‘গর্ভধারণের তিন মাস আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন’
গর্ভধারণের সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, তবে গর্ভধারণের আগেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। এতে জন্মগত ত্রুটিমুক্ত, সুস্থ-সবল শিশু জন্মের হার বাড়ে।
গর্ভধারণের অন্তত তিন মাস আগে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো। এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৩১০তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. ফারজানা রহমান ডালিয়া। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনি ও অবস বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : গর্ভধারণের আগে পরামর্শ নেওয়ার জন্য কখন আপনারা আসতে বলেন? কোনো নির্দিষ্ট সময় রয়েছে কি?
উত্তর : সাধারণত যদি তিন মাস আগে আসে, তাহলে খুবই ভালো। কারণ, আমরা তো প্রথম দিকেই ইতিহাস নিই। দেখি যে তার কোনো সমস্যা রয়েছে কি না, মেডিকেল ডিজঅর্ডার রয়েছে কি না। অনেক সময় দেখা যায় মায়ের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, থাইরয়েডের সমস্যা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই রোগগুলো নিয়ন্ত্রণ করে বাচ্চা নিতে হবে। না হলে জন্মগত ত্রুটি নিয়ে বাচ্চা জন্ম নিতে পারে। মা যেকোনো ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। আর এ ছাড়া যদি তার কোনো মেডিকেল ডিজঅর্ডার না থাকে, আমরা সামান্য একটি ওষুধ, যাকে বলে ফলিক এসিড, এটি দিই। এটি যদি সে তিন মাস আগে থেকে খায়, তাহলে অনেকাংশে জন্মগত ত্রুটি নিয়ন্ত্রণ হয়। কারণ, এই ফলিক এসিডের ঘাটতির কারণেই জন্মগত ত্রুটি হয়। মা যদি পুরোপুরি সুস্থ থাকেন, এরপরও আমরা ফলিক এসিড খেতে দিই।
এ ছাড়া যদি মায়ের কোনো ধরনের রক্তস্বল্পতা হয়, আগে থেকে সে যদি একে নিরাময় করে সন্তান নেন, তাহলে মা ও শিশু দুজনেই কিন্তু নিরাপদ থাকছে।
এ ছাড়া রয়েছে ভ্যাক্সিনেশনের বিষয়। যখন একটি শিশু গর্ভে থাকে, সে সময় যদি কোনো রুবেলা ভাইরাস আক্রমণ করে, সেই ক্ষেত্রে সন্তান জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্ম নেয়। আমরা অনেক সময় দেখি মাঝপথে বাচ্চাটিকে পেট থেকে বের করে ফেলতে হয়। গর্ভধারণের আগেই যদি সে এমএমআর ভ্যাক্সিনটা দেয়, সে ক্ষেত্রে সে এই ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত হবে না। যদি সে ভ্যাক্সিন নেয়, আমরা বলি যে তিন মাস পরে সন্তান নিতে পারবেন।
ওজন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদি দেখা যায়, ওজন বেশি রয়েছে, আমরা বলি ওজন কমাতে। কারণ, বেশি ওজনের জন্য মায়ের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগ হয়ে থাকে। বেশি ওজন থাকলে অনেক সময় গর্ভপাত হয়ে যায়।
আবার কিছু ওষুধ রয়েছে, যেগুলো খেতে থাকলে জন্মগত ত্রুটি হতে পারে। বাচ্চার জন্য সেটি খুবই ক্ষতিকর। তখন আমরা যেই ওষুধগুলো গর্ভাবস্থার জন্য নিরাপদ, সেগুলো দিই। তার যদি মেডিকেল ডিজঅর্ডার থাকে, অ্যাপিলেপসি থাকে, তখন সমন্বয় করে চিকিৎসায় যেতে হয়।