ফিস্টুলা কোথায় করা হয়?

Looks like you've blocked notifications!

যাদের কিডনি ডায়ালাইসিস করতে হয়, তাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো ফিস্টুলা। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই সার্জারি করা হয়। তবে জটিল এই সার্জারিটি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে করা খুব জরুরি।  

এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩০৭৬তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. সাকলায়েন রাসেল। বর্তমানে তিনি ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভাসকুলার সার্জারি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। 

প্রশ্ন : কোথায় গেলে এই সুবিধা সহজে পাওয়া যাবে?

উত্তর : প্রথম কথা হচ্ছে,একজন নেফ্রলজিস্ট, যিনি রোগীকে দেখছেন, তার এটি নৈতিক দায়িত্ব যে রোগীকে তিনি কীভাবে ব্যবস্থাপনা করবেন, কোথায় পাঠাবেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, এনাআইসিডি, আর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল- এখানে ভাসকুলার সার্জন কর্মরত রয়েছেন, তারা এই ধরনের অস্ত্রোপচার সফলভাবে করছেন। 

আমরা দেখেছি অনেক হাসপাতালে একটি/দুটি অস্ত্রোপচার করার পর বলে, ‘আপনার তো আর অস্ত্রোপচার করার জায়গা নেই, ভেইনগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এখন পারমানেন্ট ক্যাথেডার করতে হবে কিংবা সিএপিডি করতে হবে।’ 

আমরা ভাসকুলার সার্জন, হাতের মধ্যে ১২টা অস্ত্রোপচার করতে পারি। যেখানে সারা বাংলাদেশের সার্জনরা দুই থেকে তিনটার বেশি এক হাতে করেন না। তার মানে হলো যখনই দুই থেকে তিনটি অস্ত্রোপচারের পর বলা হচ্ছে, আপনার হাতে আর শিরা নেই, আপনি কিন্তু সেই রোগীটির ক্ষতি করছেন। 

এখানে রেফারাল সিস্টেমটা খুবই বেশি জরুরি। কারণ এটিই তো রোগীটির বেঁচে থাকার পথ। এই পথ যদি তৈরি করার জন্য ইঞ্জিনিয়ার ভালো না হয়, রাস্তাটা ভালো হবে না, রাস্তা যদি ভালো না হয়, ওই পথে কিন্তু গাড়ি চলাচল করবে না। শেষ পর্যন্ত এই রোগীর অনেক ক্ষতি হবে। তার নানা ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। কারণ, এই একটি অস্ত্রোপচারের ঝুঁকির মধ্যে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো যদি এটি ভালোভাবে করা না হয়, এটা ফেঁটে যেতে পারে। এটা ফেঁটে গিয়ে রক্তপাত হয়ে রোগী মারা যেতে পারে। চিকিৎসা করতে যাওয়ার সময় আরো নতুন জটিলতা তৈরি হচ্ছে। হাসপাতালে পর্যন্ত যেতে পারে না। 

আপনি জানেন, যেই লোকটি কিডনি রোগে আক্রান্ত, সে কিন্তু নিজে অসুস্থ নয়, তার পুরো পরিবারটা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এই অসুস্থতা মানসিক অসুস্থতা। ‘আমার মা-বাবা সুস্থ হবে না। আমি কতদিন আমার মাকে বাঁচিয়ে রাখতে পারব, প্রতি সপ্তাহে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এই টাকা কোথা থেকে আসবে।’ খুব দুঃখজনক হলেও আমার কাছে মনে হয়,একজন কিডনি রোগী যার ডায়ালাইসিস চলছে, তাঁর কারণে আসলে তাঁর পুরো পরিবারটা আর্থিকভাবে ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খুব ব্যয়বহুল একটি চিকিৎসা।

এ রোগের চিকিৎসাও যদি সঠিকভাবে না করা হয় আরো বেশি তার ওপর চাপ পড়ে। তাই একটি মানবিক কারণে আমার মনে হয় যারা তাকে দেখছে, এই রোগীর সেবা দিচ্ছে, তার উচিত একজন ভাসকুলার সার্জনের কাছে পৌঁছানো। যদি ভাসকুলার সার্জন না পাওয়া যায়, এই বিষয়ে অভিজ্ঞ যারা রয়েছে, তাদের কাছে পাঠাবে।