উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ কখন শুরু করতে হয়?

উচ্চ রক্তচাপ বা হাইব্লাড প্রেশার বা হাইপার টেনশন একটি প্রচলিত সমস্যা। তবে ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রেই এর লক্ষণ অপ্রকাশিত থাকে।
উচ্চ রক্তচাপ হলেই ওষুধ খেতে দেওয়া হয় না। কয়েকবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর চিকিৎসক নিশ্চিত হয়ে রোগীকে ওষুধ শুরু করতে বলেন।
উচ্চ রক্তচাপের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন ডা. মুহাম্মদ মাহবুব হোসেন। বর্তমানে তিনি ৩০০ শয্যার হাসপাতাল, নারায়ণগঞ্জের মেডিসিন বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত। এনটিভির নিয়মিত অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিন-এর ৩৩৮৫তম পর্বে সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হয়েছে।
প্রশ্ন : রক্তচাপ কোন পর্যায়ে গেলে, একে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বলা হয়?
উত্তর : আসলে হাই ব্লাড প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে ৯৫ ভাগ লোকের ক্ষেত্রেই আমরা কারণ জানি না। পাঁচ ভাগ মানুষের আমরা কারণ জানি। যেমন : সেকেন্ডারি হাইপার টেনশন। আর ৯৫ ভাগ মানুষের প্রাইমারি হাইপার টেনশন।
এখন অধিকাংশ মানুষই আমাদের কাছে এসে বলে, ‘ডাক্তার সাহেব আমার ব্লাড প্রেশারটা মাপেন দেখি’। দেখা যায়, তার উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। উচ্চ রক্তচাপের অনেক সময় লক্ষণই থাকে না। কিন্তু তার উচ্চ রক্তচাপ।
পাশাপাশি আমরা ব্লাড প্রেশারের মাত্রাকে ভাগ করি। দেখি কোন ভাগে রয়েছে। আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্লাড প্রেশার পেলে আমরা প্রেশারের ওষুধ দেব কি না ভেবে দেখি। সাধারণত ৮০/ ৬০ যখন ব্লাড প্রেশার থাকে, আমরা বলি লো প্রেশার। আর সাধারণত ১২০/৮০ যখন থাকে, এটি স্বাভাবিক প্রেশার। প্রি হাইপারটেনশন নামে একটি শব্দ রয়েছে, এটি ১৪০/ ৯০ পর্যন্ত বলা হয়। এরপর আসে পর্যায় এক, পর্যায় দুই। পর্যায় এক ব্লাড প্রেশারটা হলো, সিস্টোলিক ১৪০ এর উপরে ১৬০ বা ১৫৯ পর্যন্ত এবং ডায়াস্টোলিক ৯০ থেকে ৯৯ পর্যন্ত।
আর সিস্টোলিক ১৬০ এর ওপরে, আর ডায়াস্টোলিক ১০০ এর ওপরে গেলে পর্যায় দুই। ১৮০ / ১১০ এর ওপরে গেলে জটিল উচ্চ রক্তচাপ। যখনই দেখি একটি মানুষের প্রি হাইপারটেনশন রয়েছে, তখন আমরা তাকে ওষুধ দেই না।
যখন একজন মানুষ আসে আমার কাছে, আমি দেখলাম, ব্লাড প্রেশার ১৬০/ ১০০, তাকে দেখি পাশাপাশি তার অন্য কোনো রোগ রয়েছে কি না। যেমন : ডায়াবেটিস, কিডনির রোগ, হার্ট ফেইলিউর, অ্যান্ডোক্রাইন কোনো সমস্যা রয়েছে কি না। এগুলো দেখে তার প্রেশারের ওষুধ শুরু করি। তবে একজন রোগীর অন্য রোগগুলো না থাকলে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সাধারণত প্রেশারের ওষুধ শুরু করি না। যেমন : একজন রোগী একবার আসল বা দৌড়ে এসে প্রেশার মাপল, সেটিও আমরা গ্রহণ করি না। অন্তত আমরা পাঁচ মিনিট বিশ্রামে থাকতে বলি। এরপর আমরা প্রেশার মাপি। যদি প্রেশার মেপে দেখি বেশি, মনে করেন ১৬০/ ৯০ পেলাম, তখন আমরা পর পর তিন ভিজিটে ব্লাড প্রেশারটা মাপি।
প্রশ্ন : কতদিন পরপর আপনাদের কাছে যেতে হয়?
উত্তর : সেরকম কোনো সময় নেই। তবে পরপর তিনবার দেখি। এরপর যদি আমরা দেখি ব্লাড প্রেশারটা বেশি, তখন আমরা তাকে অ্যান্টি হাইপারসেনটিভ একটি ওষুধ দেওয়া শুরু করি।