৮ অভ্যাসে ক্যানসার হতে পারে

Looks like you've blocked notifications!
প্রতীকী ছবি

প্রতি বছরের মতো এবারও ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব ক্যানসার দিবস। ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যানসার কন্ট্রোলের (ইউআইসিসি) উদ্যোগে বিশ্বব্যাপী দিবসটি উদযাপন হচ্ছে। ২০২১ সালের বিশ্ব ক্যানসার দিবসের প্রতিপাদ্য—আমি আছি, থাকব।

ভারতের জীবনধারা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের হিসাবে বিশ্বে ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৪.৫ মিলিয়নের কাছাকাছি এবং ২০২৪ সালে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ মিলিয়ন হতে পারে। ক্যানসারের কারণে বহু মানুষের মৃত্যু হয়।

কিছু অভ্যাস ক্যানসারের কারণ হতে পারে। তাই সেই অভ্যাসগুলো আমাদের পরিহার করা উচিত। আসুন, যে অভ্যাসগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়, সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিই—

অতিরিক্ত মদ্যপান

অতিরিক্ত মদ্যপান ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, দিনে দুবার অ্যালকোহল গ্রহণ খাদ্যনালির ক্যানসার, কোলন ক্যানসার, রেকটাম ক্যানসার ও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। পাকস্থলিতে অ্যাসিড সৃষ্টি করে অ্যালকোহল এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যার জন্য দায়ী।

এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার

এয়ার ফ্রেশনার বা বায়ুসুগন্ধী অন্যতম হোম-কেয়ার পণ্য, যা বহু কাল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই বায়ুসুগন্ধী কোনোভাবেই বাতাসের মান বাড়ায় না, শুধু গন্ধ ছড়ায় এবং পরিচ্ছন্নতার মিথ্যা অনুভূতি জাগায়। এতে থাকা উপাদান ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।

গাড়ির ধোঁয়া

যেসব মানুষ সব সময় গাড়ির ধোঁয়ার সংস্পর্শে থাকেন, (যেমন—গাড়িচালক, মেরামতকারী ইত্যাদি) তাঁদের ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। ডিজেল ও পেট্রল বিষাক্ত কার্বন-মনোক্সাইড ও হাইড্রোকার্বন ছড়ায়।

পোড়া খাবার গ্রহণ

গ্রিল ফুড আইটেম, যেমন—মাছ, মুরগি ও মাংস; সেগুলো হালকা পোড়ানো হয় এবং সে কারণে হালকা কালচেভাব আসে। এসব খাবার আপনাকে স্মোকি ফ্লেভার দিলেও এতে থাকা হেটেরোসাইক্লিক অ্যামাইনস এবং পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বনস পাকস্থলি, মলাশয় ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।

ডায়েট সোডা পান

সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, বেশ কিছু সোডায় উচ্চমাত্রায় ৪-মিথাইলিমিডাজোল (৪-এমআই) রয়েছে, যা অ্যানিমেল কার্সিনোজেন হিসেবে পরিচিত। ডায়েট সোডায় কৃত্রিম মিষ্টদ্রব্য থাকে, যা অগ্ন্যাশয়সহ বিভিন্ন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। কিছু গবেষণা বলছে, ডায়েট সোডার কারণে মূত্রাশয় ও মস্তিষ্কে টিউমার হতে পারে।

সানস্ক্রিন ব্যবহার

ত্বকের ক্যানসারের সুরক্ষায় ও ত্বককে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষায় অধিকাংশ মানুষ সানস্ক্রিন ব্যবহার করে। কিন্তু সানস্ক্রিনে রয়েছে জিঙ্ক অক্সাইড নামক এক উপাদান, যা ফ্রি রেডিক্যালস উৎপাদনে সহায়তা করে এবং ডিএনএর ক্ষতি করতে পারে। এতে ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি হতে পারে।

সুগন্ধযুক্ত মোমবাতি ব্যবহার

সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, প্যারাফিন মোমবাতি থেকে যে ধোঁয়া বেরোয়, তাতে কার্সিনোজেনসহ বিভিন্ন ফসিল ফুয়েল উপাদান থাকে। অতিরিক্ত প্যারাফিন মোমবাতি ব্যবহার করলে তা আপনার জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

রাত জেগে কাজ

রাত জেগে কাজ করলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীর্ঘ রাত জেগে কাজ করলে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।

জেনে রাখা দরকার, এক গ্লাস কোক বা স্বল্প পরিমাণে পোড়া খাবার গ্রহণে ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে না, তবে নিয়মিত এবং লাগাতার গ্রহণের অভ্যাসে সার্বিক স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।

ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার জন্য কিছু সাধারণ অভ্যাস রয়েছে। ধূমপান, অতিরিক্ত স্থূলতা, অস্বাস্থ্যকার খাদ্যাভ্যাস, কম ফলমূল ও শাকসবজি গ্রহণ, শরীরচর্চার অভাব, অতিরিক্ত মদ্যপান, বায়ুদূষণ হত্যাদি ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।