হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসা কী?

Looks like you've blocked notifications!

হার্ট অ্যাটাক জীবনঘাতী ব্যাধি। হার্ট অ্যাটাক হলে খুব দ্রুত চিকিৎসা জরুরি। হৃৎপিণ্ডের রক্তনালিতে কোলেস্টেরল জমা হয়ে ব্লক হলে হার্ট অ্যাটাক হয়।

হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসা কী, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৬২২তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মো. আফজালুর রহমান। বর্তমানে তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : সিপিআর কী?

উত্তর : কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে বুকের মাঝখানে চাপ দিতে হবে। আর মুখ দিয়ে শ্বাস দিতে হবে। এটিই সিপিআর। সিপিআর শেখানোর জন্য সবাইকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। সর্বক্ষেত্রে সিপিআরের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।

আর হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসা তো দ্রুত নিতে হবে। রক্তনালি যখন বন্ধ হয়ে যাবে, তখন সময় গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি সেকেন্ডে পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে। হৃৎপিণ্ড ও মস্তিষ্কের কোষগুলো স্থায়ী ক্ষতি হয়। একবার যেটি মরে যায়, সেটি আর পুনর্গঠন হবে না। এ জন্য যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা করবেন, তত তাড়াতাড়ি রোগীর জন্য ভালো। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে ধারের কাছের হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। আপনার বাসায় যখন এ রকম মনে হবে, তিনশ মিলিগ্রাম এসপিরিন খেতে হবে। মনে রাখতে হবে, তিনশ মিলিগ্রাম এসপিরিন যদি দেওয়া হয়, ২৫ ভাগ মৃত্যুর হার কমবে। এটা একটি বড় নম্বর।

যখনই বুকে ব্যথা হবে, তিনশ মিলিগ্রাম এসপিরিন দিতে হবে। এর পর ধারের কাছের হাসপাতালে চলে যেতে হবে। কার্ডিয়াক হাসপাতাল থাকলে সেখানে নিতে হবে। যদি অন্য হাসপাতাল পাশে থাকে, সেখানে নিয়ে যাবেন। নিয়ে গেলে তখন চিকিৎসক দেখবে। ইকেজি, ইসিজি করবে। ইসিজি করে নিশ্চিত হবে। ইসিজি করতে হবে ১০ মিনিটের মধ্যে। ১০ মিনিটের মধ্যে রোগ নির্ণয় করতে হবে। চিকিৎসার মধ্যে একটি হলো থ্রম্বোলাইটিক থেরাপি। অন্যদিকে স্টেপটোকাইনেস অথবা টেরিটোপনোসেন নামে নতুন একটি ওষুধ বের হয়েছে। এটিও এখন বাংলাদেশে পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে যদি সুবিধা থাকে, তাহলে প্রাইমারি পিসিআই। প্রাইমারি পিসিআই আর কিছুই নয়, ক্যাথল্যাবে নেবে, এনজিও রুমে নেবে, এনজিওগ্রাম করবে, এরপর যে ব্লকটি থাকে, সেটি দূর করে একটি স্ট্যান বসিয়ে দেবে। একে রিং পরানো বলা হয়।

প্রাইমারি পিসিআই হলো সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি। তবে এটি করতে হবে ৬০ মিনিটের মধ্যে। হাসপাতালে পৌঁছার ৬০ মিনিটের মধ্যে যদি প্রাইমারি পিসিআই না করা যায়, তাহলে প্রথম যেটি বলেছিলাম থ্রম্বোলাইটিক থেরাপি, সেটি দিতে হবে। যত দেরি হবে, তত চিকিৎসার জটিলতা বাড়বে। হার্টের পাম্পিং কমে যাবে। একজন মানুষ যদি দুই ঘণ্টার মধ্যে যায়, আপনি যদি চিকিৎসা করেন, তাহলে ভালো হয়ে যাবে। তবে এই মানুষটি যদি ১২ ঘণ্টার পরে আসে, এরই মধ্যে কার্ডিয়াক ডেমেজ হবে, হার্টের পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে। তখন করলেও অত সুবিধা পাওয়া যায় না। এরপর রোগীর শ্বাসকষ্ট হতে পারে। একবার যদি স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আর ঠিক হবে না। হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসা খুব দ্রুত করতে হবে। এর জন্য অবশ্যই প্রয়োজন জানা।