পরিবর্তিত বিশ্ব ও তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য
আজ বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস।এই বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য,‘পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য’।
দিবসটি নিয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩২২১তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আজিজুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি আমর্ড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজে মনোরোগ বিদ্যা বিভাগে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে এই বছর মূল প্রতিপাদ্য বিষয় কী? এই প্রতিপাদ্য ঠিক করার পেছনে কারণ কী?
উত্তর : প্রথমেই আমি আপনার মাধ্যমে এনটিভিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, মানসিক স্বাস্থ্য দিবসকে ঘিরে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করার জন্য। মানসিক স্বাস্থ্য স্বাস্থ্যের একটি প্রাথমিক অঙ্গ। মানসিক স্বাস্থ্য মানে হলো শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতা। তবে আমাদের দেশে সাধারণত সবাই শারীরিক স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা করে। সামাজিক স্বাস্থ্যের প্রতি তেমন নজর আমরা দেই না। তবে স্বাস্থ্যের যে প্রাথমিক স্তর এর মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। আমাদের একটি স্লোগানই রয়েছে, ‘নো হেলথ ওইদাউট মেন্টাল হেলথ’। অর্থাৎ মানসিক সুস্থতা ছাড়া কোনো সুস্থতাই সম্ভব নয়। এই যদি প্রেক্ষাপট থাকে, তাহলে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি জোর দিতে হবে। ১৯৯২ সাল থেকে প্রতি বছরই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, এই একটি দিন, ১০ অক্টোবরকে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। এবারের যে প্রতিপাদ্য সেটি হলো, ‘মেন্টাল হেলথ ইন ইয়োঙ্গার এইজ ইন চেইঞ্জিং ওয়ার্ল্ড’। এর অর্থ, পরিবর্তিত বিশ্বে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য।
প্রশ্ন : পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি কীভাবে জড়িয়ে গেল?
উত্তর : মানসিক স্বাস্থ্যের যে কারণগুলো বা মানসিক অসুস্থতার যদি কারণ আমরা বলি, তাহলে শারীরিক এবং জিনগত সমস্যার বাইরে, সমাজ, পারিপার্শ্বিকতা, বেড়ে ওঠা, মন, মনন – এই সব কিন্তু এই একটিতে জড়িয়ে রয়েছে। পরিবর্তিত বিশ্বে হচ্ছে কী, ইন্টারনেট, ফেসবুক, মাদক, সমাজের সংঘাত, জঙ্গি, সন্ত্রাস- এই জিনিসগুলো এমনভাবে আসছে, মানুষের জীবনকে এমন ম্যাকানিক্যাল ( যান্ত্রিক) ও কমপ্লেক্স ( জটিল) করে তুলছে যে এতে কিছু কিছু মানসিক রোগ, যেগুলোর আগে কোনো অস্তিত্ব ছিল না, আমরা যেগুলো চিন্তা করিনি, সেগুলো বেশি বেশি করে আসছে। পাশাপাশি সমাজের এই জটিলতার জন্য, মানসিক চাপও কিন্তু সবার ওপর বেড়ে যাচ্ছে। সেই জন্য কিন্তু মানসিক রোগ বেশি হচ্ছে। এটা আমি পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা বলছি।
আর যদি আমি তরুণদের কথা বলি, আমরা জানি তরুণরাই আমাদের সমাজের ভবিষৎ। তরুণরা একটি দেশের, একটি প্রজন্মের কর্ণধার। আমরা জানি যারা আজকের তরুণ আগামীকাল তারা কর্ণধার হবে। তরুণ সমাজ সব ক্ষেত্রে মনোযোগের কেন্দ্র হওয়া উচিত। আরেকটি বিষয় হলো তরুণদের বিকাশে কিন্তু মন, মনন এই বিষয়গুলো ভূমিকা রাখে। তাদের বৃদ্ধি ও উন্নয়ন হয়। মানুষের আবেগ, চিন্তা – চেতনা, সব কিন্তু এই তরুণ সমাজের মধ্যেই বিকশিত হবে। সুতরাং এই সময়টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় বেড়ে ওঠার সময়। বিকশিত হওয়ার সময়।