স্তন ক্যানসার নির্ণয়ে কীভাবে পরীক্ষা করবেন
স্তন ক্যানসার নির্ণয়ে সেলফ ব্রেস্ট এক্সামিনেশন বা নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা একটি প্রচলিত পদ্ধতি। এ ছাড়া আলট্রাসনোগ্রাম ও মেমোগ্রাম পরীক্ষা করা হয় স্তন ক্যানসার নির্ণয়ে।
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩১৯৭তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ আকরাম হোসেন। বর্তমানে তিনি স্কয়ার হাসপাতালের অনকোলজি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : স্কিনিং কীভাবে, কখন করা উচিত?
উত্তর : সেলফ ব্রেস্ট এক্সামিনেশন (নিজে নিজে স্তন পরীক্ষা) করা একটি স্কিনিং। একজন রিপ্রোডাকটিভ এজের (সন্তান জন্মদানের বয়স) মেয়ে থেকে শুরু করে সবারই করা দরকার। ১৮ বছরের মেয়েরও স্তন ক্যানসার হয়েছে, এমন আমি দেখেছি। সুতরাং এ বিষয়ে আরো সচেতন হতে হবে। এর জন্য ভালোভাবে দেখা দরকার। সেলফ এক্সামিনেশন যদি করা হয়, তাহলে সহজে রোগ নির্ণয় করা যাবে। ওয়েবসাইটে, ইন্টারনেট ব্রেস্ট সেলফ এক্সামিনেশনের ছবিসহ সবকিছু পাওয়া যায়। সহজেই কিন্তু যে কেউ এটি করতে পারে। এমনকি ভিডিও পাওয়া যায়।
দ্বিতীয় হলো ম্যামোগ্রাম করা। ম্যামোগ্রাম চল্লিশ বছরে করতে বলা হয়। তবে ৫০ বছরে অবশ্যই ম্যামোগ্রাম করতে হবে। কারণ, যত বয়স বাড়ে, তত কিন্তু সম্ভাবনা বাড়তে থাকে। ঝুঁকি বাড়তে থাকে। সে জন্য রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আমার মনে হয় ম্যামোগ্রামটা আমরা করতে পারি।
এরপর যদি কারো সন্দেহ হয়, চল্লিশের নিচে আমরা আলট্রাসাউন্ড করি। ম্যামোগ্রাম যেহেতু এক্স-রে এক্সপোজার হয়, এ জন্য একে অনেকে এড়িয়ে যেতে বলে।
আমার মনে হয়, দশমিক এক ভাগেরও নিচের মানুষ আসলে সেলফ এক্সামিনেশন করে না। এর জন্য আসলে সোশ্যাল ক্লাব, গার্ল গাইডস, স্কুল, কলেজ—এসব জায়গা থেকে উদ্যোগ নিতে হবে। সচেতনতা আরো বাড়াতে হবে।
প্রশ্ন : অনেক সময় মেয়েরা জড়তার কারণে কাউকে সমস্যা বলতে চান না। এ বিষয়ে আপনি কী পরামর্শ দেবেন?
উত্তর : এই বিষয়ে আসলে সোশ্যাল স্টিগমা রয়েছে। অনেক সময় মেয়েরা জড়তার কারণে স্বামীকেও বলতে চান না। বিবাহবিচ্ছেদের ভয় বা স্বামীরা কী করবে, সেই বিষয়ে আসলে তাঁরা স্বামীকে জানতে চান না। এতে ভয়ের কিছু নেই। প্রাথমিক অবস্থায় যদি ধরা পড়ে, স্তন ক্যানসারও ৯০ থেকে ১০০ ভাগ ভালো হয়ে যাবে। শতভাগ ভালো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, আজকালকার যুগে অস্ত্রোপচার করে একেবারে সুস্থ করা সম্ভব। এর থেকে একটু অগ্রবর্তী পর্যায়ে এলে কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপিসহ চিকিৎসা করে। আমাদের অসংখ্য রোগী রয়েছে, যারা ভালো আছে। আমারই রোগী রয়েছে ১৫/২০ বছর হয়েছে, এখনো ভালো রয়েছেন।