বিশ্ব আলঝেইমারস দিবস

যে রোগে মানুষ সব ভুলে যায়

Looks like you've blocked notifications!
আলঝেইমার অনিরাময়যোগ্য রোগ। ছবি : সংগৃহীত

২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ব আলঝেইমারস দিবস। ১৯৯৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের এডিনবরা একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়, ২১ সেপ্টেম্বর হবে বিশ্ব আলঝেইমার দিবস। সেই থেকে প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলছে এই বিশেষ দিবস পালন।

২০১২ সাল থেকে পুরো সেপ্টেম্বর মাসটিই আলঝেইমারস সচেতনতা মাস হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। সেই থেকে চলছে মাসব্যাপী আলঝেইমার সচেতনতা কার্যক্রম।

আলঝেইমার একটি নিউরোডিজেনারেটিভ ডিজিজ। মস্তিষ্কের কোষগুলো শুকিয়ে গিয়ে এই অসুখ হয়। রোগীরা তখন ‘ভুলে যাওয়ায়’ আক্রান্ত হয়। তারা সবকিছু ভুলে যায়। সকালে কী খেয়েছে, ভুলে যায়। বাড়ির ঠিকানা ভুলে যায়। আবার দেখা যায়, অনেক পুরোনো কোনো স্মৃতি ঠিকই মনে পড়ে যাচ্ছে। ভুলে যাওয়া বা স্মৃতিভ্রষ্ট হওয়া রোগকে বলে ডিমেনশিয়া। আলঝেইমারস ডিমেনশিয়ার এক নম্বর কারণ। দেখা যায়, ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ ডিমেনশিয়ার রোগীই মূলত আলঝেইমারসে আক্রান্ত।

একসময় ভাবা হতো আলঝেইমারস বার্ধক্যজনিত অসুখ। তবে পরে দেখা গেছে, বয়স এখানে একটি ঝুঁকির কারণ মাত্র। একমাত্র কারণ নয়। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই দুই লাখ মানুষ রয়েছে আলঝেইমারসের রোগী, যাদের বয়স ৬৫-এর নিচে।

এটি মূলত জেনেটিক অসুখ। বয়স ছাড়াও এই রোগে আরো কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর রয়েছে। যেমন : উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা বা ওবেসিটি, রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল, ব্যায়াম বা পরিশ্রমহীন জীবনযাত্রা ইত্যাদি।  উপরোক্ত ঝুঁকির কারণগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে আলঝেইমারসের আক্রান্ত হওয়ার হার কমে যায়।

আলঝেইমার অনিরাময়যোগ্য রোগ। এর রোগীরা ভালো হয় না।  আক্রান্ত রোগীদের প্রধান চিকিৎসা হলো পুনর্বাসন এবং নিবিড় যত্ন, যাকে বলে কেয়ারগিভিং।

বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এই রোগীরা যথেষ্ট অবহেলিত। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা স্ক্রিনিং বা রোগ নির্ণয়ের আওতায় আসেন না। প্রবীণদের প্রতি সমাজ ও রাষ্ট্রের অবহেলা এর একটি কারণ।

বিশ্ব আলঝেইমারস দিবসে তাই সচেতন করে তুলতে হবে সবাইকে।

লেখক : রেজিস্ট্রার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।