কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত করে যেসব বিষয়
কিডনি শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। বিভিন্ন বিষয় রয়েছে যেগুলো কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এসব বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩২১৭তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. শামীম আহমেদ।
ডা.শামীম আহমেদ জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটে নেফ্রোলজি বিভাগের সাবেক পরিচালক ও অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
প্রশ্ন : কিডনি রোগ প্রতিরোধের জন্য কী করা যায়?
উত্তর : প্রথম বলি, কিডনি রোগ বলতে আমরা কী কী বুঝি। কিডনি রোগ একটি হতে পারে প্রস্রাবে প্রদাহ। আরেকটি হতে পারে নেফ্রাইটিস। অর্থাৎ কিডনি প্রদাহ, প্রোটিন লিক করছে, রক্তে অ্যালবুমিন কমে যাচ্ছে, শরীরে পানি আসছে। আরেকটি হলো দীর্ঘমেয়াদি যেটি হয়, উচ্চ রক্তচাপ, সেই থেকে কিডনি রোগ হচ্ছে। হয়তো রক্তচাপ পাঁচ বছর, ১০ বছর থাকার পর কিডনি রোগ হচ্ছে। আরেকটি হলো ডায়াবেটিক নেফ্রোটিজম। অর্থাৎ ডায়াবেটিসের কারণে আমাদের দেশে দেখা যায় ধীর গতিতে কিডনি বিকল হচ্ছে, এর প্রধান কারণ হলো ডায়াবেটিস।
প্রশ্ন : ডায়াবেটিসের সঙ্গে যদি উচ্চ রক্তচাপ থাকে, তাহলে?
উত্তর : দুটো এক সঙ্গে হচ্ছে। এ ছাড়া আরো জন্মগত কিছু রোগ রয়েছে। যেমন পলিসিস্টিক কিডনি ডিজিজ। অথবা পাথরজনিত কারণে, দুই দিকের কিডনিতে পাথর অথবা প্রস্রাবের রাস্তায় পাথর, অথবা ছেলেদের প্রোস্টেট গ্রন্থি বড়, অথবা মেয়েদের সারভাইক্যাল ক্যানসার থেকে রাস্তা ব্লক। সেটাও কিন্তু কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেটার ওপর যে প্রেশার পড়ে, এতেও কিন্তু কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আমাদের ব্যথা হচ্ছে, ওষুধ খাচ্ছি, জানছি না যে কিডনির কী অবস্থা। সেই ক্ষেত্রে কিডনি যখন একেবারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেল, তখন কিন্তু আমরা আর কিডনিকে সারাতে পারি না। যদি প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি রোগকে আমরা শনাক্ত করতে পারি, তাহলে ভালো। শনাক্ত করা খুবই সহজ। একটি হলো প্রথম দেখব, তার ক্লিনিক্যালই রক্তচাপ রয়েছে কি না, রক্তচাপ থাকলে সেটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। দ্বিতীয় হলো, আমি ইউরিন পরীক্ষা করব। ইউরিনে যদি প্রোটিন যায়, আরবিসি যায় তাহলে নেফ্রাইটিস। তৃতীয় হলো, আমি রক্তের সুগারটা করব। রক্তের সুগার করলে ডায়াবেটিস রয়েছে কি না ধরতে পারব। চতুর্থ হলো, একটি সাধারণ এক্স-রে করব। এটি করলে পাথর রয়েছে কি না, এটি আমি দেখতে পারব। আরেকটি হলো একটি আল্ট্রাসোনোগ্রাম করে, জন্মগত কোনো কিডনি রোগ রয়েছে কি না, সেটি দেখব। আর পঞ্চম হলো আমি ওষুধ খাই কি না, এগুলো দেখব। এই তো। এগুলো যদি জানা যায় তাহলে কোনো ব্যক্তির কিডনির রোগ রয়েছে কি না, সে নিজে ধরতে পারবে।