কিডনি রোগ প্রতিরোধ করবেন কীভাবে?
বিভিন্ন গবেষণা মতে, বাংলাদেশে প্রায় দুই কোটি লোক কিডনি রোগে আক্রান্ত। কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলে কিডনি রোগ অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায়।
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩১৫০তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ। বর্তমানে তিনি বিআরবি হাসপাতালের কিডনি রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : জীবনযাপন প্রণালি কিডনি রোগে আক্রান্ত করতে কতটুকু ভূমিকা পালন করে?
উত্তর : দেখুন, ডায়াবেটিস জীবনযাপনের সঙ্গে জড়িত। উচ্চ রক্তচাপ জীবনযাপনের সঙ্গে জড়িত। গ্লুমেরুলো নেফ্রাইটিসটা হয়তো অতটা জড়িত নয়। তবে ওজন বাড়ে জীবনযাপনের ধরনের কারণে। ধূমপান জীবনযাপনের ধরন। আমরা যে খাবারে লবণ খাচ্ছি প্রতিনিয়ত, সেটা জীবনযাপন। আমরা যে ব্যায়াম করছি সব সময়, এটা জীবনযাপনের ধরন। জীবনযাপনের ধরন যদি পরিবর্তন করা হয়, তাহলে কিডনি রোগ অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায়।
আটটি পয়েন্ট রয়েছে, যেগুলো চর্চা করলে কিডনি ভালো রাখা যায়। আমরা যদি প্রতিদিন ১৫ মিনিট করে হাঁটি, তাহলে গড় আয়ু বেড়ে যেতে পারে তিন বছর। এরপর প্রতি ১৫ মিনিটের জন্য দুই বছর করে, আমরা যদি তরুণ বয়স থেকে প্রতিদিন ৯০ মিনিট করে হাঁটতে পারি, তাহলে আমাদের গড় আয়ু বেড়ে যেতে পারে ১৩ বছর। অর্থাৎ আমরা যদি প্রতিদিন ব্যায়াম করি, তাহলে কিডনি রোগ প্রতিরোধ হবে, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ হবে, উচ্চ রক্তচাপ হবে। আমরা সুস্থ থাকব।
এরপর আসে খাবারের কথা। আমরা যদি ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খাই, ওজন যা থাকার দরকার ছিল, সেটিই রাখি, আমরা যদি স্থূল হয়ে না যাই, সেই ক্ষেত্রে আমাদের কিডনি ভালো থাকবে। সে ক্ষেত্রে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ- যেটা প্রোটিন, হোল গ্রেইন, এগুলো খাবো। পরিশোষিত খাবার খাব না। চর্বি জাতীয় খাবার যেটা প্রাণীর বেশি রয়েছে, কোলেস্টেরল বেশি থাকে, গরু, খাসির মাংস, এগুলো এড়িয়ে যাব। প্রতিদিন আমরা পানি পান করব। ঘণ্টায় ঘণ্টায় যেন পানি পান করি। দিনে যেন আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করি। যাদের পাথর, যাদের ইনফেকশন রয়েছে, যারা মাঠে রোদে কাজ করে, তাদের দিনে তিন থেকে চার লিটার পানি অথবা পানি এই পরিমাণ পান করবে যেন প্রস্রাবের রং পানির মতো হয়। অথবা এক থেকে দেড় লিটার প্রস্রাব হয়। তাহলে এরা ভালো থাকবে। আমরা যত্রতত্র ব্যথানাশক ওষুধ কিনে খাব না। যখন ব্যথার ওষুধ খাব, তখন তার সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ পানি পান করব। তাহলে যে ক্ষতিকর দিকটা রয়েছে, সেটি অনেকাংশে কমে যাবে। আমরা ধূমপান করব না। ধূমপান কেবল ক্যানসারই করে না। এটি কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কাজেই আমরা এটা পরিত্যাগ করব। পকেটের টাকা পকেটে রেখে দেব। এভাবে যদি জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন করা যায়, তাহলে ভালো থাকা যায়।