ফ্যাটি লিভার ডিজিস কী?

Looks like you've blocked notifications!

ফ্যাটি লিভার ডিজিস একটি জটিল রোগ। ফ্যাটি লিভার ডিজিসের বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩১২১তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. ফাওয়াজ হোসেইন শুভ। বর্তমানে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোলজি বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : ফ্যাটি লিভার ডিজিস কী?

উত্তর : এটি একটি অবহেলিত রোগ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। আজ থেকে তিন-চার বছর আগে আলট্রাসনোগ্রামে সব সময় ফ্যাটি লিভার আসত, আমরা একে কোনো গুরুত্ব দিতাম না। তবে বর্তমানে ফ্যাটি লিভার অত্যন্ত জটিল আকার ধারণ করছে। লিভার ৫ শতাংশ পর্যন্ত চর্বি দাহ্য করতে পারে। তবে লিভারে যদি ৫ শতাংশের বেশি চর্বি জমে থাকে, এটা ধীরে ধীরে ফ্যাটি লিভারে রূপান্তর হয়। এই লিভারে চর্বি জমে যখন লিভারের কার্যক্ষমতা কিছুটা নষ্ট করে দেয়, তখন লিভার এনজাইমগুলো বেশি হয়ে যায়। তখন একে বলি আমরা স্ট্যাটু হেপাটাইটিস। এই স্ট্যাটু হেপাটাইটিস দুই রকমের রয়েছে। অ্যালকোহলিক হতে পারে, নন-অ্যালকোহলিক হতে পারে। পশ্চিমা বিশ্বের ক্ষেত্রে অ্যালকোহলিক হেপাটাইটিস খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমাদের দেশে নন-অ্যালকোহলিক। আমাদের দেশে ফ্যাটি লিভারকে আমরা দুই ভাগে ভাগ করি। একটি হলো নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিস, আরেকটি হলো ন্যাশ। অর্থাৎ নন-অ্যালকোহলিক স্ট্যাটু হেপাটাইটিস।

প্রশ্ন : কিসের ভিত্তিতে সেটি?

উত্তর : দেখুন, একজন রোগী যদি আসেন, দেখা যায় যে ফ্যাটি লিভার। আগে কিন্তু এত ফ্যাটি লিভারের রোগী আসত না আমাদের কাছে। তবে এখন চিকিৎসকরা বলেন যোগাযোগ করতে। কারণ আমরা দেখেছি, ফ্যাটি লিভার পরে একটির পর একটি খারাপ আকার ধারণ করছে। ফ্যাটি লিভারের রোগী আসার পর আমরা কিছু পরীক্ষা করি। নিউরোফাংশন পরীক্ষা করি একপর গামা ডিটি করে দেখি। তখন একটি ফাইব্রোস্ক্যান করে দেখি। ফাইব্রোস্ক্যান স্কোরিং দেখে বুঝি, তার লিভারের স্টিফনেসটা কী রকম রয়েছে। টোটাল কোলেস্টেরলের মাত্রা করে দেখি। ডায়াবেটিস, থাইরয়েডের কোনো সমস্যা রয়েছে কি না, সেগুলো দেখি। ফ্যাটি লিভারে যদি আন্ডারলাইন রোগ থেকে থাকে, প্রথমে আমরা তার চিকিৎসা দিয়ে থাকি। যেমন ডায়াবেটিসের বা থাইরয়েডের ব্যবস্থাপনা দিয়ে থাকি। এরপর যদি রোগীর কোলেস্টেরল বেশি থাকে, এর ব্যবস্থাপনা আমরা দিয়ে থাকি। এখন পর্যন্ত যেটা স্বীকৃত, লাইফ স্টাইল মোডিফিকেশন হলো গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড ম্যানেজমেন্ট।

এই জীবনযাপনের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে, ধরুন, আমাদের দৈনিক এক থেকে দুই ঘণ্টা হাঁটতে হবে। গরুর মাংস, খাসির মাংস, ডিমের কুসুম এগুলো খাওয়া বন্ধ করতে হবে। রাতে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার এড়িয়ে যেতে হবে।

প্রশ্ন : ফ্যাটি লিভারের কোনো লক্ষণ রয়েছে কী?

উত্তর : স্থূল ব্যক্তি, একটু মোটা, তারাই ফ্যাটি লিভার নিয়ে আসতে পারে। কিছু কিছু রোগীর লিভার এনজাইমগুলো বেশি। সরাসরি এটি কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ নিয়ে আসে না। যখন দেখি তার লিভার ফাংশন পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে, তখনই আমরা দেখি তার ফ্যাটি লিভার রয়েছে কি না। ফ্যাটি লিভারের যদি চিকিৎসা আমরা বন্ধ করি, এটি আস্তে আস্তে খুব মারাত্মক আকার ধারণ করবে। এটা সিরোসিস হতে পারে এবং এখান থেকে লিভার ক্যানসার হতে পারে।