামি, অজ্ঞতা, উগ্রতা আর পুঁজিবাদের নিষ্পেষণ এ বিপন্ন মানুষ মনুষ্যত্ব মানবতাবাদ। অপ্রতিরোধ্য এই ব্যধির বিরুদ্ধে মানুষের অস্তিত্বহীনতা ও অস্তিত্বের লড়াইয়ের উপাখ্যান ‘তামসিক’ নিয়ে আমাদের এই নব যজ্ঞ।
রিহার্সাল রুমের অপ্রতুলতা, সামাজিক নানা রকম সংকট এর মধ্য দিয়ে কিছু তরুণ প্রতিভাবান নাট্যবন্ধুদের প্রাণপণ সহযোগিতায় নাটকটির মঞ্চায়ন সম্ভব হচ্ছে। থিয়েটার হয় অভিনেতা ও দর্শকের সরাসরি মিথস্ক্রিয়ায়। আমি বিশ্বাস করি, পথ পথিকের সৃষ্টি করে না পথিকই পথের সৃষ্টি করে। এই বিশ্বাসের কারণে এই প্রযোজনাটি আমি হাতে নিয়েছি। ভুল ত্রুটি যেমন মার্জনীয় তেমনি গঠনমূলক সমালোচনা ও কাম্য।’
কাজী রাকীব আরো বলেন, ‘পৃথিবীতে মানুষের জন্মের ইতিহাস প্রায় তিন কোটি বছরের। আদিম মানুষেরা পৃথিবীর অনেক অজানাকেই রহস্যময় করে তুলেছিল। তবে তাদের কোন দুরভিসন্ধি ছিল না ছিল অজ্ঞতা। কিন্তু পুঁজিবাদের এই যুগে বিজ্ঞান যখন সকল রহস্যের দ্বার খুলে দিচ্ছে তখন সত্য জানার পরও কিছু মানুষ তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য পৃথিবীকে রহস্যময় করে তুলছে ভিন্ন উপায়ে। তারা পৃথিবীকে করে তুলছে অস্থিরতা ও নিষ্ঠুরতায় পরিপূর্ণ এক গ্রহে আর এ জন্য তারা প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে ধর্মকে।
মানুষের বেডরুম থেকে কবরস্থান পর্যন্ত সবকিছুতেই এখন ব্যবসা আর সেই ব্যবসার বিষবাষ্প ছড়িয়ে পরছে ধর্মের মাঝেও। পৃথিবীতে বিরাজমান সব ধর্ম নিয়েই মানুষ এখন ব্যবসা করছে কেননা ধর্ম ব্যবসাতে কোনো পুঁজির প্রয়োজন হয় না। ধর্মের অপব্যবহার, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি নিজের স্বার্থে ধর্মকে ইচ্ছেমত অপব্যবহার চলছে নিরন্তর। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সত্য, ন্যায় ও মানবতার যাত্রা। এ যেন সহস্র আলোর মাঝে জমাট অন্ধকারের রাহুগ্রাস। আধুনিক উন্নয়নের মাঝে অদ্ভুত অন্ধত্বের পিছুটান তবুও সত্য অনিবার্য সহস্র কালের সহস্র প্রাণের বলিদান হলেও অন্ধকার ভেদ করে সূর্য উদ্ভাসিত হবে এই মহত্বম সম্ভাবনায় বিশ্বাস রেখে মানুষের নিরন্তর যাত্রা। মানুষের এই নিরন্তর যাত্রার গল্প তামসিক।’