সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ কী ?

Looks like you've blocked notifications!

একটি জটিল মানসিক রোগের নাম সিজোফ্রেনিয়া। এই রোগের লক্ষণ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৮৬তম পর্বে কথা বলেছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অধ্যাপক মো. আজিজুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি আমর্ড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজে মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ বা উপসর্গ দেখে কি বোঝার কোনো উপায় রয়েছে?

উত্তর : নিশ্চয়ই বোঝার রয়েছে। সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ বা উপসর্গকে আমরা অনেকভাবে ভাগ করতে পারি। কিছু কিছু লক্ষণ রয়েছে যাকে আমরা বলি ইতিবাচক লক্ষণ। যেমন রোগীর কোনো ভ্রান্ত বিশ্বাস বা ভ্রান্ত ধারণা থাকে। হঠাৎ করে সে মনে করতে পারে, লোকজন আমাকে ফলো ( অনুসরণ ) করছে। লোকজন আমার কোনো কিছু নিয়ে আলোচনা করছে। আমাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করছে। আবার আমাকে কোনো যন্ত্র দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করছে। এ রকমভাবে ডিল্যুশন নিয়ে আসতে পারে।

আবার অনুভূতিগত কিছু বিষয় থাকতে পারে। যেমন সে কানে গায়েবি আওয়াজ শোনে। অন্য কেউ শুনছে না, তবে সে শুনছে যে কথা বলছে তার কানে। তাকে কোনো কিছুর নির্দেশ দিচ্ছে। এ রকমভাবে হ্যালুসিনেশন হতে পারে। সেটা যেকোনোভাবে হতে পারে। আবার সে দেখতেও পারে কিছু। নাকে কোনো কিছুর গন্ধ পায়। তবে অন্য কেউ এর গন্ধ পায় না। আবার ভাবে যে শরীরে কোনো কিছু হাঁটছে। আসলে কোনো কিছু হাঁটছে না। মাথায় পোকা হয়ে গেছে। এ রকম বিশ্বাসও তার থাকতে পারে এবং খুব দৃঢ় বিশ্বাস থাকে। এটা সাধারণত ভাঙা যায় না। সংজ্ঞার ক্ষেত্রে বলা যায়, এমন এক ধরনের বিশ্বাস, যেটা ভাঙা যাবে না। রোগী শক্ত করে ধরে রাখবে। শিক্ষাগত অবস্থান, পারিবারিক অবস্থান এমনকি ধর্মীয় অবস্থান থেকে এটি ব্যাখ্যা করা যাবে না। এটি হলো ডিল্যুশন। এ রকম লক্ষণ হতে পারে। সে আগ্রাসী হয়ে যেতে পারে। সে মারধর করতে পারে।

আবার উল্টোটাও হতে পারে। নেতিবাচক লক্ষণ বলি আমরা। সেটি হলো রোগীর কোনো ইচ্ছে শক্তি থাকবে না। চুপচাপ বসে থাকছে, সে সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে। সমাজের সঙ্গে মিশতে পারে না। কারো সঙ্গে কথা বলতে চায় না। দরজা বন্ধ করে থাকে। মা-বাবার সঙ্গে মিশে না। সবার সঙ্গে মিশে না। একসঙ্গে খেতে বসে না। এ ধরনের লক্ষণ নিয়েও কিন্তু আসতে পারে। তাহলে ইতিবাচক লক্ষণ, নেতিবাচক লক্ষণ- দুইভাবেই সে আসতে পারে।

প্রশ্ন : পরিবারের কোনো ব্যক্তির যদি এ রকম লক্ষণ দেখা যায় দীর্ঘদিন ধরে, তাহলে তো উচিত হবে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যাওয়া?

উত্তর : সিজোফ্রেনিয়া তো একটি জটিল রোগ। আমাদের মনে রাখতে হবে যেকোনো রোগের ক্ষেত্রে যত তাড়াতাড়ি আমরা রোগ নির্ণয় করতে পারব, যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা করতে পারব, তত ফলাফল কিন্তু ভালো।