ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ কী?
ডেঙ্গু জ্বরের অন্যতম লক্ষণ হলো অত্যধিক তাপমাত্রা। কখনো কখনো শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠে যেতে পারে। এ ছাড়া আরো কিছু লক্ষণ রয়েছে ডেঙ্গু জ্বরের।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণের বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩১৩২তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. কামাল সৈয়দ আহমেদ চৌধুরী। বর্তমানে তিনি বিআরবি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : সাধারণ জ্বর থেকে ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ কী আলাদা?
উত্তর : ডেঙ্গু জ্বরের প্রাথমিক ও মূল লক্ষণ জ্বরই। এই জ্বরের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটা যেহেতু একটি ভাইরাস জ্বর, এই জ্বরের প্রথম থেকেই অত্যধিক মাত্রার জ্বর ওঠে যায়। দেখা যায়, প্রথম দিন থেকে ১০২/১০৩/১০৪ বা ১০৫ ডিগ্রি পর্যন্ত জ্বর উঠে যেতে পারে। আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো অন্যান্য জ্বর প্রথম থেকেই একটু ওঠানামা করে। যেমন ধরুন, টাইফয়েড জ্বর বা নিউমোনিয়ার জ্বর। দেখা যায়, জ্বর একটু উঠল বা সন্ধ্যার দিকে জ্বর একটু নেমে এলো। তবে ডেঙ্গু জ্বরের বৈশিষ্ট্য হলো শুরু থেকে অত্যন্ত উচ্চ মাত্রায় চলে যায় এবং কখনো ওষুধ না খেলে বা প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ না খেলে জ্বরটা নামবে না। এই জ্বরের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এটি স্বল্পমেয়াদি হয়। স্বল্পমেয়াদি জ্বরের বাংলাদেশে প্রধান কারণ ডেঙ্গু জ্বর। স্বল্পমেয়াদি বলতে চার থেকে পাঁচ দিন বা এক সপ্তাহ। ওই জ্বর যদি এ সময়ের বাইরে চলে যায়, তাহলে আপনি ধরে নেবেন এটি ডেঙ্গু জ্বর নয়। তাহলে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন যে অন্য কোনো কারণে আপনার এই জ্বরটা হলো কি না।
তাহলে কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য দেখলেন, অত্যধিক মাত্রায় জ্বর আসে, জ্বর সহজে নামে না, আর স্বল্পমেয়াদি জ্বর হয়। আর জ্বরের সঙ্গে আরো কিছু উপসর্গ খুব প্রচলিত, সাধারণ থাকে। যেমন, আপনার সারা শরীরে ব্যথা, মাথাব্যথা, ম্যাজম্যাজ করা, এর পর ডেঙ্গু জ্বরে বমির ভাব থাকে, এমনকি বমিও হতে পারে। অনেক সময় খাবারে অরুচি থাকে। অনেকের আবার জ্বরের সঙ্গে শরীরে লাল দাগ পড়তে পারে। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় র্যাশ বলে। সেই র্যাশের সঙ্গে রোগীর শরীরে চুলকানিও চলে আসতে পারে।
প্রশ্ন : এই র্যাশ কি সব সময়ই থাকে?
উত্তর : সাধারণত থাকে। তবে কথা হলো র্যাশ কি ডেঙ্গু জ্বরের সঙ্গেই আসবে, নাকি পরে আসবে। সাধারণত র্যাশটা ডেঙ্গু জ্বরের পরে আসে। মানে যেদিন থেকে জ্বর শেষ, সেদিন থেকেই দেখা যায় র্যাশটা চলে আসছে।
এই র্যাশ দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অনেকে। র্যাশ অন্য অনেক জ্বরে আসতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরের র্যাশগুলোর একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, প্রথম কথা হলো এটি অত্যন্ত ছোট আকারের হয়। আকারটা আপনি সহজেই বুঝবেন, আমাদের ঘাম বিচি নিশ্চয়ই আপনি চেনেন, এর আকারের হয়। অত্যন্ত ছোট ছোট হয়। অতএব, বড় বড় র্যাশ আসলে কখনই মনে করবেন না এটি ডেঙ্গু জ্বরের র্যাশ। অত্যন্ত ছোট ছোট আকারের র্যাশ হয়। র্যাশগুলো সারা শরীরে আসতে পারে। পেটে, বুকে, হাত পায়ের সব জায়গায়। এমনকি মুখেও আসতে পারে। অত্যন্ত ছোট ছোট আকারে র্যাশ হয়। আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো যে র্যাশগুলো সাধারণত চুলকায়। ভেতর থেকে অস্বস্তিবোধ হয়।