বন্ধ্যাত্বের কারণ কী?
বন্ধ্যাত্বের সমস্যা অনেক দম্পতির মধ্যে হয়। বন্ধ্যাত্বের বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩১১৭তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. রেহনুমা জাহান। বর্তমানে তিনি স্কয়ার হসপিটাল লিমিটেডের গাইনি অ্যান্ড অবস ও ইনফার্টিলিটি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : আমাদের দেশে ধীরে ধীরে বন্ধ্যাত্বে আক্রান্ত দম্পতির পরিমাণ অনেক বাড়ছে। বন্ধ্যাত্ব বলতে আসলে কী বোঝানো হয়?
উত্তর : বন্ধ্যাত্ব বলতে আমরা বুঝি, একটি দম্পতি এক বছর ধরে কনট্রাসেপটিভ দিয়ে চেষ্টা করার পরও, যদি গর্ভধারণ না করে, কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া কোনো গর্ভাবস্থা না হয়, সেই দম্পতির মধ্যে স্ত্রীর বয়স যদি ৩০ বছরের নিচে হয়, এক বছর চেষ্টা করতে হবে তাদের, আর যদি ৩০ বছরের ওপরে হয়, তাহলে ছয় মাস চেষ্টা করার পরও গর্ভাবস্থা না হলে, তখন আমরা বন্ধ্যাত্ব বা ইনফারর্টিলিটি বলি।
প্রশ্ন : বন্ধ্যাত্বের পেছনে কোনো কারণ কাজ করে কী?
উত্তর : বন্ধ্যাত্বের কারণ বলতে গেলে নারী-পুরুষ আলাদা করে ভাগ করে নিতে হয়। দেখা যায়, কারা কতটুকু দায়ী বন্ধ্যাত্বের জন্য। আমরা জানি যে ৩০ ভাগ ক্ষেত্রে সেই নারীর কোনো সমস্যা থাকতে পারে। ৩০ ভাগ ক্ষেত্রে পুরুষের সমস্যা থাকতে পারে। আর ১০ ভাগ হলো কারো কোনো সমস্যা নেই, এরপরও বন্ধ্যাত্ব। কারণগুলো আমরা যখন দেখতে যাই, আমরা দেখি যে শুক্রাণুর স্বল্পতা বা শুক্রাণুর সমস্যাগুলো কখন হয়,কিছু জীবন যাত্রার জন্য হয়, যদি সেই পুরুষ কোনো গরম পরিবেশের মধ্যে কাজ করে, তাহলে শুক্রাণু নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যদি কোনো শারীরিক সমস্যা হয়, হাইড্রোস্ফিল, ভেরিকোস্ফিল এই জাতীয় কিছু সমস্যা রয়েছে, সেগুলো হলে হতে পারে। ম্যালিগনেন্সি হলে হতে পারে। এরপর ম্যালিগনেন্সির জন্য ক্যামোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি নেয় সেগুলোর জন্য হতে পারে। আর এ ছাড়া ধূমপান বা কোনো মাদকে আসক্তি, অথবা অ্যালকোহোলে আসক্তি, সেগুলোর কারণেও শুক্রাণুর স্বল্পতা বা শুক্রাণু একেবারেই নেই এ রকম হতে পারে। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে আমরা প্রথমেই বলতে পারি, ওভুলেশন না হওয়া। মানে একজন মেয়ের প্রতি মাসে একটি করে ডিম বের হবে, যেকোনো একটি ডিম্বাশয় থেকে, যদি কোনো কারণে ডিম বের হতে না পারছে, সেই কারণগুলোর মধ্যে খুব প্রচলিত হলো পলিসিস্টিক ওভারি। এরপর কোনো হরমোনের সমস্যা হতে পারে। অথবা তারও প্রাইমারি বা প্রিমেচিউর ওভারিয়ান ফেইলিউর হতে পারে। সেটা অজানা কারণে হতে পারে। কোনো জিনগত সমস্যার কারণে হতে পারে। ম্যালিগনেন্সি, ক্যামোথেরাপি বা রেডিওথেরাপির কারণে হতে পারে। এরপর আমরা জানি যে টিউবের ব্লক একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। টিউব নেই। অনেক সময় দেখা যায় একটোপিক গর্ভাবস্থার কারণে টিউব কেটে বাদ দিয়ে দিতে হয়। এরপর হলো পিআইডি, পেলভিক ইনফ্লামেটোরি রোগের কারণে টিউব ব্লক হয়ে যেতে পারে। অথবা দেখা যায় যে অ্যান্ডোমেট্রোসিসের জন্য হতে পারে। ইউট্রাসের নিজস্ব কোনো সমস্যার কারণে হতে পারে। হরমোনের অসুবিধার কারণে হতে পারে বা জিনগত কোনো অসুবিধার কারণে হতে পারে। অসংখ্য কারণ এখানে কাজ করে।