গর্ভাবস্থায় যত্নে পরামর্শ
গর্ভাবস্থা একটি জটিল সময়। এ সময় গর্ভবতী মায়ের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন পড়ে। গর্ভাবস্থার যত্নের বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩১৭৭তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. রেহনুমা জামান।
ডা. রেহনুমা জামান বর্তমানে স্কয়ার হসপিটাল লিমিটেডের গাইনি অ্যান্ড অবস ও ইনফার্টিলিটি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : গর্ভাবস্থায় কী কী যত্ন মায়ের প্রয়োজন, সেটি জানতে চাইব?
উত্তর : গর্ভকালটা একটি দীর্ঘ সময়। প্রায় নয় মাস সময় কাটাতে হয়। প্রথমে যেটা মনে রাখতে হবে যে গর্ভাবস্থা হচ্ছে একটি স্বাভাবিক ফিজিওলজি। এর সবকিছু স্বাভাবিকভাবে নিতে হবে। গর্ভাবস্থায় শরীরে অনেক পরিবর্তন আসে। অনেকগুলো হরমোন, অনেক বেশি বেশি পরিমাণ থাকে। একটি হরমোন বাড়তে থাকে প্রথম ১০ দিন। তার জন্য বমি লাগা, খারাপ লাগা, মাথা ঘোরা, কিছুটা অস্বস্তি সব সময় থাকেই। বিশেষ করে যাঁরা প্রথম মা হচ্ছেন, তাঁদের জন্য আরো বেশি কষ্টের। এগুলো মেনে নিয়েই গর্ভ ধারণ করতে হবে। এরপরও কিছু কথা থাকে। যেমন আমরা বলে থাকি, আমরা বলে থাকি যে পুরো গর্ভাবস্থায় ওজন বাড়াতে হবে, ৯ থেকে ১১ কেজি। এর মানে এই নয় যে এটি অনেক বেশি ওজন। এর কম হলে আমরা ভাবি, বৃদ্ধিটা কম হচ্ছে কি না। বেশি হলে প্রেশার, ডায়াবেটিস ইত্যাদি হয়ে যায় কি না এই ভয় পাই। এ জন্য ৯ থেকে ১১ কেজি থাকাটা ভালো।
গর্ভবতীর যত্নে খাবার-দাবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রথম তিন-চার মাস অনেকে খেতে পারে না। বমি বমি লাগে। আমরা বলি জোর করার দরকার নেই। যতটুকু খেতে ভালো লাগবে, যেটা ভালো লাগবে, সেটাই খাবে। তখন যে একদম জোর করে সবকিছু খেতে হবে, কোনো প্রয়োজন নেই। তিন-চার মাসের মধ্যে আস্তে আস্তে খাবার-দাবারগুলো বাড়াতে হবে। বাসার খাবারগুলো, ঘরের খাবারগুলো একটু বাড়িয়ে দিতে হবে। আয়রনসমৃদ্ধ খাবার, ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবারগুলোর দিকে খুব মনোযোগ দিতে হবে। যেহেতু শিশু বড় হয়, শিশুর চাহিদা বেড়ে যায়। আয়রন, ক্যালসিয়াম সব মায়ের কাছ থেকে নিয়ে নেয়, তখন রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। তাই খাবারের বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
এরপর বিশ্রামটাও গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্রামের জন্য প্রতিদিন দুপুরে দুই ঘণ্টা, রাতে আট ঘণ্টা, ঘুম আসুক বা না আসুক, বিছানায় শুয়ে বিশ্রাম নিতে হবে।