ব্রণের কারণ কী?
ব্রণ খুব প্রচলিত একটি সমস্যা। ব্রণ কেন হয়, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩১০৪তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. আহম্মদ আলী। তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানে উচ্চতর ডিডিভি ডিগ্রি লাভ করেন।
প্রশ্ন : ব্রণকে আপনারা কীভাবে ব্যাখ্যা করেন?
উত্তর : এটি তো সবাই দেখে, বোঝে। খোলা অংশে হয় বেশি। নামটা বলতে হয় না, খোলা অংশে হয় বেশি। রোগী এসেই আমাদের বলে যে ব্রণ হয়েছে। আমার কাছে এটি বলার যে এটি যতটা না শারীরিক সমস্যা, তার চেয়ে বেশি হলো মানসিক সমস্যা। এটি মুখে হয়। সবাই কম বেশি মুখ নিয়ে সচেতন থাকে। সবার একটি দানা ওঠলেও একটি বিড়ম্বনা বা মানসিক যন্ত্রণা হয়। আর ব্রণ তো সবসময় একটি দুটো হয় না। অনেক সময় অনেক হয়। শত শত হয়। সৌন্দর্যের একটি বিষয় রয়েছে। তাই সবাই একটু বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাই মানসিক সমস্যায় ভোগেন।
এটি চিকিৎসা না করলে যে মারা যাবে তা তো নয়। এটি কোনো শারীরিক ক্ষতি করবে তা নয়। এই জন্য আমি বলছি, এটি শারীরিকের তুলনায় মানসিক সমস্যা বেশি করে।
প্রশ্ন : ব্রণ কেন হয়?
উত্তর : এটি হওয়ার পেছনে আসলে বৈজ্ঞানিক বিষয় রয়েছে কিছু। হরমোনের কিছু বিষয় রয়েছে। এটি বয়ঃসন্ধি থেকে শুরু করে কারো কারো বেলায় ৪০ থেকে ৪৫ পর্যন্ত গড়াতে পারে। ছেলে- মেয়ে সবারই হতে পারে। তবে তুলনামূলকভাবে ছেলেদের একটু কম হয়। তবে ছেলেদের হলে তীব্রতা একটু বেশি থাকে। আর মেয়েদের বেলায় যদি বলি, বোঝানোর জন্য বলা যায় যে ঋতুস্রাবের শুরু থেকে ঋতুস্রাবের শেষ, মোটামুটি এই সময়ের মাঝে হতে পারে। মানে এই দিকে আট থেকে নয় বছরে শুরু হয়ে ওদিকে ৪৫ পর্যন্ত হতে পারে। তবে বেশিরভাগই বয়ঃসন্ধিকালে বেশি হয়। বিশের আশপাশের বয়সেই বেশি হয়। এটি মোটামুটি শরীরের ওপরের অংশে, বুকে, পিঠে, মুখে, হাতের ওপরে, এসব জায়গায় বেশি হয়ে থাকে। কারো শুধু মুখেও থাকতে পারে, কারো শুধু পিঠেও থাকতে পারে। কারো হাতেও থাকতে পারে, কারো বুকেও থাকতে পারে। কারো সব জায়গায়ই থাকে। এর সঙ্গে খুশকিও অনেকের থাকে। এই দুটো একই সঙ্গে, একই বয়সের বিষয়। একেক বয়স পর্যন্ত চলে আপনা আপনি বন্ধ হয়ে যায়। সেটি একটানাও চলতে পারে। আবার ধীরে ধীরে বিরতি দিয়েও চলতে পারে। মোটামুটি আট থেকে নয় বয়স থেকে শুরু করে ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত চলতে পারে। অথবা কিছুদিন চলল, আবার বন্ধ হলো, আবার চলল, এভাবে হতে পারে।
প্রশ্ন : অনেক সময় অনেক বড় বড় হয়ে ঘা এর মতো হয়ে যায়। এর কারণ কী?
উত্তর : আসলে এর অনেক ধরন, প্রকৃতি রয়েছে। অনেকের একেবারেই গুঁড়ি গুঁড়ি থাকে। অনেকের একটু বড়। অনেকের কাঁচা কাঁচা, লাল, লাল বড় বড় গোটা থাকে। অনেকের অনেক বড় বড় চাকা চাকা থাকে। পুঁজ ভরা পাকা পাকা থাকে। বিভিন্ন ধরনের থাকে। বিভিন্ন ধরনের রয়েছে। সংখ্যার দিক দিয়েও অনেকের দুই থেকে চারটি থাকে। অনেকের শত শত থাকে। অনেকের একেবারে ভরা থাকে। এটির তারতম্য হয়। মানুষ মানুষে আলাদা ব্যাপার। একেক জনের শরীরে একেক রকম হয়।
এখানে একটি বিষয় বলে রাখি, সেটি হলো ত্বকের তৈলাক্ততা। আমাদের ত্বক নরম ও সুস্থ রাখতে, আমাদের শরীরে কিছু তেল বের হয়। সিবাম বলি আমরা। এটি ত্বককে মসৃণ রাখে, নরম রাখে। এর দরকার রয়েছে। তবে এই বয়সে হরমোনের প্রভাবে এটি বেড়ে যায়। যাদের অতিরিক্ত বেড়ে যায়, তাদেরই সাধারণত এটি হয়। এই জন্য যাদের তৈলাক্ত ত্বক তাদেরই এটি বেশি হয়ে থাকে। এসে রোগী বলে আমার মুখ খুব তৈলাক্ত।
সবার হয় না কেন? সবার হয় না এই কারণে যে সবার ত্বক তৈলাক্ত নয়। কোনোটিই কিন্তু খারাপ নয়। তৈলাক্ত ত্বকের কিছু ভালো দিক রয়েছে, মন্দ দিক রয়েছে। আবার শুকনো ত্বকেরও কিছু ভালো দিক রয়েছে, মন্দ দিক রয়েছে। এটা কোনো খারাপ ভালোর বিষয় নয়। তবে তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে এবং হয়ে থাকে।