ক্যানসার প্রতিরোধের ১০ উপায়

Looks like you've blocked notifications!
ক্যানসার রোধে চাই সতর্কতা। ছবি : দ্য অনকোলোজি ইনস্টিটিউট

কেবল জটিল নয়, ক্যানসার এক মারণব্যাধির নাম। ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে বেঁচে ফেরার গল্প কমই হয়। তাই সবচেয়ে ভালো হয় প্রতিকারের চিন্তা দূরে রেখে প্রতিরোধ নিয়ে ভাবলে। কেবল ধূমপান পরিহার নয়, ক্যানসার প্রতিরোধে চাই আরো বাড়তি সতর্কতা। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে ক্যানসার রোধে ১০ পরামর্শ।

প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন

প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। এর বদলে ভুসিসমেত খাবার (হাতে তৈরি রুটি, গমজাতীয় শষ্য) বা সিরিয়াল গোছের খাবার খান। দোকানের প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলো না খেয়ে যতটা পারবেন তাজা খাবার খাবেন।

সবজি, ফল

ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যানসার কন্ট্রোলের (ইউআইসিসি) একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, উদ্ভিদজাতীয় খাবার খাদ্যতালিকায় রাখলে এটি উচ্চ পরিমাণ পুষ্টির জোগান দেয় এবং ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে বেশি করে শাকসবজি, শিমজাতীয় খাবার ও ফল খেতে হবে। এসব খাবারে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল ও আঁশ।

অনেক বিশেষজ্ঞই বলেন, ক্যানসাররোধে টমেটো (লাইকোপিন) এবং সয়া (আইসোফ্ল্যাভোনয়েড) খাওয়া যেতে পারে। এগুলো ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে। 

লাল মাংস কম খান

লাল মাংস (গরু, খাসি) প্রোটিন, মিনারেল ও ভিটামিন এর ভালো উৎস। চর্বির একটি বড় উপাদান। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রচুর পরিমাণে লাল মাংস খাওয়ার সঙ্গে কোলোরেকটাল ক্যানসারের সরাসরি সংযোগ রয়েছে। কাজেই এগুলো কম খাওয়াই নিরাপদ। এই ধরনের মাংস রান্নার ক্ষেত্রে তেল কম ব্যবহার করুন।

রান্না পদ্ধতির পরিবর্তন

প্রথাগতভাবে ভারতীয়রা তেল-মসলা দিয়ে উচ্চ তাপে খাবার রান্না করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই ধরনের পদ্ধতিতে রান্না করা খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রান্নার ক্ষেত্রে জলপাইয়ের তেল, পরিশোধিত তেল ব্যবহার করতে পারেন। উচ্চ তাপে খাবার রান্না করলে একরিলামাইডস উৎপন্ন হয়, এর ফলে দেহে কারসিনোজেন দেখা দিতে পারে। কারসিনোজেন ক্যানসার হওয়ার জন্য দায়ী।

মসলা ব্যবহার করুন

গবেষণায় বলা হয়, খাবারে বিভিন্ন মসলার ব্যবহার ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করতে পারে। যেমন : রসুন, আদা, পুদিনা, ধনিয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া গবেষণায় বলা হয়, হলুদ পাকস্থলীর ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। 

মদ্যপান কম করা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত মদ্যপান ক্যানসার সৃষ্টির জন্য বহুলাংশে দায়ী। মদ্যপান লিভার, মুখ গহ্বর, খাদ্যনালি, স্বরযন্ত্রের ক্যানসারের জন্য দায়ী। ৩ দশমিক ৬ শতাংশ ব্যক্তি মদ্যপানজনিত ক্যানসারে মৃত্যুবরণ করেন।

ওজন নিয়ন্ত্রণ

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। বেশি ওজনের সঙ্গে কিডনি, অগ্ন্যাশয়, স্তন, পিত্তথলির ক্যানসারের সম্পর্ক রয়েছে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাও খুব জরুরি।

নিয়মিত ব্যায়াম

ব্যায়াম অনেক ক্ষেত্রে ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। যেমন : স্তনের টিউমার রোধ হয় ওজন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে। আর খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। তবে কেবল ওজনের সমস্যায় ভোগা লোকদের জন্যই ব্যায়াম নয়। হালকা-পাতলা শরীরের মানুষদের জন্যও ব্যায়াম জরুরি।

মানসিক চাপ

বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়, মানসিক চাপও ক্যানসার হওয়ার অন্যতম কারণ। তবে এর সঙ্গে সরাসরি ক্যানসারের সংযোগ না থাকলেও ওজনাধিক্য, হৃদরোগ এবং বিষণ্ণতা, বেশি খাওয়া, ধূমপান, মাদকাসক্তি, অতিরিক্ত মদ্যপান এগুলো জড়িত; যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।

নিয়মিত চেকআপ

চিকিৎসকরা বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্যানসার রোগের নিরাময় হয় না, কেবল প্রাথমিক অবস্থায় ধরা না পড়ার কারণে। তাই ক্যানসার রোধে নিয়মিত চেকআপ করা খুব জরুরি।