অস্কারে কৃষ্ণাঙ্গ শিল্পীদের প্রতি মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে না : জর্জ ক্লুনি
টানা দ্বিতীয় বছর। অস্কার মনোনয়নে চোখ রাখলেই দেখা যাবে শ্বেতাঙ্গ শিল্পীদের একচ্ছত্র আধিপত্যে স্থান হয়নি কৃষ্ণাঙ্গ কোনো তারকার। ২০ জন শ্বেতাঙ্গ অভিনেতার মাঝে লড়াই হবে শ্রেষ্ঠত্বের। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। স্পাইক লির মতো পরিচালক বর্জন করেছেন অস্কার, এমনকি কথা বলেছেন শ্বেতাঙ্গ তারকারাও। ভ্যারাইটি ম্যাগাজিনে নিজের মতামত প্রকাশ করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা জর্জ ক্লুনি। তাঁর বক্তব্যটি এখানে ভাবান্তর করে দেওয়া হয়েছে।
জর্জ ক্লুনির বক্তব্য
১০ বছর আগের কথা যদি আমলে নেন, তাহলে আমি বলব যে অ্যাকাডেমি তখন আরো ভালো কাজ করেছে। মনে করুন, কত আফ্রিকান-আমেরিকান অভিনেতা তখন অস্কারে মনোনয়ন পেয়েছেন!
আমি অবশ্য আরেকটা কথাও বলতে চাই—সিনেমায় আসলে সংখ্যালঘু হিসেবে কোনো কিছুকে স্থান দেওয়ার মতো কতটুকু জায়গা রয়েছে? বিশেষ করে যখন উন্নত মানসম্পন্ন ছবির কথা আসছে?
আমি মনে করি, বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আমাদের খুঁটিনাটি বিষয় দেখবার রয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে এ বিষয়টা ভাবতে আমার দারুণ লাগে যে আমাদের এই ইন্ডাস্ট্রিতে সেই ১৯৩০-এর মতো সময়ে শীর্ষস্থানীয় শিল্পীরা ছিলেন অভিনেত্রী! অথচ এখন কিনা চল্লিশোর্ধ্ব নারীদের জন্য কোনো সিনেমায় মূল ভূমিকায় অভিনয়ের সুযোগ পাওয়াটাই বেশ কঠিন হয়ে গিয়েছে। আমরা অবশ্য কিছু মুভমেন্টও দেখছি। জেনিফার লরেন্স এবং প্যাট্রিসিয়া অর্কেট পারিশ্রমিকের বিষয়ে অসমতার ব্যাপারটি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন। এতে আমাদের অনেকেরই নজর খুলে গিয়েছে। তবে এ বিষয়ে আমাদের আরো আগেই মনোযোগী হওয়া জরুরি ছিল। আমি মনে করি আফ্রিকান আমেরিকান তথা কৃষ্ণাঙ্গ শিল্পীরা এখন এমনটা মনে করতেই পারেন যে এই ইন্ডাস্ট্রি তাঁদের প্রতি যথাযথ মনোযোগ দিচ্ছে না বা সম্মান দেখাচ্ছে না। আমি মনে করি এটা একেবারেই সত্য।
আগেকার কিছু মনোনয়নপ্রাপ্ত অভিনেতাদের দিকে দেখুন। যদ্দুর মনে পড়ে ২০০৪ সালে মর্গান ফ্রিম্যান, ডন চিডলের মতো কৃষ্ণাঙ্গ তারকারা মনোনয়ন পেয়েছিলেন। অথচ এবার দেখুন, এমনটাই তো মনে হতে পারে যা আমরা ভুল পথে এগোচ্ছি! এ বছরের চারটে ছবির মধ্যে ‘ক্রিড’ মনোনয়ন পেতে পারত, ‘কনকাশন’ দিয়ে উইল স্মিথ একটা মনোনয়ন পেতে পারতেন, ‘বিস্টস অব নো নেশন’ দিয়ে ইদ্রিস এলবা পেতে পারতেন, কিংবা ‘স্ট্রেট আউট্টাহ্ কম্পটন’ মনোনয়ন পেতে পারত। আর হ্যাঁ, গেল বছর ‘সেলমা’র পরিচালক আভা ডুভার্নি মনোনয়ন পেতে পারতেন— আমার তো মনে হয় তাঁকে মনোনীত না করাটা ছিল একটা উদ্ভট সিদ্ধান্ত।
সত্যি বলতে, এ ক্ষেত্রে মনোনয়নের আরো সুযোগ থাকা উচিত ছিল। আরো ২৯, ৩০ বা ৪০টার মতো ছবি রয়েছে যেগুলোকে মানুষজন অস্কারে লড়বার যোগ্য মনে করে। সে যাক, আমরা কিন্তু আফ্রিকান আমেরিকানদের নিয়ে নিয়ে কথা বলছি। হিস্পানিকদের ক্ষেত্রে তো পরিস্থিতিটা আরো বাজে। এ পরিস্থিতিকে পরিবর্তনের চেষ্টা করতে হবে। আমরা তো একটা সময় ভালোই করছিলাম!