৫ মাসে ৯২ থেকে ৬২ কিলো!

Looks like you've blocked notifications!

কখনো কি এমন হয়েছে, কেবল মুটিয়ে যাওয়ার কারণে পছন্দের আঁটসাঁট পোশাকগুলো পরতে পারছেন না আপনি? মন খারাপ হয়েছিল নিশ্চয়ই? আর ওজন বাড়ার দুশ্চিন্তায় কপালের একটু ভাঁজও পড়েছিল হয়তো!

টানা কয়েকদিন ভারী খাবার খেলে হু হু করে ওজন বেড়ে যায়। তবে এই ওজন কমাতে কত যে ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়; আর কত যে কসরত করতে হয়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

আর নতুন মায়ের ক্ষেত্রে তো সেটা আরো কঠিন। সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে ১০ থেকে ১২ কেজি ওজন এমনিতেই বেড়ে যায় একজন নারীর। আর শিশুর জন্মের পরে তার যত্ন নিয়ে এতটাই ব্যস্ত থাকতে হয় যে নিজের যত্ন নেওয়ার ফুরসতই হয়তো মেলে না।

তবে এই ঝক্কি সামলেই ৩০ কিলো ওজন কমিয়েছেন ৩৫ বছর বয়সী ভারতের বাসিন্দা পূজা পান্ডে। আর তাঁর এই কাজে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন স্বামী ও বোন। আসুন, পূজার মুখেই শুনে নিই তাঁর ওজন কমানোর গল্প। গল্পটি হয়তো ওজন নিয়ন্ত্রণে আপনাকেও অনুপ্রাণিত করতে পারে। 

নাম : পূজা পান্ডে

বয়স : ৩৫

পেশা : সহকারী ব্যবস্থাপক

উচ্চতা : পাঁট ফুট পাঁচ ইঞ্চি

বর্তমান ওজন : ৬২ কিলো

সর্বোচ্চ ওজনের রেকর্ড : ৯২ কিলো

ওজন কমিয়েছেন : ৩০ কিলো

ওজন কমাতে সময় লেগেছে : পাঁচ মাসের কম

সন্ধিক্ষণ

মেয়ের জন্মের পর আমার ওজন হয়েছিল ৯২ কিলো। প্রসবের পর আমি চেয়েছি অন্তত ছয় থেকে সাত কিলো ওজন কমুক। তবে দেখলাম, এতেও আমাকে যথেষ্ট স্থূলই লাগবে। আমি খুবই হতাশ হয়ে পড়লাম।

এই মন খারাপ নিয়েই নতুন জিন্স ও পোশাকের অর্ডার করলাম। কারণ, আমার পুরোনো পোশাকগুলো আর গায়ে লাগছিল না। এ সময় স্বামী এসে আমার হাত ধরল। সে শরীর-স্বাস্থ্যের ব্যাপারে খুবই সচেতন মানুষ। সে আমার ডায়েট ঠিকঠাক করে দিতে সাহায্য করল এবং কিছু ব্যায়াম শিখিয়ে দিল। আমি ওর পরামর্শমতো চলা শুরু করলাম।  

সকালের নাশতা

আমি অদল-বদল করে খেতাম উপমা, দোসা চাটনি, ওটস পরিজ, রোয়া দোসা, পোয়া, পনিরের খণ্ড (১৭০ গ্রাম) ও ইডলি।

দুপুরের খাবার

একটি চাপাটি, এক বাটি ডাল ও সবজি ছিল দুপুরের খাদ্যতালিকায়।

রাতের খাবার

একটি চাপাটি, এক বাটি ডাল, সবজি। কখনো কখনো এর পরিবর্তে দুই পিস মাছ বা মাংস এবং এক বাটি  ভাত খেতাম।

ব্যায়াম

আসলে আমি জিমে যাওয়ার মানুষ নই। তবে ছয় থেকে আট কিলোমিটার হাঁটতাম এবং এক ঘণ্টা সাঁতার কাটতাম। আমি বিশ্বাস করি, ওজন কমানোর সহজ কোনো পথ নেই। এটি বুঝতে হবে এবং ধৈর্য ধরতে হবে।

জীবনযাপনে আর কী পরিবর্তন এনেছিলেন?

ভেবেচিন্তে  ক্যালরি গ্রহণ করতাম। অতিরিক্ত চিনি রয়েছে, এমন খাবার ও পানীয় একেবারে বাদ দিয়েছিলাম। এর মধ্যে ছিল চকলেট, ভাজা খাবার ও কৃত্রিম পানীয়।

ওজন কমানোর লক্ষ্যে দৃঢ় ছিলেন কীভাবে?

এ ক্ষেত্রে আমার স্বামী বিনায়ক বড় ভূমিকা রেখেছিল। তার কারণেই আমি লক্ষ্যে দৃঢ় থাকতে পেরেছি।

আপনার জন্য সবচেয়ে খারাপ বিষয় কী ছিল?

সবাই আমাকে বলত মুটিয়ে গেছি। এটি আমাকে খুব ভারাক্রান্ত করতো। পছন্দের কোনো আঁটসাঁট পোশাকই পরতে পারতাম না। ছবি তুলতে লজ্জা পেতাম। আর সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল, বয়সের তুলনায় আমাকে বেশি বয়স্ক লাগত।

১০ বছর পর নিজেকে কীভাবে দেখতে চান?

ফিট আর স্বাস্থ্যবান থাকতে চাই এবং নিজেকে আর স্থূল দেখতে চাই না।

নিজেকে কীভাবে প্রেরণা দিতেন?

আমি নিজেকে ভালোবাসি এবং সুন্দর দেখতে চাই। আর আমার স্বামী ও বোন সব সময়ই প্রেরণা দিত ওজন কমাতে। এ প্রেরণাই আমাকে দৃঢ় হতে সাহায্য করেছে।

ওজন কমিয়ে কী শিখেছেন?

বুঝেছি, ফিটনেস কেবল গন্তব্য নয়, বরং যাত্রা।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া