মানসিক স্বাস্থ্য

দেশে ছয় কোটি মানুষের সেবা প্রয়োজন

Looks like you've blocked notifications!
১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে টিএসসিতে বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। ছবি : সংগৃহীত

শারীরিক সুস্থতার জন্য মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করা জরুরি। সেই লক্ষ্যে প্রতিটি মেডিকেল কলেজে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট নিয়োগ করা এখন সময়ের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। গতকাল ১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ, বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটি, ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার এবং  মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ৯, ১০ ও ১৩ অক্টোবর তিন দিনব্যাপী বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। গতকাল ছিল কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন। এ বছরের বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য ‘পরিবর্তনশীল বিশ্বে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য’। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম। তাঁর বক্তব্যে তিনি ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি অ্যাক্ট দ্রুত পাস করার বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় অধীনে পরিচালিত নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক ড. আবুল হোসেন। তিনি চাহিদার তুলনায় ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টদের অপ্রতুলতার কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির জেনারেল সেক্রেটারি মো. জহির উদ্দিন। সেমিনারে আরো মূল্যবান বক্তব্য দেন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ কামরুজ্জামান মজুমদার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ মাহমুদুর রহমান।

‘সংকটাপন্ন রোহিঙ্গাদের জন্য টেকসই মনোসামাজিক সেবা’ শীর্ষক দ্বিতীয় সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয় দুপুর ১২টায়। এই সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ। তিনি বলেন, ‘দেশের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টগণ রোহিঙ্গাদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন নাসিরুল্লাহ সাইকোথেরাপি ইউনিটের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ কামরুজ্জামান মজুমদার, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় অধীনে পরিচালিত নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক ড. আবুল হোসেন।

‘বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন’বিষয়ক বিশেষ সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয় বিকেল ৩টায়। যেখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মনোবিজ্ঞানীরা বক্তব্য দেন। সূচনা বক্তব্যে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহানূর হোসেন বলেন, ‘এ মুহূর্তে দেশের ছয় কোটির বেশি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন। সে জন্য প্রায় ১৫ হাজারের বেশি প্রশিক্ষিত মনোবিজ্ঞানীর দরকার। এটি আগামী ২০ বছরেও পূরণ করা কঠিন ব্যাপার। অতএব, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পেশাগত মনোবিজ্ঞানী তৈরি করার জন্য এখনই ভূমিকা নিতে হবে। তবেই দেশের মানসিক স্বাস্থ্যের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব হবে।’

এ ছাড়া অনুষ্ঠানের শেষ দিন, আগামী ১৩ অক্টোবর মাইন্ডফুলনেস, অটিজম, ফ্যামিলিথেরাপি, নিউরোসাইকোলজি, স্ব-প্রণোদিত আসক্তি নিয়ন্ত্রণের ওপর পাঁচটি কর্মশালার অনুষ্ঠিত হবে।