শিশুর রক্তশূন্যতার পেছনে কারণ কী কী

Looks like you've blocked notifications!

আমাদের দেশে অনেকে শিশুই রক্তশূন্যতায় ভোগে। এ নিয়ে মা-বাবার দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। নানা কারণেই রক্তশূন্যতা হতে পারে। জন্মগত কারণ থাকতে পারে। পুষ্টিকর খাদ্যের অভাবেও রক্তশূন্যতা হতে পারে। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব, শিশুর রক্তশূন্যতার পেছনে কারণ কী কী।

এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে শিশুর রক্তশূন্যতা নিয়ে কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ডা. সামিউল আউয়াল স্বাক্ষর।

শিশুর রক্তশূন্যতার পেছনে কারণ কী কী, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. আফিকুল ইসলাম বলেন, রক্তশূন্যতার অনেক কারণ। সবচেয়ে কমনেস্ট যদি চিন্তা করি, শিশুদের তিনটি কারণে রক্তশূন্যতা হয়। একটা হলো ডেফিসিয়েন্সি এনিমিয়া, আয়রন ডেফিসিয়েন্সি এনিমিয়া সবচেয়ে কমন কারণ। দুই নম্বর হচ্ছে, রক্তে হিমোগ্লোবিনের মধ্যে হিম ও গ্লোবিন, প্রোটিন আছে। হিম হলো আয়রন। আয়রনের অভাবে হলে আয়রন ডেফিসিয়েন্সি এনিমিয়া। গ্লোবিন মানে প্রোটিন। এই প্রোটিনটা সিনথেসিস হয় জেনেটিক ডিটারমিনেশনের কারণে। যদি গ্লোবিনে অসুবিধা হয়, এটাকে আমরা বলি ইনহেরিটেড হিমোলাইটিক এনিমিয়া। যেমন থ্যালাসেমিয়া, থ্যালাসেমিয়া সিনড্রোম। তাহলে দুই নম্বর কারণ হলো, ইনহেরিটেড হিমোলাইটিক এনিমিয়া, যেটা জন্মগতভাবে ডিফেক্টিভ হিমোগ্লোবিন হয়।

অধ্যাপক ডা. আফিকুল ইসলাম বলেন, তিন নম্বর কমন কারণ হলো, যেটাকে বলা হয় এনিমিয়া অব ক্রনিক ডিজিজ। মানে অনেক দিন ইনফেকশন থাকলে, অনেক দিন ইনফ্লামেশন থাকলে। ক্রনিক ডিজিজে অনেক দিন টিউমারও থাকে যদি, তাহলে এই যে সেকেন্ডারি কজ, এটা হলো এনিমিয়া অব ক্রনিক ডিজিজ। তারপর আনকমন কিছু কারণ আছে, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। আনকমনের মধ্যে যদি রক্ত তৈরি কম হয়, এটাকে আমরা বলি এপ্লাস্টিক এনিমিয়া। কম হয়, কিন্তু এটা সবচেয়ে সিভিয়ার। রক্তের উপকরণের মধ্যে আয়রন ছাড়া অন্যগুলোও আছে। যেমন ভিটামিন বি১২ ফলিক এসিড, এর অভাবেও হতে পারে, এটাকে আমরা বলি মেগালোব্লাস্টিক এনিমিয়া। তারপর রক্তশূন্যতা হতে পারে, আরবিসির বিরুদ্ধে যদি অ্যান্টিবডি হয়। এটাকে বলা হয় ইমিউন হেমোলাইটিক এনিমিয়া। এটা নিউবর্ন বেবির হতে পারে। যেমন মায়ের যদি আরএইচ পজিটিভ থাকে, বাচ্চার নেগেটিভ হয়। তাহলে অ্যান্টিবডি প্লাসেন্টা ক্রস করে বাচ্চার হেমোলাইসিস করে। এটাকে আমরা বলি ইমিউন হেমোলাইটিক এনিমিয়া।

অধ্যাপক ডা. আফিকুল ইসলাম আরও বলেন, বড়দেরও ইমিউন হেমোলাইটিক এনিমিয়া হয় অ্যান্টিবডির জন্য। অ্যান্টিবডিটা এমনিই কোনও কারণ ছাড়াই হয়। এটাকে বলা হয় ইডিউপ্যাথিক বা প্রাইমারি। আবার এটা সেকেন্ডারিও হতে পারে। সেকেন্ডারি কিছু মেলেগন্যান্সির জন্য হতে পারে, ড্রাগের জন্য হতে পারে, ইনফেকশনের জন্য হতে পারে, অটোইমিউন ডিজিজের জন্য হতে পারে। তাহলে এনিমিয়া কিন্তু নিজে কোনও রোগ না, এটা অন্য রোগের লক্ষণ।

শিশুর রক্তশূন্যতা সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।