চরিত্রনির্ভর নাটকে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি : পাভেল ইসলাম
১৯৯৪ সাল থেকে থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত আছেন অভিনয়শিল্পী পাভেল ইসলাম। শুধু থিয়েটারে নয়; নাটক, বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন এই অভিনেতা। অভিনয়ের পাশাপাশি এনটিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান ও যোগাযোগ বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে তিনি কর্মরত রয়েছেন। আজ এনটিভিতে রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাজমুল হক বাপ্পী পরিচালিত নাটক ‘আকাশ মেঘে ঢাকা’। নাটকটিতে ফারহানা মিলির বিপরীতে অভিনয় করেছেন পাভেল। অভিনয়, ক্যারিয়ার, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে নিয়ে তিনি কথা বলেছেন এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে।
থিয়েটারের গল্প
১৯৯৪ সালে জেন্টেলম্যান রেপার্টরি থিয়েটারে আমি প্রথম কাজ শুরু করি। তখন সবেমাত্র আমি এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। আমাদের পাঁচ/ছয়জনের একটা গ্রুপ ছিল। মঞ্চনাটকের প্রতি আমাদের সবার আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। এর পর মুম রহমানের ব্যক্তিগত চেষ্টায় আমরা এই থিয়েটারে যোগ দিই এবং কাজ শুরু করি। প্রথমে আমরা ‘আদিম’, ‘একটি অবাস্তব গপ্পো’, ‘সুন্দর’ নাটক তিনটি করেছি। এর পর ১৯৯৫ সালে ড্রামা সার্কেলে আমি যোগ দিই। সেখানে তিন বছর কাজ করার পর আমি সময় নাট্যদলে আসি। এখনো এই থিয়াটারের সঙ্গেই আমি যুক্ত আছি।
সেরা কিছু মঞ্চনাটক
আমার কাছে সব নাটকই সেরা মনে হয়। এখন আমরা রিহার্সেল করছি নাসরিন জাহানের ‘মেঘবতী’ নাটক। আর ‘একাত্তরের ক্ষুদিরাম’, ‘ভাগের মানুষ’, ‘সাদা ঘোড়া’, ‘শেষ সংলাপ’, ‘জননী বীরাঙ্গনা’সহ বেশ কিছু নাটকে আমি অভিনয় করেছি; এখনো তো করেই যাচ্ছি।
নাটক ও চলচ্চিত্রে আসার গল্প
আমার মূল আগ্রহ যেহেতু মঞ্চে ছিল, তাই টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের ব্যাপারে আমার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। বলতে পারেন, পরিকল্পনা ছাড়াই আমি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করি। ১৯৯৭ সালে জয়নাল আবেদীনের পরিচালনায় ‘এক চিলতে আকাশ’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে আমি ছোট পর্দায় কাজ শুরু করি। আমার অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম ছবি ‘জীবনঢুলি’। ছবিটি পরিচালনা করেছেন তানভীর মোকাম্মেল। এর পর ‘হরিযুপীয়া’, ‘ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল’সহ বেশি কিছু ছবিতে কাজ করেছি।
মুক্তির অপেক্ষায় চলচ্চিত্র ও নাটক
শামীম আহমেদ রনি পরিচালিত ‘মেন্টাল’। এ ছাড়া নূরল আলম আতিক পরিচালিত ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ ও মাহমুদ দিদারের ‘বিউটি সার্কাস’ ছবিতে অভিনয়ের কথাবার্তা চলছে। শিগগির ছবি দুটির শুটিং শুরু হবে। সম্প্রতি আকিদুল ইসলাম পরিচালিত ‘মন দরজা’ ও মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনের ‘চেহারা’ ধারাবাহিক নাটকের কাজ শেষ করেছি। এ মুহূর্তে আমার মাবরুর রশীদ বান্নাহ পরিচালিত ‘নাইন অ্যান্ড আ হাফ’ ধারাবাহিক নাটকটি প্রচারিত হচ্ছে। মুক্তির অপেক্ষায় আছে দুটি বিজ্ঞাপনও।
কোনটাতে বেশি আগ্রহ
মঞ্চ, টিভি, সিনেমা সব জায়গায় কাজ করতে আমার ভালো লাগে। অভিনয় আমার একমাত্র লক্ষ্য। আমি চরিত্রনির্ভর নাটকে কাজ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
প্রাপ্তি
দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছি। আমি মনে করি, ব্যক্তি পাভেলের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তা না হলে আজ আমি সাক্ষাৎকার দিতে পারতাম না। কীভাবে মানুষের সঙ্গে আলাপ করতে হয়, জীবনযাপন করতে হয়, এসব স্কুলিং থিয়েটার থেকেই শিখেছি। এটাই আমার প্রাপ্তি।
যাঁর অবদান বেশি
আমার বাবা-মা। এ ছাড়া যাঁরা আমাকে নিয়ে কাজ করছেন, তাঁদের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ। আর বিশেষভাবে আমি আমার সহকর্মীদের কথাও বলব, তাঁরাও অনেক সহযোগিতা করেছেন।
‘আকাশ মেঘে ঢাকা’
এত দিন দর্শক যেভাবে আমাকে পর্দায় দেখেছেন, এই নাটকে তাঁরা ভিন্নভাবে আমাকে দেখতে পাবেন। নাটকের গল্পটি চমৎকার। আশা করছি, নাটকটি সবার ভালো লাগবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
চাকরির পাশাপাশি অভিনয় করে যেতে চাই। অভিনয়ের বাইরে আর কিছু ভাবতে চাই না। সামনে আরো ভালো কিছু কাজ নিয়ে দর্শকের সামনে উপস্থিত হব।