নারী ও পুরুষের বন্ধ্যত্বের কারণ
বন্ধ্যত্ব বা সন্তানধারণে অক্ষম হলে এখনও অনেকে শুধু নারীর দোষত্রুটি খুঁজে বেড়ায়। সন্তানধারণে অক্ষমতা শুধু যে নারীর হয়, তা নয়। পুরুষও অক্ষম হতে পারে। আর এ জন্য দরকার দোষারোপের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব, পুরুষের বন্ধ্যত্ব কী এবং কী কারণে তা হতে পারে।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে পুরুষের বন্ধ্যত্ব সম্পর্কে কথা বলেছেন প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. নাজিয়া সুলতানা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ডা. সামিউল আউয়াল স্বাক্ষর।
বন্ধ্যত্ব কি শুধু মহিলাদের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. নাজিয়া সুলতানা বলেন, একটা সময় ছিল, যখন আমরা ভাবতাম যে এটা নারীদেরই সমস্যা। কিন্তু যুগ পাল্টেছে, সময় পাল্টেছে। এখন শুধু নারীদের একা দোষারোপ করা যাচ্ছে না। এখন পুরুষদেরও অনেক ক্ষেত্রে কারণ চিহ্নিত হচ্ছে।
পুরুষদের আসলে প্রথমত কীভাবে কাউন্সেলিং করে থাকেন, এটি শুধু মহিলাদের ক্ষেত্রে নয়, পুরুষদেরও হতে পারে, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. নাজিয়া সুলতানা বলেন, আমরা সব সময় আগে থেকেই বলে রাখি, আমাদের কাছে আসতে হবে দুজনকে একসাথে। যখন দুজন একসাথে আসছে, তখন আমরা তাদের পরিস্থিতিটা জানিয়ে দিচ্ছি যে তাদের আসলে কী সমস্যা, তারা কোন পর্যায়ে আছে এবং সে ক্ষেত্রে যে হাজব্যান্ডদের একটা বিশেষ রোল আছে, তখন আমরা তাদের কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিচ্ছি। তখন তারা বুঝতে পারছে যে তাদেরও কিছু করণীয় আছে এ ক্ষেত্রে।
একটি কাপল বন্ধ্যত্বজনিত সমস্যায় ভুগছে, এটি আসলে কখন বলা যাবে, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. নাজিয়া সুলতানা বলেন, বন্ধ্যত্ব তখনই আমরা বলব, যখন একটি কাপল একসাথে একই জায়গায় এক বছর কোনও প্রটেকশন ছাড়া সন্তান নেওয়ার চেষ্টা করবে এবং যখন তারা ব্যর্থ হবে, তখন তাদের আমরা বন্ধ্যত্বের সংজ্ঞায় ফেলব।
পুরুষের বন্ধ্যত্ব বলতে আসলে কী বোঝায়, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. নাজিয়া সুলতানা বলেন, যখন দেখা যায় সন্তানধারণের অক্ষমতাটা পুরুষের কারণে, তখন আমরা বলি যে পুরুষের কারণেই এ বন্ধ্যত্ব।
একেবারে শুরুর দিকে যখন আসছেন একটি কাপল, তাঁদের কাউন্সেলিং করছেন, পরবর্তী সময়ে কী কী পরীক্ষা-নিরীক্ষার সম্মুখীন তাঁকে হতে হচ্ছে, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. নাজিয়া সুলতানা বলেন, একটা সময় ছিল, যখন নারীদের ট্রিটমেন্ট করতে করতে একটা সময় যখন দেখলাম কোনও সমস্যা পাওয়া যাচ্ছে না, তখন আমরা দৃষ্টিপাত করতাম পুরুষের দিকে। এখন যখন তারা প্রথমেই চলে আসছে, তখন আমরা একইসাথে পুরুষদেরও ডিটেইল হিস্ট্রি নিচ্ছি যে তাদের কোনও রকম অসুখবিসুখ আছে কি না, ফ্যামিলিতে বন্ধ্যত্ব রান করছে কি না, তাদের কোনও সার্জারির হিস্ট্রি আছে কি না, এক্সিডেন্টের হিস্ট্রি আছে কি না, স্মোকিং করছে কি না; এ ধরনের হিস্ট্রিগুলো আগেই নিয়ে নিচ্ছি। তারপর তাদের কিছু এক্সামিনেশনও হয়। যেমন ধরুন, পুরুষদের তো আসলে আমরা মহিলাদের মতো এক্সামিন করতে পারি না, বেসিক কিছু, যেমন তার হাইপ্রেশার, ডায়াবেটিস চেক করা, তার হাইট, বিএমআই, এগুলো আমরা দেখে নিতে পারি। যখন আমরা সন্দেহ করি যে কিছু প্রবলেম থাকতে পারে, তখন সে আঙ্গিকে কিছু ইনভেস্টিগেশনও করি। তবে সিমেন অ্যানালাইসিস যেটা, এটা এখন রুটিন টেস্ট হয়ে গেছে। ট্রিটমেন্টে আসলে আমরা অন্তত একটা টেস্ট দিয়ে থাকি।
পুরুষের বন্ধ্যত্ব সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।