সিমেন অ্যানালাইসিস কী, কেন করা হয়
বন্ধ্যত্ব বা সন্তানধারণে অক্ষম হলে এখনও অনেকে শুধু নারীর দোষত্রুটি খুঁজে বেড়ায়। সন্তানধারণে অক্ষমতা শুধু যে নারীর হয়, তা নয়। পুরুষও অক্ষম হতে পারে। আর এ জন্য দরকার দোষারোপের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব, সিমেন অ্যানালাইসিস কী এবং এ থেকে পুরুষের বন্ধ্যত্ব নির্ণয় করা যায় কি না।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে পুরুষের বন্ধ্যত্ব সম্পর্কে কথা বলেছেন প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. নাজিয়া সুলতানা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ডা. সামিউল আউয়াল স্বাক্ষর।
সিমেন অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে আমরা কীভাবে বুঝতে পারি কেউ বন্ধ্যত্বজনিত সমস্যায় ভুগছেন, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. নাজিয়া সুলতানা বলেন, এটা থেকে অনেক কিছুই বোঝা যায়। খুব ক্লিয়ারলি। যেমন ধরুন কিছু ক্রাইটেরিয়া আছে, যেগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত হচ্ছে তার কাউন্ট। তার কাউন্ট যদি নরমাল না থাকে, যেমন ধরুন তার মোটামুটি ৬০ মিলিয়ন... মোটামুটি ১৬ মিলিয়নের ওপর গেলে আমরা বলি নরমাল; যদি দেখি ভালো একটা কাউন্ট, তাহলে সেটা তার জন্য খুবই ভালো। এর সাথে আরও দুটি ফ্যাক্টর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন ধরুন মটিলিটি। মটিলিটি মানে হচ্ছে স্পার্মের সাঁতরানোর যে একটা ক্ষমতা, সেটা যদি ভালো থাকে নরমাল রেঞ্জে, তাহলে সেটা ভালো বা যদি খারাপ থাকে, তাহলে সেটি বন্ধ্যত্বের কারণ।
ডা. নাজিয়া সুলতানা বলেন, সিমেন মরফোলজি বা আকার-আকৃতিগত সমস্যা। সেটা একটা বিশাল ব্যাপার। যদি স্পার্মটাই অ্যাবনরমাল হয়, সে ক্ষেত্রে তো কনসিভ হওয়ার চান্স খুব নগন্য। আরও কিছু আছে। যেমন ধরুন সিমেন অ্যানালাইসিস ভালো, কিন্তু তার অন্যান্য ডিএনএগত সমস্যা বা আরও অ্যাডভান্স কিছু পর্যায়ে আছে, সেগুলো তখন আমরা ইনভেস্টিগেট করি, যখন দেখি যে এটাতে কোনও সমস্যা পাওয়া যাচ্ছে না।
পুরুষ বন্ধ্যত্বের পেছনে কোন কোন কারণ দায়ী, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. নাজিয়া সুলতানা বলেন, কারণ বর্তমান যুগে যদি বলতে যাই, আসলে বেশ কিছু কারণ আছে। প্রাথমিকভাবে কিছু হরমোনাল ব্যাপার থাকতে পারে। যেমন টেসটসটেরন হরমোনের ঘাটতি থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত তার কিছু মেডিকেল ডিজিজ থাকতে পারে। যেমন তার ডায়াবেটিস থাকতে পারে, তার হাইপারটেনশন থাকতে পারে, চাইল্ডহুড হিস্ট্রি থাকতে পারে, মিজেলস মাম্পস হয়েছিল কি না ছোটবেলায়, তারপর তার টিউবার কোলোসিস হয়েছিল কি না ইত্যাদি।
এই হিস্ট্রিগুলো কেন প্রয়োজন হয়ে থাকে, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. নাজিয়া সুলতানা বলেন, এগুলো প্রয়োজন হয়ে থাকে, কারণ তার ছোটবেলায় মিজেলস, মাম্পস, টিউবারকোলোসিস হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা যায় তার টেস্টিকুলার ফেইলিউর, তার টেস্টে যে অঙ্গটি আছে, সেটি বিকল হয়ে যায়। আবার এমনকি তার স্পার্ম আসার যে পথটি, সেটিকেও বন্ধ করে দিতে পারে, যেটা মেজর কজ ইনফার্টিলিটির ক্ষেত্রে। তাই হিস্ট্রিটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
পুরুষের বন্ধ্যত্ব সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ।