যেসব রোগে কফের সঙ্গে রক্ত যায়

Looks like you've blocked notifications!
কফের সঙ্গে রক্ত যাওয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ ও ডা. সানজিদা হোসেন। ছবি : এনটিভি

সাধারণত যক্ষ্মা হলে কফের সঙ্গে রক্ত যায়। তবে এর বাইরেও কিছু রোগ রয়েছে যেগুলোতে কফের সঙ্গে রক্ত যাওয়ার সমস্যা হয়।

কোন কোন রোগে কফের সঙ্গে রক্ত যায়, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৩৮৯তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ। বর্তমানে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালের বক্ষব্যাধি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : সাধারণত কোন কোন সমস্যায় কফের সঙ্গে রক্ত আসতে পারে?

উত্তর : এটা খুব প্রচলিত একটি সমস্যা। বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমরা এর মুখোমুখি হই। রোগী এসে বলে, কফের সঙ্গে রক্ত যাচ্ছে। অনেকে ভাবে, কফের সঙ্গে রক্ত গেছে, মানে যক্ষ্মা। আসলে যক্ষ্মাতেও রক্ত যায়। তবে যক্ষ্মা ছাড়াও অনেক অনেক রোগ রয়েছে, যেখানে কফের সঙ্গে রক্ত যায়। যেমন : খুব প্রচলিত একটি রোগ হলো ব্রঙ্ককেইকটেসিস। এর মানে ফুসফুসের একটি বিশেষ জায়গা অকেজো বা অকার্যকর হয়ে ফুলে গেছে। সেগুলো শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য কোনো কাজে আসছে না। ওখানে কেবল জীবাণু দিয়ে কফ তৈরি হচ্ছে। পুঁজের মতো পাকা পাকা হলুদ দুর্গন্ধযুক্ত কফ হচ্ছে, রোগীর সবসময় একটু জ্বর থাকছে এবং রোগী শুকিয়ে যাচ্ছে। ব্রঙ্ককেইকটেসিস বাংলাদেশের মতো দেশে খুবই প্রচলিত। রোগী এসেই বলে আমার কফের সঙ্গে রক্ত যাচ্ছে, সঙ্গে তার জ্বর থাকছে।

এই যে এই সময়টা বসন্তকাল, ছোট পক্স, মিজেল বা হুপিং কাশি হচ্ছে, তাদের দেখা যাচ্ছে, অ্যালোপেথিক চিকিৎসা না দিয়ে অন্যান্য শাস্ত্রীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।  যেখানে গরম পরিবেশে রাখতে হবে, মা-বাবা করছে কী, ঠাণ্ডা খাওয়াচ্ছে বেশি করে। এতে নিউমোনিয়া তৈরি হয়ে যাচ্ছে। এগুলোরই এক পর্যায়ে যদি অ্যান্টিবায়োটিক না শুরু হয়, যখন শিশুটি বড় হবে তখন এই ব্রঙ্ককেইকটেসিস রোগটি দেখা যাবে।

যখনই আমার কাছে রোগী আসে, ছোট পক্স বা মিজেলস বা হুপিং কফ নিয়ে, তখন আমি তাকে অ্যান্টিবায়োটিক দেই। দেব এজন্য যেন ভবিষতে ব্রঙ্ককেইকটেসিস না হয়। যার ব্রঙ্ককেকটেসিস হয়েছে সে জানে তার জীবনটা কতখানি দুঃসহ। হলুদ কফ বের হচ্ছে। এত দুর্গন্ধযুক্ত কফ যে মানুষের সামনে গিয়ে বসতে পারে না। এটা খুবই একটি অসুবিধাজনক বিষয়। তখন অ্যান্টিবায়োটিকের ওপর রাখতে হবে। সব অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করবে না। কত বছর আপনি অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন? তখন আমরা সার্জারি করে ফুসফুসের অংশটা কেটে ফেলি। অথচ প্রথমেই যদি আমরা সচেতন হতাম, তাকে ভালো মানের অ্যান্টিবায়োটিক সম্পূর্ণ মাত্রায় খাইয়ে দিলে কিন্তু এই সমস্যাটা হয় না। যেমন : ফুসফুসে ফোঁড়া হয়। আমাদের ত্বকের যেমন ফোঁড়া হয়, তেমনি ফুসফুসেও ফোঁড়া হয়। ফুসফুস অ্যাবসেসেস যাকে বলে, এটি হলেও কিন্তু রক্ত যায়। এ রকম হলে ক্যানসার হয়। ফুসফুসের ক্যানসারের অন্যতম উপসর্গ হলো কফের সঙ্গে রক্ত যাওয়া।