অনুপ্রেরণার গান
কখনো মিসিসিপি, কখনো গঙ্গার কাছে ফরিয়াদ
নদী বয়ে চলছে মহাকালের ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে। দুপারের গল্প, গড়পরতা দিনের আখ্যানে অনবরত আসে রদবদল, তাতে জোড় বাঁধে অবক্ষয়, অবিচার। বাড়ে হাহাকার। তবুও নদী বয়ে যায়। ভূপেন হাজারিকা অভিযোগ করেছিলেন সুরের সঙ্গতে, ‘ও গঙ্গা তুমি বইছ কেন’?
এ অভিযোগের সুর কি কেবল গঙ্গার কানেই গিয়ে মিলিয়েছে? কালে কালে তো বঞ্চনা আর দুর্ভাগ্যের সুরগুলো সবখানেই এমন। সব নদীর কানেই এমন সুর ঠেকেছে। পল রবসনের “ওল’ ম্যান’স রিভার” গানেও তো সেই একই সুর, একই কষ্ট, একই সংগ্রামের কথা প্রতিধ্বনিত হয়েছিল।
মানবতাবাদী শিল্পী ভূপেন হাজারিকার গানটি মূলত এই গান থেকেই অনুপ্রাণিত। কেবল কথায় নয়—বরং গায়কী, সুরারোপ, পরিপ্রেক্ষিতও দুটি গানের প্রায় একই রকম।
ব্যক্তিজীবনেও দুজনের পরিচয় ছিল। ভূপেন হাজারিকাকে পল রবসনের ভাবশিষ্য বললে ভুল হয় না। পঞ্চাশের দশকের অর্ধেকের মতো সময় খুবই কাছাকাছি থেকে দুজনে আদান-প্রদান করেছেন নিজেদের চিন্তাভাবনার পরিধি। সেগুলো ডালপালা মেলেছে তাঁদের কাজে। আদতে বলা যায়, ভূপেন হাজারিকার প্রায় সব গানই পল রবসনের গান বা চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত।
কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন সংগীতশিল্পী পল রবসন ছিলেন মানবতাবাদী। প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের জন্য হাতিয়ার ছিল তাঁর গান। “ওল’ ম্যান’স রিভার” এমনই এক গান। ১৯২৭ সালে গাওয়া এই গানে কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন শ্রমিকদের অনিঃশেষ সংগ্রাম, বঞ্চনা আর নিপীড়নের আখ্যান মিলেছে মিসিসিপি নদীর বয়ে যাওয়া স্রোতের সুরে।
পল রবসনের “ওল’ ম্যান’স রিভার” গানটি শুনতে পারেন এই লিংকে—
ভূপেন হাজারিকার ‘ও গঙ্গা তুমি বইছ কেন’ গানটি শুনতে পারেন এই লিংকে—