হাড় ক্ষয়ের কারণ, প্রতিরোধে করণীয়

Looks like you've blocked notifications!

হাড় ক্ষয় বা অস্টিওপরোসিসের সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। সাধারণত হাড়ের ঘনত্ব কমে গেলে এই সমস্যা হয়। এ ছাড়া মেনোপজের পর অর্থাৎ নারীদের ঋতুস্রাব একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়া পর এই সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।

হাড় ক্ষয় কেন হয়, এই ক্ষয় প্রতিরোধে করণীয় কী, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩১৮৬তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মো. ইউসুফ আলী। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থোপেডিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : মেনোপজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর হাড়ের ঘনত্ব ঠিক রাখার জন্য আপনারা কী ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন?

উত্তর : এই জন্য আমরা চিকিৎসা দিয়ে থাকি। আগে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি ছিল। এখন এই থেরাপি লাগে না। কারণ, এর অনেকগুলো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। এখন অনেক নতুন ওষুধ রয়েছে, ক্যালসিয়াম রয়েছে, ভিটামিন ডি রয়েছে, হাড়ের ঘনত্ব বাড়ানোর জন্য বিসফসফোনেট নতুন ওষুধ এসেছে। এগুলো যদি আমরা দেই, তাহলে তারা সহজে অস্টিওপরোসিসকে প্রতিরোধ করতে পারে।

এগুলো যদি আমরা প্রতিরোধ করতে পারি, আমরা যদি তরুণ বয়সে কর্মক্ষম জীবন যাপন করতে পারি, অথবা যে যে অবস্থায় রয়েছে, সেই অবস্থায় যদি আমরা কর্মক্ষম থাকি, তাহলে ভালো।

আরেকটি জিনিস এখানে বলে রাখা ভালো, সেটি হলো কিছু ওষুধ রয়েছে, যার জন্য অস্টিওপরোসিস হতে পারে। এগুলো আমরা প্রায়ই ব্যবহার করে থাকি। গ্যাসট্রিকের কারণে আমরা যততত্র ওষুধ খাই। ওমিপ্রাজল বলে যেই ওষুধটি আমরা খাই, এটি যদি দীর্ঘমেয়াদি খাই, তাহলে আমাদের হাড় ক্ষয় হতে পারে।

আবার যাদের অ্যাজমা রয়েছে, দেখা যায় তাদের দীর্ঘদিন স্টেরয়েড ব্যবহার করতে হচ্ছে, তাদের হতে পারে। আমরা একে বলি স্টেরয়েড ইনডিউজ অস্টিওপরোসিস। এই সব জিনিসগুলো আমরা যদি খুব সচেতনভাবে নিই এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিই, তাহলে এগুলো থেকে আমরা উত্তরণের পথ খুঁজে পাব।

আরেকটি জিনিস না বললেই নয়, আমাদের দেশে এখন অনেক কবিরাজি বা হারবাল চিকিৎসা প্রচলিত রয়েছে। আমি একটি বিষয় বলতে চাই। কিছু কিছু তরুণ ছেলে থাকে, যারা খুব রুগণ, তারা মনে করে আমার স্বাস্থ্যটা ভালো নয়, তারা কবিরাজের কাছে যায়, মোটা হওয়ার ওষুধ খায়। সেখানে কিন্তু আসলে স্টেরয়েড ট্যাবলেটকে গুলে সিরাপ করে খাওয়ানো হচ্ছে। এতে দেখা যায় মানুষ মোটা হয় ঠিকই, তবে তার একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। ওষুধ এত উচ্চ ডোজের থাকে, দেখা যায় তরুণ বয়সেও হাড়ের সমস্যা নিয়ে আসে। এটা কিন্তু ইদানীং আমরা অনেক পাচ্ছি। তাই আমি দর্শকদের উদ্দেশে বলব, এই ধরনের জিনিস থেকে যেন বিরত থাকে।

খাবার দাবারের একটি বিষয় রয়েছে। ক্যালসিয়াম কনটেনিং যে খাবারগুলো রয়েছে, ছোট মাছ বেশি খাওয়া, নিয়মিত দুধ খাওয়া, যাদের মিষ্টি খাওয়া নিষেধ তারা টক দই খেতে পারে। এসব খাবার যদি আমরা গ্রহণ করে থাকি, তাহলে আমাদের প্রতিদিনের যে চাহিদা রয়েছে, সেটি পূরণ হয়। আরেকটি হলো গায়ে রোদ লাগানো। ইদানীং কিন্তু অনেক ভিটামিন ‘ডি’-এর ঘাটতি রয়েছে। এমন রোগী পাচ্ছি, এর কারণ হলো, গাড়ি, বাসা এর মধ্যে আছি। একদম বদ্ধ ঘরের মধ্যে আছি। এ সব কারণে হাড়ের ক্ষয় হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।