শিশু কানে কম শুনছে, কীভাবে বুঝবেন?

Looks like you've blocked notifications!

বাংলাদেশে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ মানুষ কানে শোনার সমস্যায় ভোগে। ছোটবেলা থেকে সমস্যা নির্ণয় করে সমাধান করতে পারলে অনেকটা সুস্থ থাকা যায়। 

কানের যত্নের বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩০০৫তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. কামরুল হাসান তরফদার। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদালয়ে নাক, কান, গলা বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : কানের যত্ন কীভাবে নেওয়া উচিত?

উত্তর : কান একটি গুরুত্বপূর্ণ সেন্স অরগান (ইন্দ্রিয় অঙ্গ)। কেউ যদি কানে না শোনে, তাহলে তো গুরুত্বপূর্ণ ধারণা থেকে বঞ্চিত হয়। আমরা বলি, প্রাথমিক স্বাস্থ্যের যত্নের মধ্যে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি শিশুর স্বাভাবিক কিছু বিষয় রয়েছে। 

শিশুটি কীভাবে বাড়ে? আমরা বলি, প্রথম শিশু হঠাৎ করে চুপ করে গেল, জন্মের পর কেঁপে উঠল। তার মানে কোনো শব্দ শুনল। তিন মাসের সময় মা-বাবার শব্দ শুনে চুপ করে গেল। চার মাসের সময় চোখ ঘোরাল, পাঁচ মাসে তার মাথা ঘোরাল। ছয় মাসে আধো আধো শব্দ বলা শুরু করল। ১২ মাসে যদি ১২টা কথা না বলে, তাহলে বুঝে নিতে হবে বাচ্চা কম শুনছে। এখন আমরা আরো বলি ১৮ মাসে যদি ১৮টা কথা না বলে, তাহলে ধরে নিতে হবে, বাচ্চা কানে শুনতে পারছে না। এক নম্বর যত্ন হলো এটি। বাচ্চা ঠিকমতো শুনছে কি না, সেটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। না শুনলে কথা শিখবে না। 

যারা শিক্ষিত, তারা তো বুঝবে। তবে যারা একটু কম শিক্ষিত, তারা হয়তো বলবে, বাচ্চাটা হামাগড়ি দিয়ে অনেক দূর চলে গিয়েছে, ডাকলে শুনছে না। 

আর হয়তো টেলিভিশনের কাছে চলে যাচ্ছে, সাউন্ড বাড়াচ্ছে। নাকে সর্দি পড়ে, দেখা যাচ্ছে কানে পানি পড়ছে। এর কেউ যত্ন নিচ্ছে না। কানে কম শুনছে মানে কানে পানি পড়ছে, নাকে সর্দি পড়ছে। বলতে পারেন সর্দি পড়ছে, এর মানে কী? কানের সঙ্গে নাকের একটি টিউব রয়েছে, এটি দিয়ে পানি কানে চলে গেছে। সাধারণত কানের পর্দার ভেতর বাতাস থাকে, বাতাসে বেশি শুনে। যখন পানি চলে গেল, তখন কম শুনছে। কম শোনা, না শোনা দুটো দুই জিনিস। শ্রুতিহীনতা, শ্রুতিক্ষীণতা দুটোই খারাপ। 

২০১৩ সালের দিকে আমরা একটি গবেষণা করেছিলাম ডব্লিউএইচওর সঙ্গে। বাংলাদেশের ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ লোক কোনো না কোনোভাবে কানে কম শোনে। মানে শ্রুতিক্ষীণতা। আর ১০ ভাগ লোকের কানে শুনতে অসুবিধা হয়। একে হয়তো অস্ত্রোপচার করতে হবে। না হলে যন্ত্র দিতে হবে। এ ছাড়া সে শুনছে না। আর দুই ভাগের মতো রয়েছে, যারা একদম কানে শোনে না। যে শুনছে না, সে তো নিজের জন্য অভিশাপ। তার পরিবারের জন্য অভিশাপ। জাতির জন্য অভিশাপ। তাহলে এখনই আপনাকে কানের প্রাথমিক যত্ন নিতে হবে। একদম শিশু বয়স থেকেই। প্রতিরোধ প্রতিকারের চেয়ে উত্তম।