ডায়াবেটিসের রোগীরা রোজা রাখতে যা করবেন

Looks like you've blocked notifications!
চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডায়াবেটিস রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন। ছবি : সংগৃহীত

অনেক ডায়েবেটিস রোগী রোজা রাখা নিয়ে নানা রকম দ্বিধায় পড়েন।  তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, বেশির ভাগ  ডায়েবেটিসের রোগী ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে রোজা রাখতে পারবে। রোজার দিনগুলোতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রস্তুতি নিলে সহজ ও নিরাপদ উপায়ে রোজা পালন করা যায়।

রোজা রাখলে দেহে কী ঘটে?

সেহরি খাওয়ার পর থেকে খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরে অনশন অবস্থার (ফাস্টিং ) শুরু হয়। খাবার গ্রহণের দুই ঘণ্টা পর থেকে ওই খাবার শরীরে বিপাকীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি সরবরাহ করতে থাকে। আট ঘণ্টা পর ওই খাবারের সরাসরি প্রভাব শরীরে আর থাকে না। সেহরির খাবারের গ্লুকোজ আট ঘণ্টা পর শেষ হলে,মাথাব্যথা,ক্লান্তিভাব,মনোযোগের অভাব দেখা দেয়। এর নিয়ন্ত্রণ করতে শরীরে সঞ্চিত চর্বি ভেঙে শক্তি সরবরাহ শুরু হয়। এ কারণেই রোজায় শরীরের ওজন খানিকটা কমে। তবে শরীরের প্রোটিন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। শরীরের বাড়তি এই চর্বি কমে যাওয়ার কারণে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে,উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।

ডায়াবেটিসের রোগীরা যেভাবে রোজা রাখবে

  • ডায়াবেটিসের রোগীদের রোজাতে রক্তের গ্লোকোজ মাত্রা কমে যেতে পারে বা বেড়ে যেতে পারে, যা তাদের জন্য বিপজ্জনক। তাই রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা (খাবার আগে ও পরে),রক্তের লিপিড/চর্বি,লিভার ও কিডনি,হার্টের কার্যকারিতা ই্ত্যাদি কেমন আছে,সেগুলোর পরীক্ষা করতে হবে। রোগীর রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রোজা রাখা যাবে।
  • রোগীর  হাইপোগ্লাইসিমিয়া অথবা হাইপারগ্লাইসিমিয়ার ঝুঁকি হতে পারে কি না সেটি বুঝতে হবে, রোগী ও রোগীর সঙ্গে বসবাসকারীকে।
  • রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে বা বেড়ে যাওয়ার লক্ষণগুলো জানতে হবে এবং তার সমাধান শিখতে হবে। এই ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • রমজান শুরু হওয়ার আগে খাদ্য ও তরল খাবার সম্পর্কে ডাক্তারের কাছ থেকে খাদ্যতালিকা করে নিন।
  • মুখে গ্রহণের ওষুধের ধরন ও মাত্রা পরিবর্তন করতে হবে কি না জেনে নিন।
  • ইফতারের সময় বেশি ভাজা-পোড়া, তৈলাক্ত ও লবণযুক্ত খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো ।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডায়াবেটিস রোগীদের সহজে পরিপাক হয়, হজম হয়, বিপাক হয়ে শরীরের জন্য তাৎক্ষণিক শক্তি দেয়,শরীরের পানিশূন্যতা পূরণ করে, ক্লান্তিভাব দূর করে এমন খাবার দিয়ে ইফতার ও সেহরি করতে হবে।

লেখক :  সভাপতি বিশুদ্ধ খাদ্য চাই এবং সহকারী অধ্যাপক, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, সাভার, ঢাকা।