ইউটিআইয়ের লক্ষণ কী?

ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা ইউটিআই বা মূত্রনালীর সংক্রমণ একটি জটিল সমস্যা। ইউটিআইয়ের লক্ষণের বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩১৪০তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ। বর্তমানে তিনি বিআরবি হাসপাতালের কিডনি রোগ বিভাগে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : কারো যদি ইউরিনারি ট্র্যাক্ট সংক্রমণ হয়, তিনি কী অনুভব করবেন, কী সমস্যা হতে পারে?
উত্তর : এটা নির্ভর করে সংক্রমণটা কোন জায়গায় হয়েছে, এর ওপর। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রস্রাবের নালী ও মূত্রথলী, সব জায়গাতেই বেশি হয়ে থাকে। কখনো তলপেটে বা এই দুই জায়গায় যদি ইনফেকশন হয়, তাহলে দেখা যাবে খুব ঘন ঘন প্রস্রাব হবে। প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া হবে। অনেক সময় দেখা যায় প্রস্রাব করার পর মনে হবে কিছু রয়ে গেল, এসেই মনে হবে যে আবার বাথরুমে যাই। তলপেটে ব্যথা হতে পারে। ভারী ভারী অনুভব হতে পারে। কোনো উপসর্গ ছাড়াও এই সংক্রমণ হতে পারে। আবার এই ইনফেকশন আরো ওপরে এসে যখন কিডনি পর্যন্ত পৌঁছে যায়, তখন একে পাইলোনেফ্রাইটিস বলে। তখন কিন্তু আমাদের নাভীর উল্টো দিকে, যেখানে কিডনি থাকে, মেরুদণ্ডের দুই পাশে ব্যথা হতে পারে, সঙ্গে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর হতে পারে। বাচ্চাদের সংক্রমণ হলে, অনেক সময় কিন্তু তাদের লক্ষণ বোঝা যায় না। দেখা যায়, বাচ্চারা খাচ্ছে না, তাদের ওজন কমে যাচ্ছে। প্রস্রাব করার সময় গন্ধ থাকে প্রস্রাবে।
অনেক সময় এই ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনের জন্য ডায়রিয়া হয়ে যায় বাচ্চাদের। তেমন ডায়রিয়ার যদি কোনো জীবাণু না পাওয়া যায়, অথবা জ্বরের কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, অথবা যদি দেখা যায় তাদের ওজন কমে যাচ্ছে, কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তাহলে প্রস্রাবটা অন্তত একবার পরীক্ষা করিয়ে, রুটিন টেস্ট ও কালচার করে দেখতে হবে যে তার কোনো সংক্রমণ রয়েছে কি না।
আবার অন্য দিকে যারা বয়স্ক, এদের দেখি অনেকের যাদের সেন্স কমে যাচ্ছে, ঘুম ঘুম ভাব চলে আসছে। ঠিক এ রকম যদি মনে হয়, অজ্ঞান অজ্ঞান অবস্থা হয়ে যাচ্ছে, কারণ জানা যাচ্ছে না, এদের দেখা যায় অনেকেরই ইউরিনারি ইনফেকশনের কারণে হচ্ছে।
আরেকটি পয়েন্ট যোগ করি, যারা গর্ভবতী মা-বোন থাকেন, তাদের কিন্তু অনেক সময় লক্ষণ থাকে না। আমরা কালাচার করলে যদি দেখি টেন টু দা পাওয়ার ফাইভ জীবাণু থাকে, তাহলে এটি রয়েছে। গর্ভাবস্থায় যদি আমরা সামান্য জীবাণুও পাই, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টা তাকে সুস্থ রাখার জন্য, তাহলে তার গর্ভজাত সন্তানের ও নিজের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।