শিশুর ডায়রিয়া হলে কখন হাসপাতালে নেবেন?

Looks like you've blocked notifications!

শিশুর ডায়রিয়া খুব মারাত্মক অবস্থায় চলে গেলে হাসপাতালে নেওয়া প্রয়োজন । তবে কখন বুঝতে পারবেন শিশুকে হাসপাতাল নেওয়া প্রয়োজন?  এ বিষয়ে  এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের  ২৬০৮তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. ইফতেখার উল হক খান। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারে শিশু বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত। 

প্রশ্ন : কী লক্ষণ দেখলে বাবা-মা বুঝবে সন্তানকে এখন হাসপাতালে নেওয়া দরকার। সেই লক্ষণগুলো কী?

উত্তর : যে লক্ষণগুলো বাবা-মায়েরা খেয়াল রাখবেন, প্রথম হলো বাচ্চাটি স্যালাইন খেয়ে পেটে রাখতে পারবে কি না। না কি বমি করে সঙ্গে সঙ্গে সব বের করে দিচ্ছে- এটি একটি। 

দুই নম্বর লক্ষ করবেন, শিশুর পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাচ্ছে কি না। তিন নম্বর লক্ষ করবেন যে শিশুর প্রস্রাবের পরিমাণ অনেক কমে গেছে কি না। চার নম্বর লক্ষ করবেন যে শিশুর প্রস্রাবের পরিমাণ অনেক কমে গেছে কি না। আরেকটি খেয়াল করবেন শিশুর চোখ অক্ষিকোটরে ঢুকে গেছে কি না। মুখের মধ্যের আর্দ্রতা কমে গেছে কি না। শুষ্ক হয়ে গেছে কি না জিহ্বাটা। শিশুকে স্যালাইন খেতে দিলে কি ধীরে ধীরে খাচ্ছে না কি দ্রুততার সঙ্গে খাচ্ছে। এরপর খেয়াল করবেন শিশুর জ্বর চলে এলো কি না। অনেক সময় দেখা যায় যে শিশুর চেতনা কমে যেতে পারে। বাচ্চা অনেক ক্লান্ত বা বিরক্ত হয়ে গেল কি না। আর সবচেয়ে মারাত্মক  হলো বাচ্চার খিঁচুনি হতে পারে। 

 এই ধরনের মারাত্মক বিষয়গুলোর দিকে অভিভাবকরা খেয়াল রাখবেন। এর কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। 

প্রশ্ন : চিকিৎসকের কাছে নিলে আপনারা কী ধরনের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন?

উত্তর : চিকিৎসকের কাছে গেলে আমরা প্রথম যেটা করি ধারণা করি যে তার কী ধরনের ডায়রিয়া হয়েছে। তার কি অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন আছে,  না কি নেই।
পাশাপাশি সবচেয়ে জরুরি যেটা যে তাদের পানিশূন্যতা সেটা দেখি। আমরা দেখি শুধু মুখে খাওয়ার স্যালাইন দিলেই তার উন্নতি হবে কি না।   

যদি আমরা এ রকম দেখে থাকি সেই ক্ষেত্রে আমরা কিছু করণীয় পরমর্শ দিয়ে দেই। বাবা-মাকে শিখিয়ে দেই। বলে দেই বাসায় গিয়ে আপনি স্বাভাবিক খাবার দেন, পাশাপাশি মুখে বারবার স্যালাইন খেতে দেন, আশা করা যায় ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শিশুর উন্নতি হবে। 

আর যদি দেখি পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দিচ্ছে, সেই ক্ষেত্রে আমরা বাচ্চাকে হাসপাতালে রাখি। চার ঘণ্টা হাসপাতালে রেখে কিছু স্যালাইনের মাত্রা নির্ধারণ করে দেই, সেটি তাকে খেতে দেই। চার ঘণ্টা পর আমরা আবার তাকে পরীক্ষা করে দেখি। যদি দেখি যে অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, বাড়ি পাঠিয়ে দেই। আর যদি দেখি অবস্থার উন্নতি হয়নি, যদি দেখা যায় আরো ঝুঁকির মধ্যে চলে গেছে, সেই ক্ষেত্রে আমরা বাচ্চাকে ভর্তি করে, মারাত্মক পানিশূন্যতার ব্যবস্থাপনা হিসেবে শিরা পথে স্যালাইন দেই।