চোখের রোগ গ্লুকোমা কী?

Looks like you've blocked notifications!

চোখের প্রেশার বা চাপজনিত রোগ গ্লুকোমা। এই রোগে চোখের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৭১৭তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. সিদ্দিকুর রহমান। বর্তমানে তিনি ভিশন আই হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও গ্লুকোমা বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : গ্লুকোমা বলতে কী বোঝায়?

উত্তর : ‘গ্লুকোমা’ শব্দটি আগে বেশি প্রচলিত ছিল না। শুধু খুব বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের চিকিৎসকদের মধ্যে একটু কথোপকথন চলত। তবে আজ অনেকেই এর নাম জানেন।

গ্লুকোমা চোখের একটি রোগ। এই রোগে চোখের স্নায়ু ধীরে ধীরে নষ্ট হয়। একসময় চোখ সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে যায়। এটি এত ধীরে ধীরে হয় যে বেশিরভাগ রোগী এর লক্ষণ বুঝতে পারেন না। আর যখন বুঝতে পারেন, তখন ৮০ থেকে ৯০ ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। এই কারণে গ্লুকোমার বিষয়ে আমাদের সচেতনতা প্রয়োজন।

প্রশ্ন : শুরুতে যেন রোগটি বোঝা যায়, সে বিষয়ে কী করণীয়?

উত্তর : আসলে প্রথমে রোগীকে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কিন্তু কখন যাবে? চোখ ব্যথা হলে, লাল হলে বা চশমা লাগলে কোনো না কোনোভাবে রোগী একবার তো চিকিৎসকের যাবে? চিকিৎসকের কাছে গেলে তার উচিত একে খুঁজে বের করা। এটা চিকিৎসকের দায়িত্ব। অন্য যেকোনো সমস্যা নিয়েও যদি চোখের চিকিৎসকের কাছে যায়, চিকিৎসকের উচিত একে ভালো করে দেখা। তবে কয়েকটি প্রাথমিক জিনিস সাধারণভাবে রোগী হিসেবে আমরা মনে রাখতে পারি। সেটা হলো ঘন ঘন চশমার পাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে কি না সেটি, বিশেষ করে চল্লিশের কাছাকাছি বয়স হলে। তবে অনেক সময় আগেই চশমা লাগে। অনেক সময় চোখে অস্বস্তি হয়।

সুতরাং একজন চোখের চিকিৎসকের কাছে রোগী পৌঁছালে চিকিৎসকের দায়িত্ব হবে চোখের প্রেশার ঠিক আছে কি না, সেটি দেখা। চোখের ভেতরের স্নায়ুর গঠন দেখতে গ্লুকোমা রোগীদের মতো কি না, সেটি দেখতে হবে। আর এটি যদি সন্দেহজনক হয়, অবশ্যই পরবর্তী কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার ভেতর চলে যেতে হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমাদের একটি সিদ্ধান্তে এসে পৌঁছাতে হবে।

প্রশ্ন : যদি আপনারা মনে করেন রোগী ঝুঁকির মধ্যে আছে, এর পরবর্তী পদক্ষেপ কী থাকে?

উত্তর : একটি ক্লিনিক্যাল শব্দই আছে গ্লুকোমা সাসপেক্ট। এর মানে কিছু কিছু লক্ষণ হয়তো দেখা যাচ্ছে। তবে চোখটি সম্পূর্ণভাবে এখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তখন তাদের আমরা নিয়মিত ফলোআপের ভেতর থাকতে পরামর্শ দিই। সেটা হয়তো তিন মাস, ছয় মাস বা এক বছর পর পর। তেমন কোনো সমস্যা না থাকলে সাধারণত এক বছর পর পর দেখাতে বলি। তখন আমরা আবার ভিজুয়াল ফিল্ড টেস্ট করে দেখি, তার কোনো ক্ষতি হচ্ছে কি না। ক্ষতিগ্রস্ত হলেই কেবল আমরা নিশ্চিত হতে পারি, তার রোগটি আছে এ বিষয়ে। এর মানে আমাকে রোগ নির্ণয়ের জন্য কিছু ক্ষতি মেনে নিতে হবে। তবে সেটি যেন আমাদের গ্রহণযোগ্য মাত্রার মধ্যে থাকে এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত না করে। তাই ক্ষতির মাত্রা যদি বেড়ে যাচ্ছে দেখি, তাহলে গ্লুকোমার চিকিৎসা শুরু করে দিই।