হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’-এর চিকিৎসা কী?
হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস লিভারকে আক্রান্ত করে। এদের লক্ষণ হিসেবে জন্ডিস, বমি বমি ভাব, পেট ব্যথা ইত্যাদি প্রকাশ পায়।
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩০৮৭তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. এ কে এম শামসুল কবীর। বর্তমানে তিনি হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মেডিসিন ও লিভার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : এই ধরনের সমস্যায় লোক আক্রান্ত হয়ে গেলে, কী করতে হবে?
উত্তর : সি ভাইরাসের কথা বলি। সি ভাইরাস হলো নীরব ঘাতক। ঢোকার কমপক্ষে পাঁচ বছর পর দেখা গেছে, মানুষের লিভার সিরোসিস হয়ে গেছে। তাই সি ভাইরাসের কখনো কখনো লক্ষণ থাকে না। লক্ষণ প্রকাশ পায় তখনই যখন কিছু করার থাকে না। লিভার সিরোসিস, দীর্ঘমেয়াদি লিভারের রোগ বা লিভার ক্যানসার হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে কী হবে, হাত-পা ফুলে যাবে, জন্ডিস হবে, রক্তবমি হবে, রক্ত পায়খানা হবে। মানুষ অজ্ঞান হয়ে যাবে। ভুল বকবে। আর লিভার ক্যানসার হলে তো কথাই নেই। বি ভাইরাসের ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব জ্বর আসা, পেট ব্যথা করা এগুলো হয়। দুটো ভাইরাসের ক্ষেত্রেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। সমস্যা হলো, কোনো মানুষ রক্ত পরীক্ষা করতে যাচ্ছেন, রক্ত পরীক্ষা করা হলো, বি ভাইরাস বা সি ভাইরাস থাকলে পরে খারাপ কিছু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কি না, দেখতে হবে। অনেক সময় মানুষ বিভ্রান্তির কারণে আবেগ প্রবণ হয়ে, অনেকে বিভ্রান্তপূর্ণ চিকিৎসা করেন। এর হারবাল চিকিৎসা রয়েছে। যার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। অনেক শিক্ষিত লোকও কিন্তু আমরা অপচিকিৎসকের কাছে চলে যাচ্ছি। চিকিৎসা নিচ্ছি, ভাবছি যে বোধ হয় ভালো হয়ে গেল, পরে দেখা গেল যখন জটিলতা হচ্ছে, তখন তারা আমাদের কাছে আসছে। এই জন্য আমাদের রোগটা সঠিকভাবে নির্ণয় করে চিকিৎসা দিতে হবে।
প্রশ্ন : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কীভাবে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন?
উত্তর : দেখার চেষ্টা করি, যে ভাইরাসটা সক্রিয় না কি নিষ্ক্রিয়। যদি ভাইরাসটা নিষ্ক্রিয় থাকে, তাহলে নিয়মিত ফলোআপ করতে হয়। ভাইরাসটা অনেক সময় নিষ্ক্রিয় থাকতে থাকতে সক্রিয় হয়ে যায়। আজকে আপনার দেহে হয়তো নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। আজ থেকে তিন বছর পর হয়তো শারীরিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সক্রিয় হয়ে গেল। এই জন্য চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। আর যদি ভাইরাস সক্রিয় থাকে, তখন আমরা দেখার চেষ্টা করি ইতিমধ্যেই তার লিভার সিরোসিস হয়ে গেছে কি না। যদি হয়ে থাকে তাহলে ভাইরাসকে নির্মূল করার চিকিৎসা, এর জন্য অনেক ওষুধ যেটা আমাদের দেশে অনেক সফলতার সঙ্গে তৈরি হচ্ছে। চায়না, তাইওয়ান বিভিন্ন দেশ আমাদের ওষুধ ব্যাপকমূল্যে কিনে নিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে, ইউরোপে যে ওষুধগুলো পাওয়া যায় সব আমাদের দেশে রয়েছে। তাই কোনোভাবে বিভ্রান্ত হয়ে অন্য দেশে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
চিকিৎসা আমরা এভাবেই করি। আমরা দেখার চেষ্টা করি, ভাইরাসটা সক্রিয় না কি নিষ্ক্রিয়। কোন পর্যায়ে রয়েছে লিভারের রোগ। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে থাকি।