মঞ্চে নতুন নাটক ‘প্রণয় যমুনা’
সুবচন নাট্য সংসদের নতুন নাটক ‘প্রণয় যমুনা’র উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হলো গতকাল শুক্রবার, শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায়। আজ শনিবারও নাটকটি মঞ্চস্থ হবে একই হলে। আজ নাটকটির দ্বিতীয় সন্ধ্যা।
যমুনার তীরে বাঁশি বাজিয়ে, যমুনার জলে সাঁতার কেটে, যমুনার তরঙ্গে নৌকা ভাসিয়ে বড় হয়েছে কৃষ্ণ। এই যমুনার পাড়েই একদিন কৃষ্ণ দেখা পায় অপরূপ রাধার। তারপর রাধার সাথে কৃষ্ণের প্রেম হয়, হয় অভিসার, হয় হৃদয়ের লেনদেন। একদিন সান্দীপণী ঋষি এসে কৃষ্ণের বিস্মৃতি ভাঙায়। রাজা কংসের কারাগারে কৃষ্ণের বাবা মা বন্দি, তাদের উদ্ধার ও ধরনীকে পাপমুক্ত করে ভালোবাসা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানায় কৃষ্ণকে। ঋষির এই আহ্বান ফেরাতে পারে না কৃষ্ণ। জীবনের এই সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে প্রেমিক কৃষ্ণকে প্রেমের মায়া দূরে সরিয়ে পাড়ি দিতে হয় অজানার পথে। তাই বলে ভালোবাসা মরে না। ভালোবাসার দীপ হাতে রাধা যমুনার তীরে এসে দাঁড়ায়। কৃষ্ণের ফিরে আসার অপেক্ষায় রাধা দিন গোনে। রাধার চোখের জলে ভেসে যায় প্রণয় যমুনা।
শুক্রবার সন্ধ্যার উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মঞ্চকুসুম খ্যাত অভিনেত্রী শিমুল ইউসুফ এবং উদ্বোধক হিসেবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকী। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘রাধাকৃষ্ণ’ উপন্যাসের নাট্যরূপ ‘প্রণয় যমুনা’। নাটকটি রচনা করেছেন আসাদুল ইসলাম ও নির্দেশনা দিয়েছেন সুদীপ চক্রবর্তী। ‘প্রণয় যমুনা’ সুবচনের ৩৭তম প্রযোজনা। নাটকটিতে রাধাকৃষ্ণের প্রেমাখ্যান দেখানো হয়েছে যে আখ্যানজুড়ে আছে অভিসার বিরহ-মিলন, বৃন্দাবন আর আছে যমুনা নদী।
নাটকটির কৃষ্ণ চরিত্রে ফজলুল হক রাসেল ও রাধা চরিত্রে রূপ দান করেছেন সোনিয়া হাসান। অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন আহাম্মেদ গিয়াস, মোহাম্মদ আনসার আলী, মেহেদী হাসান সোহাগ, হোসেন ইমরান, তানভীর দিপু, ইমতিয়াজ শাওন, শাহ সালাউদ্দিন, আলামিন, মারুফ, সবুজ, আরিফ, মহউদ্দিন, জাকারিয়া, নাজু, লিঠু, সোমা, ফারজানা, অনন্যা, সোহান, মনোহর চন্দ্র দাস, যোয়া আযিম, আর্য মেঘদূত প্রমুখ।
নাটকটির সহযোগী নির্দেশক আহাম্মেদ গিয়াস, সঙ্গীত পরিকল্পনায় আমিরুল ইসলাম বাবুল, আলোক পরিকল্পনায় গর্গ আমিন, নৃত্য ও দেহ বিন্যাসে অমিত চৌধুরী, পোশাক পরিকল্পনায় সোনিয়া হাসান, পটচিত্রে শামীম, আবহধ্বনিতে সোহাও ও ইমতিয়াজ, অর্থ ব্যবস্থাপনায় জাকিয়া আনসারী কল্পনা, মঞ্চ সমন্বয়ে আল আমিন, প্রযোজনা ব্যবস্থাপনায় মারুফ, প্রদর্শনী ব্যবস্থাপনায় মোহাম্মদ আনসার আলী ও প্রযোজনা অধিকর্তা আহাম্মেদ গিয়াস।
নাট্যরূপের পেছনের ভাবনার কথা জানাতে গিয়ে নাট্যকার আসাদুল ইসলাম বলেন - “রাধাকৃষ্ণের প্রেম আখ্যান নিয়েই প্রণয় যমুনা। প্রেম হলো শাশ্বত, অনাদি কাল থেকে মানব-মানবীর মনের মধ্যে প্রেম বিরাজমান। মানুষের মনে প্রেমের তৃষ্ণা মরে না। আর রাধা-কৃষ্ণ হলো প্রেমের চিরায়ত রূপ। প্রণয় যমুনাজুড়ে আছে বাঁশির সুর, বৃন্দাবন, অভিসার, বিরহ, মিলন আর আছে যমুনা নদী। এই উপদানগুলো একত্রে একসুতোয় গেঁথে একটা গাঁথামালা তৈরিই ছিল আমার নাট্যভাবনা।”
নাটক শেষে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন নাট্যকার নাসরিন জাহান, অভিনেতা ঝুনা চৌধুরী, শাহ আলম দুলাল, সুরকার ও সংগীতশিল্পী অনুপ ভট্টাচার্য।