জন্ডিস হলে কী করবেন?
জন্ডিস কোনো রোগ নয়, রোগের উপসর্গ মাত্র। লিভার বা যকৃতের কোষগুলো কোনো ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ড্রাগ বা অ্যালকোহলের অত্যাচারে নষ্ট হতে থাকলে রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে জন্ডিস দেখা দেয়। বিলিরুবিনের রং হলুদ করে দেয়।
- জন্ডিস হলে হঠাৎ করে বমি বমি ভাব, সেইসঙ্গে ক্ষুধামান্দ্য ও দুর্বলতা দেখা দেবে। ধূমপায়ীদের কাছে সিগারেট বিস্বাদ লাগবে। চোখ, ত্বক ও প্রস্রাব যথেষ্ট পানি খাওয়ার পরও হলুদ বর্ণের হবে। গা চুলকাতে পারে। এ ছাড়া ডান দিকের পাঁজরের নিচে ব্যথাও করতে পারে।
- জন্ডিস রয়েছে বলে সন্দেহ হলে ভালো কোনো প্যাথলজিল্যাব থেকে সিরাম বিলিরুবিন, এসজিপিটি, সিরাম অ্যালকাইন ফসফাটেজ ও এইচবিএসএজি পরীক্ষাগুলো করিয়ে নিন। এতে জন্ডিসের অবস্থা এবং তা কতটুকু গুরুতর ও কোন ধরনের, তা জানা যাবে।
- এ সময় ঘরে বসে পূর্ণ বিশ্রাম এবং স্বাভাবিক খাবার গ্রহণ করুন। লিভার বিশেষজ্ঞরা বারবার গ্লুকোজের শরবত, আখের রস, ডাবের পানি ইত্যাদি ঘন ঘন খেতে বারণ করেন। এতে পেট ফেঁপে যেতে পারে। কাজেই স্বাভাবিক খাবারই খাবেন। শুধু চর্বিজাতীয় খাবার পরিহার করবেন।
- জন্ডিস হলে এবং জন্ডিস থেকে রক্ষা পেতে বিশুদ্ধ পানি পান করবেন।
- হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সে ক্ষেত্রে বিশেষ যত্নের দরকার রয়েছে। এ ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা খারাপ হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস খুবই মারাত্মক। এ থেকে মৃত্যু হতে পারে। হেপাটাইটিস-বি ও সি নামের ভাইরাস রক্ত পরিসঞ্চালন, যৌনকার্য, আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত টুথব্রাশ, শেভের সরঞ্জাম, মুখের লালা (চুমু) ও মায়ের বুকের দুধ থেকে ছড়ায়। কাজেই হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে উপরোক্ত বিষয়গুলো সতর্কভাবে এড়িয়ে চলতে হবে।
- প্রতিদিন নিয়মিত সাবান দিয়ে গোসল করবেন।
- আপনার ব্যবহৃত তোয়ালে, প্লেট, গ্লাস, বিছানা পৃথক করে নিন। এ ব্যবস্থা অন্যকে রক্ষা করার জন্য।
- জন্ডিসের সময় কোনো ওষুধ, এমনকি প্যারাসিটামলও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়াবেন না। এ সময়ে কোনো ওষুধ না খাওয়াই ভালো।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ।