অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে জাতীয় নীতিমালা দরকার

Looks like you've blocked notifications!

অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসটেন্স বর্তমানে বাড়ছে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৬১৯তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. আবু সাঈদ মো. মোসাদ্দেক।  বর্তমানে তিনি উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসটেন্সের বর্তমান প্রেক্ষাপট কী?

উত্তর : ২০৫০ সালে প্রায় এক কোটি লোক, অ্যান্টিবায়োটিক ইনফেকশন রেজিসটেন্সের জন্য মারা যেতে পারে। এই ভয়াবহ অবস্থার যেন সম্মুখীন হতে না হয়, সেজন্য এখনই যেটি করণীয় সে সম্পর্কে আজকে আলোকপাত করব।

প্রশ্ন : এই মুহূর্তে আমাদের করণীয় কী আছে?

উত্তর : গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে একটি সভা হয়েছিল, সেখানে ২১ সেপ্টেম্বর শুধু অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসটেন্স নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। সেখানে জাতিসংঘ সব সদস্য দেশকে বলেছিল এখনই এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার জন্য। অথবা নীতিমালা বা পদক্ষেপ নেওয়ার মতো তৈরি হোন। সেখানে রাষ্ট্রের যেমন ভূমিকা আছে, চিকিৎসক হিসেবে আমার ভূমিকাও আছে। রোগীদের একটি ভূমিকা আছে। এখানে শুধু চিকিৎসক, রোগী বা প্রশাসন নয়, কৃষিক্ষেত্রে যারা আছে, তাদেরও ভূমিকা আছে। সম্প্রসারিত ও সমন্বিত একটি ভূমিকায় যেতে হবে।

প্রশ্ন : চিকিৎসকের এখানে কী কী ভূমিকা আছে?

উত্তর : এ বিষয়ে চিকিৎসক একজন নেতার ভূমিকা পালন করতে পারেন। কারণ, অ্যান্টিবায়োটিক যখন যেখানে দরকার তখন সেখানেই শুধু চিকিৎসক ব্যবহার করবেন।

যেমন সাধারণ ভাবে বলি ডায়রিয়ার চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দরকার আছে। তবে সব ডায়রিয়ার জন্য দরকার নেই। যেটা ভাইরাস দিয়ে হচ্ছে, তার ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো ভূমিকা নেই। সেই ক্ষেত্রে আমি দেব না। যথাযথ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে আমি অ্যান্টিবায়োটিকটা ব্যবহার করব।

অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা উচিত এবং একটি কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন করা উচিত।

প্রশ্ন : সমন্বিত ভূমিকার ক্ষেত্রে কী করা উচিত?

উত্তর : এখানে আমি দুটো ভাগে ভাগ করব। রোগীর ভূমিকার ক্ষেত্রে আমি বলব অযাচিতভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করবেন না। ফার্মেসিতে গিয়ে প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক নেবেন না। আর অ্যান্টিবায়োটিক যদি ব্যবহার করতেই হয় সেটা নিবন্ধিত চিকিৎসকের নিদের্শনা অনুসারে, অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করবেন। সেই নিবন্ধিত চিকিৎসক যত দিন ব্যবহার করতে  বলবেন এবং যে মাত্রায় ব্যবহার করতে বলবেন, তত দিন ব্যবহার করবেন। সেই অ্যান্টিবায়োটিকটিই ব্যবহার করবেন।

 অনেকে একটু সুস্থ হলেই অ্যান্টিবায়োটিক বন্ধ করে দেয়।  এটা করা যাবে না। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হয়ে গেছে। কিছু অ্যান্টিবায়োটিক অবশিষ্ট আছে ব্যবহারের পর, ভবিষ্যতের জন্য আমি রেখে দেব, পরে খাওয়ার জন্য। এটিও করা উচিত নয়। অন্য কাউকেও দেওয়া উচিত নয়।

 প্রশ্ন : প্রশাসনের ভূমিকা এই ক্ষেত্রে কী হতে পারে?

উত্তর : চিকিৎসক সমাজ, কৃষি ক্ষেত্রে যাঁরা নিয়োজিত আছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে, সবাইকে মিলে একটি সমন্বিত ভূমিকা পালন  করতে হবে। সেই ক্ষেত্রে এখনই জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের নীতিমালা তৈরি করা দরকার।  অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসটেন্স কীভাবে কমানো যায় এ বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা করা দরকার।

আর হাসপাতালগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যবিধি ঠিকমতো পালন করছে কি না, সেগুলো অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।