শিশুর মেধা বিকাশে খাবারের ভূমিকা

Looks like you've blocked notifications!

সন্তান জন্মের পর অনেক মা-বাবাই একটি বিষয়ে চিন্তিত থাকেন, কীভাবে বাচ্চাদের মেধা বিকাশ করা যায়। শুধু চিন্তিত হলেই চলবে না, আমাদের জানতে হবে কোন ধরনের খাবারগুলো মেধা বিকাশে সাহায্য করে। আমরা সব সময় চিন্তা করি, কোনো মেডিকেশন দিয়ে এটা করা যায় কি না। এ ক্ষেত্রে সহজে পুষ্টিযোগ্য খাবার গ্রহণ করতে হবে।

এনটিভির নিয়মিত এক স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠানে শিশুর মেধা বিকাশে খাবারের ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ আয়শা সিদ্দিকা। তিনি বলেন, কিছু কিছু খাবার এ ক্ষেত্রে সাহায্য করে থাকে। যেমন—ওটমিল, যেটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং হাই ফাইবার সমৃদ্ধ। আয়রনও রয়েছে। আয়রন বাচ্চাকে যথেষ্ট সজাগ থাকতে সাহায্য করে। সকালের নাশতায় যদি বাচ্চাকে ওটমিল খাওয়ানো হয়, তাহলে এটি যথেষ্ট পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার। এ ছাড়া রয়েছে মাছ। মাছে প্রচুর ফ্যাটি অ্যাসিড, ওমেগা থ্রি—যেটা স্মৃতিশক্তি তৈরি করতে সাহায্য করে। বাচ্চাদের ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট তৈরি করে এবং যথেষ্ট স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে পারে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস রয়েছে মাছে, যাকে বলা হয় ডিএইচএ (ডোকোসাহেক্সানোয়েক অ্যাসিড)। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি কাজ করে ডিএইচএ। আমরা সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ডিএইচএ দিয়ে থাকি। কিন্তু আমরা যদি প্রচুর মাছ খেয়ে থাকি, প্রতিদিনের খাবারে যদি আমরা মাছের ভাগ রেখে থাকি, তাহলে ডিএইচএর অভাব পূরণ করা যায়।

পুষ্টিবিদ আয়শা সিদ্দিকা বলেন, আরেকটি প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হচ্ছে দই। প্রতিদিন যদি একবেলা অন্তত সন্তানকে দই খাওয়ানো হয়, তাহলে যথেষ্ট ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হয়। ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বাচ্চাকে প্রাণবন্ত রাখে। বাদাম একটি অন্যতম খাবার। বিকেলে নাশতায় আমরা বাচ্চাদের বিভিন্ন ডেজার্ট আইটেমে বাদাম দিতে পারি। এতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং এটিও বাচ্চাদের ব্রেইন ডেভেলপমেন্টের জন্য সাহায্য করে। জন্মের পর থেকে প্রথম পাঁচ বছর পর্যন্ত আমরা যদি বাচ্চাদের প্রোটিন সমৃদ্ধ, ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিনের মেন্যুতে রাখি, তাহলে বাচ্চাদের মেধা বিকাশে সহযোগিতা হয়। শুধু মেধা বিকাশ করলেই চলবে না, স্মৃতিশক্তি যাতে ধরে রাখতে পারে, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

পুষ্টিবিদ আয়শা সিদ্দিকার পরামর্শ, কিছু কিছু সবজি অথবা ফল, যেগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, সে ফলগুলো যদি তাদের খাদ্যতালিকায় রাখি, যেমন—ব্লু বেরি বা স্ট্রবেরি; এগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ওমেগা থ্রি সমৃদ্ধ। এটা মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে থাকে। ড্রাই ফুডসে রয়েছে প্রচুর আয়রন। যেমন—চেরি, কিসমিস; বাচ্চাদের টিফিন ও ডেজার্ট আইটেমে আমরা কিসমিস দিতে পারি। আয়রন বাচ্চাকে সজাগ থাকতে সাহায্য করে।

জন্মের পর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত সঠিকভাবে মস্তিষ্কের বিকাশ হয়ে থাকে। এ সময়ে যদি পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার দিতে পারি প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়, তাহলে মায়ের এই সমস্যা থাকবে না যে আমার বাচ্চা মনে রাখতে পারে না, সহজে পড়ালেখা ভুলে যায়। অনেক মায়েরা যেটা করে থাকেন, সকালে বাচ্চাদের স্কুলে ব্রেকফাস্ট না করিয়ে পাঠান। তাঁদের বলব, অবশ্যই সকালে বাচ্চার খাদ্যতালিকা থাকতে হবে এবং সেখানে সিরিয়ালি যদি কিছু ড্রাই ফুডস মিক্স করে দেন, বাচ্চা যখন স্কুলে যাবে সকালে, সে কিন্তু মনোযোগ দিতে পারবে লেখাপড়ায়। এ ক্ষেত্রে মা-বাবাকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।