দুর্ঘটনা-পরবর্তী মানসিক চাপ, কখন কাউন্সেলিং নেবেন?

Looks like you've blocked notifications!

দুর্ঘটনা-পরবর্তী সময়ে মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কাউন্সেলিং প্রয়োজন হয়। তবে এটি কখন নিতে হবে, সে বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত এবং ধারণা থাকা জরুরি।

এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানে ২৬১০তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. ঝুনু শামসুন নাহার। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকিয়াট্রিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : কাউন্সেলিং কখন প্রয়োজন হয়?

উত্তর : মানসিক অবস্থার বেশ অবনতি হলে কাউন্সেলিং নিতে হবে। আমাদের কাছে একজন এলো, এতই অস্থির, উদ্বেগপূর্ণ যে সে সময় সে কিন্তু কাউন্সেলিং নিতে পারে না। কাউন্সেলিং তো হবে একসঙ্গে কাজ। আমি ও আমার ক্লায়েন্ট একই সঙ্গে মিলে কাজ করব। আমি তাকে কিছু কিছু পরামর্শ দেব। সিদ্ধান্ত সে নেবে। এই পরামর্শ নেওয়া বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য তার মনের একটি স্থিতাবস্থা দরকার। একজন রোগী যে বসতেই পারছে না, উদ্বেগবোধ করছে, ঘুমাতে পারছে না। সারাক্ষণ হাঁটাহাঁটি করছে, সে মুহূর্তে আমরা তাকে কিছু ওষুধ দিয়ে বা সে হয়তো গভীর বিষণ্ণতায় আছে, সে সময় আমরা তাকে অ্যান্টি-এংজাইটি বা অ্যান্টিডিপ্রেশন ওষুধ দিয়ে, ঘুমের ওষুধ দিয়ে আমরা তাকে স্বাভাবিক করা শুরু করি।

আমাদের সেশন তো অন্তত ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট হয়, এ সময় যখন সে বসে থাকতে পারবে, আমাদের কথা কিছু শুনতে পারবে, তখনই আমরা দীর্ঘমেয়াদি সেশনের ব্যবস্থা করি।

কাউন্সেলিং সেশন হচ্ছে এ রকম যে রোগী নিজেই তার সমস্যার কথা বুঝতে পারবে। নিজেই সমস্যার কথা বুঝতে পেরে নিজেই তার সমস্যার সমাধান করবে। আমি তার সমস্যার সমাধান করে দেবো না। আমি তাকে নিজেকে বুঝতে সাহায্য করব। সে যেন নিজের সমস্যার কথা বুঝতে পেরে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।

প্রশ্ন : একজন মানুষ যখন এই পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার, এ ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হলে অনেক সময় বোঝেন না যে সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে যেতে হবে। আবার যাঁরা ধর্ষণের শিকার হোন, তাঁরা লজ্জা বা বিভিন্ন কারণে বিষয়টি জানতে চান না। সে ক্ষেত্রে তাঁরা যাতে আসেন, সে বিষয়ে আপনার পরামর্শ কী?

উত্তর : আমি একটি এনজিওর সঙ্গে কাজ করেছিলাম, রানা প্লাজায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি তাদের সঙ্গে, সেখানে আমি একসঙ্গে অনেকের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। তাদের মধ্যে দেখেছিলাম, অনেক দিন পরও তাদের মধ্যে পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারের চাপগুলো রয়ে গেছে। আমি তো গবেষণা করলাম এই প্রজেক্টে। তখন আমি তাদের নিয়ে দলে বসলাম। দলে বসলে একটি জিনিস ভালো হয় যে তারা মনে করে যে আমি একাই নই, আমার সঙ্গে আরো অনেকে এ সমস্যার মধ্যে আছে, এতে সহমর্মী হওয়ার একটি সুযোগ থাকে। এতে আমরা তাদের রিলাক্সেশন থেরাপি দিই। রিলাক্স করা, গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা, মাসকুলার রিলাক্সেশন বা কিছু সুন্দর কল্পনা দিয়ে, আমরা তাকে শিথিল করার চেষ্টা করি। সেখানে আমি দেখেছি, ওষুধ ও দলগত থেরাপির মাধ্যমে আমি বেশ উপকার পেয়েছি।