প্রবীণদের খাদ্যতালিকা কেমন হবে?

Looks like you've blocked notifications!
প্রবীণদের খাবারের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। ছবি : অ্যাসসিনিয়রকেয়ারডট কম

একজন তরুণই ভবিষ্যতে প্রবীণ হন। সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রবীণদের ভূমিকা অনেক। তবে সমাজে তাঁরাই যেন সবচেয়ে কম মর্যাদা পান। সাধারণত ৬০ বছরের ওপর চলে গেলেই আমরা মনে করি, ব্যক্তিটি আর কাজকর্ম করতে পারবেন না। আস্তে আস্তে যত বয়স বাড়তে থাকে, পরিবারের অন্যান্য সদস্যও তাঁদের থেকে দূরে সরে যান। আবার পরিবারের প্রবীণ সদস্যটিও অনেক সময় মনে করেন, তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী কোনো কিছুই সন্তানরা পূরণ করতে পারছে না।

একজন প্রবীণ ব্যক্তিকে সুস্থ রাখতে হলে সঠিক খাবার নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত দেখা যায়, প্রবীণদের খাবার খাওয়ার পর হজমের ধারাবাহিকতায় কিছুটা ঘাটতি থাকে। অর্থাৎ যে মানুষটি প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় সব ধরনের খাবার খেতে পারতেন, প্রবীণ হয়ে গেলে সে আর সব ধরনের খাবার খেতে পারেন না।

সাধারণত এ বয়সে দেখা যায়, প্রচুর রোগ হতে পারে। ডায়াবেটিস হতে পারে, হার্টের সমস্যা হতে পারে, প্রেশার হতে পারে, পাকস্থলীর কিছু সমস্যা হতে পারে। খাবার খেলে বমি হয়, খাবার খেলে অরুচি হয়, খাবার নিতে পারে না। আইবিএস বা ইরিটেবল বাউল সিনড্রোম থাকে, গ্যাস্ট্রোএন্টেসটাইনাল সমস্যা থাকে। এই বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল করে প্রবীণদের খাদ্যতালিকা তৈরি করতে হবে। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমনভাবে করতে হবে যে তাঁর সারা দিনের ক্যালরির চাহিদা পূরণ হয়। এমন খাবার দিতে হবে যেন অল্পতেই ওনার শরীর সেটি গ্রহণ করতে পারে, শোষণ করতে পারে। অর্থাৎ সহজপাচ্য। কম মসলা, কম গুরুপাক, স্বাভাবিক খাবার খেতে হবে। তবে ওনার পছন্দ অনুযায়ী খাবার হতে হবে।

তবে তাঁর রোগ অনুযায়ী যে খাবার তাঁকে নিষেধ করা হবে, সেটি এড়িয়ে যেতে হবে। ধরুন, একজনের ডায়াবেটিস আছে, তিনি মিষ্টি খেতে পারবেন না। তাঁকে মিষ্টি বাদ দিয়ে, তাঁর পছন্দমতো অন্য যেকোনো খাবার দিতে হবে। তবে এই বয়সে শরীরে চর্বি জমার মাত্রা বেশি থাকে। এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট, যেমন—খাসি, গরুর মাংস, ঘি, মাখন, মেওনেজ ইত্যাদি কম খেতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ বেশি থাকলে পনির, লবণজাতীয় খাবারগুলো একদম বাদ দেওয়া উচিত।

সাধারণত অল্প অল্প করে ব্যক্তি অনুযায়ী দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা পর পর দিনে যদি সাত থেকে আট ঘণ্টা খেতে দেওয়া হয়, তাহলে তাদের পাকস্থলীও নিরাপদ থাকবে। ধারাবাহিকভাবে যে খাবার সে নিচ্ছে, সেটি হজম হয়ে আসবে।

এভাবে যদি আমরা পরিবারের অন্যরা প্রবীণদের প্রতি একটু খেয়াল নিই, তাহলে তাঁদের স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে, ওনারা কর্মঠও থাকবেন।

লেখক : সিনিয়র পুষ্টি ও পথ্য বিশেষজ্ঞ, বারডেম হাসপাতাল।

অনুলিখন : শাশ্বতী মাথিন