ত্বকে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে কী করবেন?

স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া, তৈলাক্ত ত্বক, পানির সংস্পর্শে বেশিক্ষণ থাকা ইত্যাদি কারণে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয়। ফাঙ্গাল ইনফেকশনে কী চিকিৎসা এবং কখন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৭৬০তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক রাশেদ মোহাম্মদ খান। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের চর্ম ও যৌন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে রোগী কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন ?
উত্তর : আসলে ফাঙ্গাল ইনফেকশন একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎসা করা উচিত। তবে প্রতিরোধের জন্য কিছু করা যেতে পারে। ঘামে খুব ভিজে আছেন, বাসায় এসে কাপড় বদলে শুকনো কাপড় পরুন। সুন্দর করে গা সাবান দিয়ে ধুয়ে-মুছে একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার গায়ে মাখুন। যত শুকনো থাকতে পারবেন, ফাঙ্গাল ইনফেকশন কম হবে। আর যদি হয়েই যায়, তখন কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যাওয়া লাগবে। এ ক্ষেত্রে অ্যান্টিফাঙ্গাল ট্যাবলেট খেতে হয়, ক্রিম আছে, এগুলো লাগাতে হয়।
তবে আমরা সম্প্রতি খুব কঠিন একটি অবস্থার মুখোমুখি হচ্ছি, ফাঙ্গাল ইনফেকশনগুলো রেজিসট্যান্স হয়ে যাচ্ছে। এর কারণ হলো রোগীরা কাউন্টার থেকে যত্রতত্র মলম কিনে নেয়। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় স্টেরয়েড বা স্টেরয়েডের সঙ্গে মেশানো অ্যান্টিফাঙ্গাল জাতীয় একটি মলম থাকে। এসব লাগায়।
যত্রতত্র এগুলো ব্যবহার করার কারণে ফাঙ্গাসগুলো শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ওষুধ দিয়েও ভালো হচ্ছে না। এ জন্য আমি বলব, না বুঝে নিজে কোনো ওষুধ লাগাবেন না। একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে ওষুধ ব্যবহার করুন।
অনেকে মনে করে, সাত দিন ওষুধ খেল, ভালো হয়ে গেল। আসলে কিন্তু এটি ভেতরে রয়ে যাচ্ছে। ছাই চাপা আগুনের মতো। এটি দীর্ঘ মেয়াদে চিকিৎসা। যেতে প্রায় এক মাস লেগে যায়। এক মাস নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে এবং নিয়মিত মলম লাগাতে হবে। তাহলে হয়তো যাবে।
আরেকটি হলো ক্যান্ডিডা। আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে হয়। সাদা সাদা হয়ে যায়। পানিতে যাঁরা হাত বা পা ভিজিয়ে রাখবেন, প্রথমে এসেই পরিষ্কার সাবানপানি দিয়ে জায়গাগুলো ধুয়ে ফেলুন। এর পর ভালো করে ময়েশ্চারাইজ করে দেন। আঙুলের ফাঁকগুলো ভালো করে মুছে শুকনো করে নিন। এরপর ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে দিন। তবে যদি হয়েই যায়, তাহলে অ্যান্টিফাঙ্গাল ট্যাবলেট খেতে হবে, মলম লাগাতে হবে।
আরেকটি ফাঙ্গাস হলো সোদ। এটি খুব প্রচলিত। যেসব জাগায় তেল বেশি থাকে, সেখানে এগুলো হয়। এ জন্য বেশি ময়েশ্চারাইজার, তৈলাক্ত জিনিসপত্র মুখে লাগাবেন না। এটি প্রতিরোধের জন্য কিছু ট্যাবলেট আছে, আর কিছু শ্যাম্পু আছে, সেগুলো দেওয়া হয়। এগুলো চুলের গোড়ায় গোড়ায় লুকিয়ে থাকে। এসব শ্যাম্পু মাথায় লাগান, এর পর সারা গায়ে লাগান। চার-পাঁচ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। তাহলে দেখা যাবে এটি প্রতিরোধ হচ্ছে। এটা নতুন করে হবে না।