দুর্ঘটনা-পরবর্তী মানসিক চাপ বুঝবেন কীভাবে?

Looks like you've blocked notifications!

দুর্ঘটনা-পরবর্তী সময়ে অনেকের মানসিক চাপ হয়। একে পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার বলে। এর কিছু লক্ষণ রয়েছে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানে ২৬১০তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. ঝুনু শামসুন নাহার। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকিয়াট্রিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন :  এসব দুর্ঘটনায় সবার তো সমস্যা হয় না। কারো কারো মধ্যে হয়। এই মানসিক সমস্যা হলে কী ধরনের অসুবিধা হয় এবং এটি বোঝার উপায় কী?

উত্তর : ডিজঅর্ডার হলে মানুষ খুব আতঙ্কগ্রস্ত থাকে। একজন মানুষের মধ্যে যখন আমরা এই অসুখ দেখতে পাই, তার মধ্যে ঘটনাটা বারবার ফিরে আসছে। ভাবছে, এই ঘটনা এখনো আমার সঙ্গে ঘটছে। কিংবা যে দুঃস্বপ্ন দেখে। কিংবা সে ভাবে, আমার সঙ্গে এসব বিষয় ঘটছে। সে সব সময় আতঙ্কগ্রস্ত বা ভীতিগ্রস্ত থাকে। অল্পতেই যে চমকে ওঠে। তার মধ্যে শারীরিক প্রতিক্রিয়া, ঘাম বা অন্য কিছু দেখা যায়। সেইসঙ্গে দেখা যায় সে এড়িয়ে যাচ্ছে সেই অবস্থাকে।  যেখানে তার এ দুর্ঘটনা ঘটল, যেমন একটি মেয়ে হয়তো লিফটে ধর্ষিত হয়েছিল, সে লিফট এড়িয়ে যাবে। কিংবা রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপের মধ্যে যে ছিল, সে রানা প্লাজা কিংবা কোনো বিল্ডিংয়ের কাছে যেতে ভয় পাবে। এ রকম অনেক এড়িয়ে যাওয়ার লক্ষণও হয়। আরেকটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তাদের কিন্তু স্মৃতি হারিয়ে যায়। ওই সময়টায় কী ঘটেছিল বা ধর্ষিত হওয়ার সময় ধর্ষক কী করেছিল, কী জামা পরেছিল, সেটাও দেখা যায় যে অনেক সময় ভুলে যাচ্ছে। এই সময় স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও আমরা দেখি। আমরা বলি ফ্রেগমেন্টেড মেমোরি। এসব বিভিন্ন পরিস্থিতি থেকে ঘুমের ব্যাঘাত, দুঃস্বপ্ন, ঘটনার কথা বারবার ফিরে আসা, তার কিছু শারীরিক সমস্যা—এগুলো  দেখে আমরা নির্ণয় করতে পারি যে সে এ ধরনের চাপে ভুগছে।

প্রশ্ন : এ রকম চাপ হলে তাদের স্বাভাবিক জীবনে কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে?

উত্তর : খুবই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যার এ রকম অসুখ হয়, সে সব নেতিবাচক চিন্তা করে। সে মনে করে, পৃথিবী হচ্ছে আমার জন্য ভয়ংকর। কিংবা ওই জায়গায় গেলেই আমার এ রকম ঘটনা ঘটবে। সে কাউকে বিশ্বাস করে না। পরে তার মধ্যে বিষণ্ণতার লক্ষণও চলে আসে। আত্মহত্যার প্রবণতা চলে আসে। সে নিজেকে অপরাধী মনে করে। একজন মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে, এটি তো তার দোষ ছিল না। কিন্তু সে নিজেকে অপরাধী বোধ করতে থাকে। তার কার্যক্রম ব্যাহত হয়।