কীভাবে কমাবেন বিষণ্ণতা

Looks like you've blocked notifications!
সবার আগে নিজেকে ভালোবাসুন এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করুন। ছবি : হাফিংটন পোস্ট

ভারতীয় জনপ্রিয় অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতায় আক্রান্ত। এ রকম একটি সংবাদ কয়েক মাস আগে বেশ বিস্মিত করেছিল আমাদের। ভারতীয় জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির সাংবাদিক বরখা দত্তের বিশেষ এক সাক্ষাৎকারে দীপিকা পাড়ুকোন জানান তাঁর বিষণ্ণতা রোগে ভোগার কথা। প্রচারিত অনুষ্ঠানটিতে দীপিকা অঝরে কাঁদছিলেন। এ দেখে দর্শকহৃদয় বেশ ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। তবে নিয়মিত মানসিক চিকিৎসকের কাছে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে এ থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি।

বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেশন একটি প্রচলিত মানসিক রোগ। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে কোনো উপযুক্ত কারণ ছাড়াই মন খারাপ এবং কষ্ট লাগার অনুভূতি হলে তাকে বিষণ্ণতা বলে। কোনো ধরনের নিপীড়নের শিকার হলে, আর্থিক, সামাজিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে বঞ্চিত হলে, মনের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব থাকলে, ঘনিষ্ঠ কারো মৃত্যু বা গুরুতর অসুস্থতা, জেনেটিক বা শারীরিক অসুস্থতা, বিচ্ছিন্নতা, একাকিত্ব বা সামাজিক সহযোগিতার অভাব, বৈবাহিক সমস্যা বা সম্পর্কগত সমস্যা- এসবের  কারণে বিষণ্ণতা হতে পারে। 

বিষণ্ণ থাকলে মনোবল বাড়িয়ে দৈনন্দিন কাজ করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। তবে যদি কেউ এ রকম সমস্যায় থাকেন তবে কিছু কাজ করতে পারেন যা কিছুটা হলেও সাহায্য করবে আপনাকে। লাইফস্টাইল ওয়েবসাইট ওয়েলনেস বিন জানিয়েছে বিষণ্ণতা দূর করার কিছু পরামর্শ।
 
•    জীবনকে একটি নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসুন। কেননা বিষণ্ণতা আপনার স্বাভাবিক কাজকর্মের নিয়মকে বদলে দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিষণ্ণতা থাকলে প্রাত্যহিক জীবন অনেকটা এলোমেলো হয়ে পড়ে। তাই এ সময় কাজগুলোকে একটা ছকে বাঁধুন এবং সঠিক সময়ে করুন। সব কাজের জন্য একটি রুটিন মেনে চলুন।

•    বিষণ্ণতায় থাকলে লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। এই সময়টায় অনেক সহজ কাজকেই অসাধ্য মনে হয়। তাই নিজেকে কিছুটা ধাক্কা দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। তাই ছোট ছোট করে কাজের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। এবং সেই অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করুন। 

•    ব্যায়াম করুন। বিষণ্ণ থাকলে সবচেয়ে কঠিক বিষয় হলো কোনো কাজ শুরু করা। নিজেকে চালানো। তবে মস্তিষ্কের রাসায়নিক ভারসাম্য রক্ষার ব্যায়াম হলো সবচেয়ে ভালো এবং গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। ব্যায়াম করলে মস্তিষ্ক থেকে ভালো অনুভূতির হরমোন নিঃসৃত হয়। তাই দিনের কিছু সময় নির্দিষ্ট করুন ব্যায়ামের জন্য।  

•    স্বাস্থ্যকর খাবার খান। এ সময়টায় অনেকে বেশি খেয়ে ফেলেন আবার অনেকে একেবারেই কম খান। ফাস্টফুড, জাংক ফুড এড়িয়ে খাদ্যতালিকায় স্বাস্থ্যকর খাবার রাখুন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার বিষণ্ণতা কমাতে সাহায্য করে।

•    পর্যাপ্ত ঘুমান। ডিপ্রেশনের কারণে ঘুমের অভ্যাস বদলে যেতে পারে। অনেক সময় ঘুমানোই খুব কঠিন হয়ে পড়ে। তবে ভালো ঘুম খুবই প্রয়োজন এই অবস্থা কাটাতে। বেশি রাত না জেগে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যান। 

•    ক্যাফেইন গ্রহণ কমিয়ে দিন। কফির রয়েছে অনেক স্বাস্থ্যগুণ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিষণ্ণতার সময় কফি পান তেমন উপকারী নয়। কফি মুড ভালো করতে সাহায্য করে। তবে কখনো কখনো খারাপও করে দেয়। বেশি কফি পান মস্তিষ্কে বিষণ্ণতা তৈরিকারী পদার্থের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়।

উপরোক্ত বিষয়গুলো বিষণ্ণতা দূর করার কিছু স্বাভাবিক টিপস। তবে বিষণ্ণতার সঙ্গে লড়াই করতে সবার আগে নিজেকে ভালোবাসুন এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করুন।