দুধ নিয়ে দুই কথা

জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যে শব্দটি আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত সেটি পুষ্টি। পুষ্টি ছাড়া আমরা চলতে পারব না। আর সর্বদা পুষ্টির কথা যদি বলি, তাহলে সর্বোৎকৃষ্ট হলো দুধ। জন্মের পর থেকে শিশুর বৃদ্ধির জন্য মায়ের দুধ ছাড়া আমরা কিছুই চিন্তা করতে পারি না।
সবার জন্যই দুধ দরকার। এটি বাড়ন্ত শিশুর যেমন দরকার, তেমনি প্রাপ্ত বয়স্কদেরও দরকার। প্রত্যেকের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে দুধের কোনো বিকল্প নেই। তবে অনেকেই খাবারটি খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেন? আগে একটি সময় ছিল যখন প্রতিদিন পরিবারের সঙ্গে বসে আমরা দুধ বা দুধের তৈরি খাবার খেতাম। এখন কিন্তু সেরকম আর দেখা যায় না।
আমাদের শিশুরা এখন অন্যান্য অনেক খাবারে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। আমরা ফাস্ট ফুডের প্রতিযোগিতায় নেমেছি। অনেক বাজে খাবার এখন আমরা শিশুদের দেই। চিপস, জুস ইত্যাদি খাবারের মধ্যে আমরা ভুলেই গেছি দুধের মতো একটি উপকারী খাবারের কথা।
দুধ ক্যালসিয়ামে পরিপূর্ণ একটি খাবার। বাড়ন্ত শিশু থেকে শুরু করে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এটি একটি মানুষের ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে।
দুধের প্রোটিনের নাম হলো ক্যাজি। এই প্রোটিন অন্য খাবার থেকে আমরা পাব না। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য সবসময় দুধের প্রোটিন খুব জরুরি। ইনসুলিন যারা নিয়ে থাকে, তাদের ইনসুলিন নিতে সাহায্য করে দুধের প্রোটিন। এ ছাড়া দুধে পরিপূর্ণ রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট। এগুলো শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়।
অনেকে দুধের ফ্যাট বা চর্বিকে ভয় পায়। ১০০ মিলিগ্রাম দুধের মধ্যে ১৩ গ্রাম ফ্যাট রয়েছে। এটি শরীরে সম্পূর্ণভাবে ব্যবহার হয়ে যায়। দুধের শর্করা বা ল্যাকটোজের কথা জানে না, এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। দুধের এই ল্যাকটোজ, দুধ ছাড়া অন্য কোনো খাবার থেকেই পাওয়া যাবে না। তাই প্রতিদিনের খাবারে অবশ্যই আমরা দুধ যুক্ত করব। সকালে ও রাতে ঘুমের আগে এক গ্লাস দুধ খাওয়া শরীরের উপকার করে। রাতে এক গ্লাস দুধ খাওয়া কিন্তু সারারাত ভালোভাবে ঘুমাতে সাহায্য করে। যেকোনো মানসিক দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করে।
দুধের শর্করা অ্যান্টি ক্যানসার উপাদান হিসেবে কাজ করে। কাজেই আমরা সবসময় খাদ্যতালিকা দুধ রাখব। তবে যাদের ল্যাকটোজে ইনটলারেন্স বা অসুবিধা আছে তারা দুধের তৈরি খাবার খাওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লেখক : পুষ্টিবিদ স্কয়ার হাসপাতাল
অনুলিখন : শাশ্বতী মাথিন