শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?
কোষ্ঠাকাঠিন্যের সমস্যায় অনেকেই ভোগে। শিশুদের ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য একটি প্রচলিত সমস্যা। শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩১৮২তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. ছামিদুর রহমান।
ডা. ছামিদুর রহমান বর্তমানে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু ও সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার কারণ কী? একে আপনারা কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
উত্তর : আসলে কোষ্ঠকাঠিন্য যখন বাচ্চাদের হয়, তখন সমস্যাটা পরিবারের। মা-বাবা পরিবারের সবাই কিন্তু উদ্বিগ্ন হয়ে যায়। আর আমরা বড়রা যেমন বুঝতে পারি, দুদিন পায়খানা হয়নি, এটা হওয়া প্রয়োজন, বাচ্চাদের কিন্তু উল্টো প্রতিক্রিয়া হয়। বাচ্চাদের দুদিন পায়খানা হয় না, শক্ত পায়খানা হলে তারা আর এটা করতেই চায় না।
আমরা সাধারণ ভাষায় কোষ্ঠকাঠিন্য বলতে বুঝি সপ্তাহে যদি তিনবারের কম পায়খানা হয় অথবা শক্ত পায়খানা হয়, অথবা পায়খানা অল্প হয়েছে বা পায়খানার পর কোনো মানুষ অস্বস্তিবোধ করছে বা ব্যথাবোধ করছে, একে আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য বলি। শিশুদের ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রধান সমস্যা হলো খাবারের সমস্যা। বাচ্চারা কিন্তু সব ধরনের খাবার খেতে চায় না।
কোনো কোনো বাচ্চার ক্ষেত্রে মায়েরা প্রথমে সুজি খাওয়ানো শুরু করে। সুজির মধ্যে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। এর মধ্যে আঁশ জাতীয় কোনো পদার্থ নেই। বাচ্চাদের সেরিলাক সহজে প্রস্তুত করা যায়, স্বাদ ও গন্ধটাও আলাদা, কিন্তু আঁশ জাতীয় খাবার যদি না থাকে তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য হবে। কোনো কোনো বাচ্চা রয়েছে শুধু ভাত খায় ডাল দিয়ে। মায়েরা হয়তো প্রথমে মনে করছে সে কিছুই খাচ্ছে না, ডাল খায় খাক। এগুলো আস্তে আস্তে কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে। এক নম্বর হলো, খাওয়াতে হবে খোসাকে ফেলে দিয়ে। খোসাটা ফেলে দিলে আসলে আঁশ গেল না। ফল ও ফলের রসের মধ্যে যথেষ্ট আঁশ রয়েছে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাতে হয়। স্কুলে যাওয়ার আগে বাচ্চা পায়খানা করতে গেলে পটিতে পায়খানা করে বা তার একটি বাথরুম রয়েছে। স্কুলে গেলে সে নতুন বাথরুমে আর সমন্বয় করে না। অথবা একটা ভয় কাজ করে, অস্বস্তি কাজ করে। তখন সে করে কি পায়খানাটাকে ধরে রাখে। ধরে রাখলে পায়খানার মধ্যে যে পানির অংশটা শরীর একে চুষে নেয়। আরো শক্ত হয়ে যায়।
অনেক সময় পায়খানাটা প্যান্টে লেগে যায়। মায়েরা বকাবকি করে। তবে কিছু কিছু রোগের কারণে হয়। পায়খানার রাস্তা যদি কোনো কারণে ফেটে যায়, যাকে এনাল ফিসার বলি আমরা, ফেটে গেলে একটু রক্তপাত হয়, এর কারণে কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। একটি রোগ রয়েছে যেখানে নারীর কিছু অংশ কাজ করে না। জন্মগতভাবে পায়খানার রাস্তাটা চিকন হতে পারে। হাইপোথাইরয়েড যাকে আমরা বলি ঘ্যাগ, এর কারণে হতে পারে। হঠাৎ করে যদি জ্বর আসে, তাহলে পানিশূন্যতা হয়, এর কারণে হতে পারে। বাচ্চা যদি কোনো কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়, এই পরিবেশে সে পায়খানা করতে চায় না, তখন কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে পার্থক্য হলো একবার শুরু হলে এটা চলতে থাকে।